একজন টলিপাড়ার জনপ্রিয় গায়ক, অন্যজন রাজনীতির আঙিনায় চেনা মুখ। সম্পর্কে ভাই-বোন। পেশা আলাদা হলেও দুজনের সম্পর্কে কখনও রাজনীতির রং লাগেনি। কথা হচ্ছে গায়ক শোভন গঙ্গোপাধ্যায় ও তাঁর ‘বোনু’ দীপ্সিতা ধরের। রবিবার ভাইফোঁটার আনন্দে মাতোয়ারা গোটা বাংলা। আরজি কর আবহে এই বছর এমনিতেই খানিক ভাটা পড়েছে উৎসবের মেজাজে। তবুও এই দিনটা শুধু উৎসব বা উদযাপনের নয়, ভাই-বোনেদের কাছে এই দিনের মাহাত্ম্য অনেক। আরও পড়ুন-বোনুর জন্মদিনে আদুরে শুভেচ্ছা দাদান-এর! শোভনের চেয়ে বয়সে কত ছোট দীপ্সিতা?
ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিয়ে তাঁর দীর্ঘায়ু কামনায় ব্রতী হন বোনেরা। অন্যদিকে বোনেদের রক্ষার শপথ নেন ভাইয়েরা। এই বিশেষ দিনে দুই শহরে শোভন-দীপ্সিতা। এই বছর ভাইফোঁটা উদযাপন থেকে বিরত দুজনেই। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার তরফে বাম নেত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দীপ্সিতা জানান, ‘না, এই বছর আমার দাদানকে ফোঁটা দেওয়া হল না, কারণ আমি দিল্লিতে রয়েছি। দাদান (শোভন গঙ্গোপাধ্যায়) কলকাতায়। তবে অন্য বছর এই দিনটা আমরা উদযাপন করি’।
ভাইফোঁটার শুভেচ্ছা আগেভাগেই শোভনকে জানিয়ে দিয়েছেন দীপ্সিতা। বললেন, ‘আজ ফোনে কথা হয়নি, তবে গতকাল কথা হয়েছিল’। অন্য়বার দাদার কাছে উপহারের আবদার থাকে, কিন্তু এই বছর সেই মানসিকতাই নেই! দীপ্সিতা বলেলন, ‘এই বছর দুজনের মন-মেজাজ ভালো নয়। সেই মানসিক পরিস্থিতিটাই নেই। রাজ্যে যে ঘটনা ঘটে গেছে….’।
এখনও বিচার পায়নি আরজি করের নির্যাতিতা চিকিৎসক। প্রায় তিন মাস হতে চলল, সেই ন্যক্কারজনক খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় সরব হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ। সবার উদ্দেশ্যে এদিন সৌভ্রাতৃত্বের বার্তা দিলেন দীপ্সিতা। তাঁর কথায়, ‘নারী-পুরুষ নির্বিশেষে, ভাই-বোন নির্বিশেষে মানুষ মানুষকে সম্মান দিতে শিখুক। সৌভ্রাতৃত্ব বজায় থাকুক, নারী-পুরুষের মধ্যে সম্মান বজয় থাকুক, আজ ভাইফোঁটায় এইটুকুই কামনা’।
শোভন-দীপ্সিতার সম্পর্ক পুরোদস্তুর খুনসুটি। পিঠাপিঠি ভাই-বোন হওয়ায় মারপিট করেই বড় হয়েছেন দুজনে। সম্পর্কে শোভনের মাসতুতো বোন দীপ্সিতা। শোভনের চেয়ে মাত্র ৪ মাসের ছোট দীপ্সিতা! দাদান বলেই তাঁকে ডাকেন বাম নেত্রী। এই বিশেষ দিনে দূরে থাকায় ছোটবেলার স্মৃতিতে ডুব দিলেন দীপ্সিতা। বললেন, ‘ছেলেবেলায় আমার দিদার বাড়িতে (মামার বাড়ি) আজকের দিনটা সেলিব্রেট করতাম। সারা বছর এই দিনটার জন্য অপেক্ষা করে থাকতাম। সেখানেই সব ভাই-বোনেরা জড়ো হতাম, হই-হুল্লোড় করে কাটত দিনটা’।