বাংলা বিনোদন দুনিয়ায় অতি পরিচিত মুখ আয়েশা অত্রি ভট্টাচার্য। শিশুশিল্পী হিসাবে কেরিয়ার শুরু করা আয়েশার প্রথম ভালোবাসা ডান্স। ডান্স রিয়ালিটি শো-এর মঞ্চ তিনি কাঁপিয়েছেন ছোটবেলাতেই। এরপর ছোটপর্দা, বড়পর্দা-সহ একাধিক মাধ্যমে দর্শক তাঁর অভিনয় গুণেও মুগ্ধ হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়াতেও সমান জনপ্রিয় আয়েশা। তাঁর নাচের রিল হোক বা কনটেন্ট নির্ভর ভিডিয়ো, নিমেষেই ভাইরাল হয়। সম্প্রতি এক নাচের ভিডিয়োর জন্য চর্চায় এই সুন্দরী। শনিবার ফেসবুকে নিজের মিনিট খানেকের একটি নাচের ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন ‘বুমেরাং’ অভিনেত্রী। সবুজ শরীর চাপা স্লিট ড্রেস আর জ্যাকেটে ‘সুকুমারী প্রিয়তমা’ গানে বেলি ডান্স করে দেখান আয়েশা।
এক চ্যানেল আয়োজিত ডান্স রিয়ালিটি শো-এর বিচারক হিসাবে হাজির ছিলেন তিনি। সেখানেই কোনওরকম পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়াই সবার অনুরোধে এই ডান্সটি করেন আয়েশা। সেই ক্লিপিংস নিজের ফেসবুকে শেয়ার করতেই হু হু করে ভাইরাল। কয়েক ঘণ্টাতেই ১০ লাখ মানুষ দেখে ফেলেন সেই নাচ। অনেকে যেমন আয়েশার প্রশংসা করেছেন, তেমন নিন্দুকেরও অভাব নেই। কুরুচিকর মন্তব্য ছেয়ে গেছে তাঁর কমেন্ট বক্স।
কেউ প্রশ্ন করেছেন আয়েশার পোশাকের ধরণ নিয়ে, কেউ আবার তাঁকে ওজন ঝরানোর পরামর্শ দিয়েছেন। ট্রোলিং-এর মাত্রা বাড়তেই পালটা ফুঁসে ওঠেন আয়েশা। এই নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার তরফে অভিনেত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার মা’কেও বলিনি, তবে কাল সত্যি আমি ওইসব কমেন্ট পড়ে কেঁদে ফেলেছিলাম। এমনটা আগে কখনও হয়নি। খুব আপসেট ছিলাম। নাচটা আমার ভালোবাসা, ডান্স আমার অক্সিজেন। যাঁরা পেশাদার বেলি ডান্সার হন, তাঁদের তো চাবি ফিগারই হয়। আমি ভাবছিলাম, আমি কি তাহলে ডান্স করা ছেড়ে দেব? আমি ওই ধরণের পোশাক পরা ছেড়ে দেব?'
খানিক থেমে আয়েশা যোগ করেন, ‘মা-কে যখন বললাম, মা বলল এইসব ভুলে যা। ওরা তোকে এইসব বলছে সেটাও পজেটিভভাবেই নে। এটাও দেখ, এর জন্য তোর ভিডিয়ো লাখ লাখ মানুষ দেখছে। এইসব নিয়ে মাথা ঘামাস না। মায়ের কথ শুনে বুকে বল পেলাম। আমি জানি, কুছ তো লোক কহেঙ্গে। এই সত্যিটা আমি মাথায় গেঁথে রেখেছি। মা বলার পর সেটাই ফের মনে মনে আওড়ে নিলাম’।
ট্রোলারদের মধ্যে অধিক সংখ্য়কই মহিলা, সেটা বাড়তি খারাপ লাগার জায়গা বললেন আয়েশা। তাঁর কথায়, ‘ডান্সের থেকে বেশি ফিডব্যাক এসেছে আমার পোশাক কিংবা বেলি ফ্যাট নিয়ে। আর বেশিরভাগ মেয়ে সেই কথাগুলো বলছে। আজ এই সময়ে যখন আমরা মেয়েদের স্বাধীনতা, তাঁদের পোশাক পরার স্বাধীনতা নিয়ে এত্ত কথা বলছি, সেখানে মেয়ে হয়ে একজন মেয়েকে কীভাবে এরা ছোট করছে’।
ফেসবুকেও আয়েশা পালটা লেখেন, ‘অনেকেই বলছেন ড্রেসটা ঠিক নেই ডান্সটার জন্যে একটু ভেঙে বলি তাঁদের, প্রথমত আমি ডান্স করবো বলে কোনও রেডি ছিলাম না, আমি অতিথি বিচারক হিসেবে হাজির ছিলাম। এইদিন হঠাৎ টিমের রিকোয়েস্ট আসায় আমি অন স্পট স্টেজে উঠে পারফর্ম করি যেই ড্রেসে ছিলাম সেই ড্রেসেই! আর বাদ বাকি যারা আমার পেট বা ভুঁড়ি নিয়ে আমায় বডি শেমিং করছেন! দয়া করে একটু ইউটিউবে গিয়ে পেশাদার কিছু বেলি ডান্স এর ভিডিও গুলো দেখে আসবেন, মনে হয়ে একটু জেনে কমেন্ট করা উচিৎ!’
আপতত ছোটপর্দা থেকে দূরে রয়েছেন আয়েশা। প্ল্যাটফর্ম এইটের ওয়েব সিরিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। বড়পর্দা আর ওটিটি এখন মূল লক্ষ্য তাঁর।