তারকাদের সব সময়ই ঘিরে থাকে আলোকবৃত্ত। ফলে খুব সহজেই তাঁদের সন্তানরা এসে পড়ে লাইম লাইটে। কিন্তু সন্তানদের ক্ষেত্রে এক এক শিল্পীর দৃষ্টিভঙ্গি এক এক রকমের। কেউ কেউ চান তাঁর সন্তান থাকুক চর্চায়, আবার অনেকেই শিশুকে লেন্স থেকে রাখেন আড়ালে। কেউ কেউ চান তাঁর ছেলে-মেয়ে বড় হয়ে তাঁরই মতো একজন শিল্পী হোক, আবার অনেকেই এর বিপরীত পথ অবলম্বন করেন। এক্ষেত্রে কোন পথে জটিলতা বেশি আর কোন দিনটাই বা 'সহজ'? সেই কথাই ‘ফাদার্স ডে'-এর দিন একান্ত সাক্ষাৎকারে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার সঙ্গে ভাগ করে নিলেন রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাহুলের মতে এ সিদ্ধান্ত কেবল তাঁর একার নয়, স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা কী ভাবছেন সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। নায়ক বলেন, 'সহজ মাঝে মধ্যে আমার ছবির প্রিমিয়ারে আসে আবার অনেক সময় প্রিয়াঙ্কার ছবির প্রিমিয়ারেও যায়। তখন যদি কেউ ওর ইন্টারভিউ নিতে চায় আর সেখানে যদি ওর কোনও সমস্যা না থাকে তাহলে আমরা আটকাই না। তবে আবার উল্টোটাও হয় না। মানে ও নিজে থেকে ইন্টারভিউ দিচ্ছে বা আমরা সেটার চেষ্টা করছি আমরা সেই বিষয়টাও হয় না। পাশাপাশি স্যোশাল মিডিয়াতে এখন থেকে সহজ আসুক সেটাও খুব একটা চাই না।'
আরও পড়ুন: 'বাবা আমার কোচ', 'ফাদার্স ডে'-তে বাবা শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে আবেগে ভাসলেন ছেলে ঋতব্রত
মূলত মধ্য পন্থাতে বিশ্বাসী রাহুল কিন্তু ছেলের ভালো লাগায় গুরুত্ব দেন। সহজ বড় হয়ে যদি মা-বাবার পেশাকেই অবলম্বন করতে চান সেক্ষেত্রে তা কী ভাবে দেখবেন অভিনেতা? এই প্রশ্নের উত্তরে অকপট ভাবে নায়ক বলেন, 'আসলে সকলে নিজের ভাগ্য নিয়ে আসে। তাই আমাদের চাওয়া বা না চাওয়া নয়, সহজ কী চাইছে, তার উপর সব কিছু নির্ভর করছে। সে জীবনে যেটা করে খুশিতে থাকবে, আনন্দে থাকবে সেটাই আমরা চাই।'
'সহজ'-এর ইচ্ছে নিয়ে বলতে গিয়ে রাহুল জানান ছেলে অ্যানিমেটর হতে চায়। এই প্রসঙ্গে রাহুল বলেন, 'তার ইচ্ছে সে অ্যানিমেশন করবে, অ্যানিমেটর হবে। এখন ওর ওড়ার সময়, তাই আমরা কী চাই কী চাই না তা ওর উপর চাপিয়ে দেব না। এমন কী ভবিষতেও না। কিন্তু কখনও অভিনয়ে যদি সহজ আগ্রহী হয়, আর তা নিয়ে যদি আমার কাছে আসে তবে, আমি আমার যতটা অভিনয় সংক্রান্ত বিদ্যা-বুদ্ধি আছে ততটা দিয়ে ওকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করব। কিন্তু কখনওই আমাদের কোনও সিদ্ধান্ত সহজের উপর চাপিয়ে দেব না।'
আরও পড়ুন: ‘সাত বছর ধরে এই চরিত্রের আত্মা আমি নিজের মধ্যে বহন করছি’: ‘ অথৈ’ প্রসঙ্গে অর্ণ মুখোপাধ্যায়
পাশাপাশি কাজের ফাঁকে ছেলের সঙ্গে কীভাবে সময় কাটান তাও জানান বাবা রাহুল। পড়ানো থেকে ঘুরে বেড়ানো সবটাতেই ছেলের সঙ্গী তিনি। সুযোগ পেলেই ছেলেকে নিয়ে তাঁরা বেরিয়ে পড়েন ঘুরতে। বাড়িতেও একসঙ্গে খেলেন নানা মজার খেলা। এই প্রসঙ্গে অভিনেতা বলেন, 'আমাদের তিন জনের একটা কমন খেলা আছে, ক্লুডো। এই খেলায় ক্লু দেখে দেখে খুনিকে খুঁজে বের হয়, এটা আসলে একটা কার্ড গেম। ঘুরতে যেতেও ভালোবাসে সহজ, তাই সময় পেলেই আমরা বেরিয়ে পড়ি।' তবে শুধু খেলা আর ঘোরা নয়, মাঝে মাঝে পড়তেও বসান রাহুল। তিনি বলেন, 'আমি ওকে বিশেষত বাংলাটাই একটু পড়াই, কিন্তু তার বাইরে আর কিছু করি না, কারণ সেটা করে বিশেষ কিছু লাভও নেই।'