নতুন বছরের প্রথম দিনে সকলকে একেবারে চমকে দিলেন অনুরাগের ছোঁয়ার মিশকা ওরফে অহনা দত্ত। প্রেমিক, পেশায় মেকআপ আর্টিস্ট দীপঙ্কর দে-র সঙ্গে বিয়ে করে নিয়েছিলেন সেই ২০২৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর। ১ বছরের বেশি সময় এই সুখবরটাই চেপে রেখেছিলেন সকলের থেকে। প্রথম থেকেই ভালোবাসার কারণে মায়ের সঙ্গে দূরত্ব এসেছিল অহনার। এমনকী, নিজের মেয়ে, ও মেয়ের প্রেমিকের নামে মুখ খুলেছিলেন চাঁদনী সোশ্যাল মিডিয়াতে, সংবাদমাধ্যমের কাছে। তবে, সব অভিযোগকে মিথ্যে প্রমাণ করে, অনলাইনে ট্রোল করা শত্রুদের মুখে ছাই দিয়ে, দু বছরের বেশি সময় ধরে তাঁরা একসঙ্গে। কিন্তু কেন গোপন রাখলেন বিয়ের কথা? শুভেচ্ছা জানাতে আর এই গোপনীয়তা কারণ জানতে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার তরফ থেকে যোগাযোগ করা হয় অহনা দত্ত-র সঙ্গে।
অহনা: বলো (সঙ্গে হাসি)
প্রশ্ন: প্রথমেই অনেক শুভেচ্ছা। কেন এতদিন গোপন রাখলে বিয়ের কথা?
অহনা: আমরা একসঙ্গে থাকার প্রথম দিন থেকেই, অর্থাৎ টালিগঞ্জে থাকাকালীনই জানতাম এটা কোনো ছেলেখেলা হচ্ছে না। আমরা বিয়ে করে নেব জলদি। আমাদের বিয়ের সময় দীপঙ্করের মা-ও ছিল। আন্টি তো ভীষণ খুশি হয়েছিল। এরপর এই বছর (২০২৪ সালে) উনি চলে গেলেন! আসলে ২০২৩ সালটা ভীষণ নেগেটিভ ছিল। তবে এই দু' বছরে আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি যে, আমরা সত্যিই একে-অপরকে ভালোবাসি।
আর যারা আমাদের বিয়ের ব্যাপারটা জানত না, তাঁরাও কিন্তু বিগত কয়েক মাসে আমাকে বলেছে, তোরা বিয়েটা কর এবারে। কেউই জানত না সেরকম আমাদের রেজিস্ট্রি হয়ে গিয়েছে। না বলার একটাই কারণ, আমাদের মনে হয়নি এট সঠিক সময় সবাইকে সব কিছু জানানোর। বিয়েটা তো এমনিতেও ভীষণ ব্যক্তিগত ব্যাপার।

প্রশ্ন: তারপর নতুন বছরে একেবারে ধামাকা দিলে?
অহনা: (হাসি)! ভিডিয়োটা পোস্ট করার অনেকদিন ইচ্ছে ছিল। নতুন বছরের প্রথম দিনে মনে হল শেয়ার করেই ফেলি। আসলে বিয়ের খবরটা আমরা পাবলিক করিনি ঠিকই, বা ভিডিয়োটা সামনে আনিনি। তবে হ্যাঁ কেউ যখন জিজ্ঞাসা করত, তোরা কি বিয়ে করেছিস, আমরা বলে দিতাম 'হ্যাঁ আমরা তো বিবাহিত'। এবার সবাই সেটা ভাবত যে আমরা ইয়ার্কি মারছি। এবার দেখো, আমি কিন্তু অস্বীকার করিনি।
আমার মনে হয়েছে, ২০২৫ সালটা খুব পজিটিভ একটা সময়। ২০২৪-এ অনেক কিছু অ্যাচিভ করেছি। মানুষের কাছ থেকে ভালোবাসা পেয়েছি। মানুষ আমাকে আর দীপঙ্করকে চিনেছে, বুঝেছে। নেতিবাচকতা অনেক কম, ইতিবাচকতা বেশি। তাই জানিয়েই দিলাম।
প্রশ্ন: মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলে বিয়ের আগে বা পরে?
অহনা: ওই যে বললাম, ২০২৩ ভীষণ নেগেটিভ বছর ছিল আমার জন্য। মানুষের কমেন্টে, আরও অনেকভাবে আমাকে অপদস্থ হতে হয়েছে। আমি কোনো কিছুরই জবাব দেইনি। আমি শুধু মনে মনে ভেবেছি, সময় সবকিছু ঠিক করে দেবে। আজকে ২০২৪ শেষ হয়ে, ২০২৫-এ ঢুকলাম। সেই একই মানুষের সঙ্গে। আমার সত্যিই নতুন করে কিছু প্রমাণ করার নেই আর।
প্রশ্ন: তাহলে কি এবার সব কিছু ঠিক হবে মা আর মেয়ের?
অহনা: দেখো সব পরিবারেই তো ঝমালে ঝগড়া অশান্তি হয়। পরিবারে ঝমালে ঝগড়া অশান্তি সবার হয়। তোমার হয়, আমার হয়, যারা কমেন্ট করেছে আমার নামে নানারকম, তাদেরও হয়। আমরা পাবলিক ফিগার বলে সামনে আসে। বেশি কথা হয়। এটা নিয়ে কিছুই তো করার নেই।
প্রশ্ন: বিয়ের পর কতটা বদলাল জীবন?
অহনা: ধুর কিছুই বদলায়নি! শুধু ভাড়া বাড়িতে বিয়ে করেছিলাম। আর এখন নিজের বাড়িতে থাকছি। বাড়িতে থাকি আর কতক্ষণ যে কোনো দায়িত্ব নেব। দীপঙ্করের বাবাই সব দায়িত্ব নেয়। সঙ্গে আমাদের কিছু ভালো-ভালো হাউজ হেলপ আছে। ওর আমাদের আর আমার দুটো ছোট্ট বাচ্চা (সারমেয়) মিষ্টি আর চিনিকেও সামলায়।’
প্রশ্ন: এবারে কি তাহলে একটা বড় রিসেপশন পার্টি দেওয়া হবে?
অহনা: ভিডিয়ো দেখে তো বুঝতেই পারছ, ভীষণ একটা বাজেট ফ্রেন্ডলি বিয়ে (হাসি)। আমাদের কোনোদিন প্ল্যান ছিল না যে ধুমধাম করে বিয়ে করব। আমরা সবসময় ভেবে এসেছিলাম একসঙ্গে থাকব। সেটা বিয়ে না করে হোক বা করে হোক। একসঙ্গে থাকাটাই আমাদের উদ্দেশ্য ছিল। সত্যি বলতে, পার্টি বা রিসেপশনের কোনো পরিকল্পনা তো আপাতত নেই।

অহনা দত্ত ও দীপঙ্কর রায়কে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার তরফ থেকে তাঁদের বিবাহিত জীবনের জন্য অনেক-অনেক শুভেচ্ছা। দাম্পত্য দীর্ঘস্থায়ী হোক, ভালো কাটুক আগামী সব বছর।