ইন্ডাস্ট্রিতে কান পাতলে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা গেলেও, খুব অল্পদিনেই বাজিমাত করেছেন নায়িকা। ইতিমধ্যেই বহু তাবড় তাবড় অভিনেতা এবং পরিচালকের সঙ্গে কাজ করে ফেলেছেন সৌরসেনী মৈত্র। নিজের অভিনয়ের গুণে জায়গা করে নিয়েছেন দর্শকদের মনে। পুজোয় আসছে তাঁর নতুন ছবির 'শাস্ত্রী'। ছবির শেষ মুহূর্তের প্রচার নিয়ে বিরাট ব্যস্ততার মাঝে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে জানালেন তাঁর এ বছরের পুজোর প্ল্যান।
ছবি নিয়ে বিরাট ব্যস্ততা, কিন্তু তাঁর ফাঁকে কেমন করে পুজোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন সৌরসেনী? পুজোর কেনাকাটা কি শেষ? প্রশ্ন শুনে একগাল হেসে নায়িকা জবাব দেন, 'সারাবছর এত শপিং করি, যে আলাদা করে আর পুজোর শপিং করা হয় না। ছোটবেলায় প্রচুর জামা হত। যত বয়স বাড়ছে জামার সংখ্যা তত কমছে।' আর পুজোর আনন্দ, সেটাও কী কমেছে? ছোটোবেলার থেকে এখন কতটা বদলেছে পুজো? প্রশ্নে অভিনেত্রী বলেন, 'আমাদের সাধারণত পুজোতেও কাজ থাকে। এবারও তেমনটাই থাকবে। আর পুজো পরিক্রমার ছলেই আমার ঠাকুর দেখা হয়ে যাবে। তাছাড়া এ বছর পুজোয় আমার ছবি মুক্তি পাচ্ছে, তাই কাঁধে খানিকটা বাড়তি দায়িত্বও রয়েছে।'
পুজো পরিক্রমার মাধ্যমে ঠাকুর দেখা হয়ে গেলেও এই সময় বন্ধুদের সময় দিতে ভোলেন না নায়িকা। তাঁর কথায়, ‘যে সমস্ত বন্ধুরা অন্যান্য শহরে কাজ করেন, এই সময়টা তাঁরা বাড়ি ফিরতে চেষ্টা করেন। তাঁদের সঙ্গে পুজোর কটা দিন নিয়ম করে দেখা করি, প্রচুর আড্ডাদি। তাছাড়া একসঙ্গে মিলে প্রচুর খাওয়া-দাওয়াও হয়। অনেক পুরনো কথাবার্তা নিয়ে আমাদের আড্ডা চলে। ছোটবেলার অনেক কিছুই তো এখন করা সম্ভব নয়, কিন্তু যেটুকু করা যায় সেটুকু আবার আমারা রি-ক্রিয়েট করার চেষ্টা করি। আসলে ছোট বেলার পুজোটা বেশ অন্যরকম ছিল, তার একটা আলাদা চার্ম ছিল। এখনের পুজোটা আবার আলাদা কিন্তু আবেগটা একই।’
আরও পড়ুন: ‘দু'জনেই সেক্সুয়ালি…’! মুসলিম হয়ে হিন্দু নায়িকাকে কেন বিয়ে? জবাব সমাজবাদি পার্টির নেতা ফাহাদের
এই ছোটবেলার পুজোর কথা বলেতে বলতে নস্টালজিক হয়ে পড়েন নায়িকা। তাঁর ছেলেবেলার স্মৃতির পাতার ধুলো উড়িয়ে বলেন, 'ছোটবেলায় অনেকটা ছুটি পেতাম আর এখন কাজের মধ্যে কাটে। কিন্তু এখনও পুজোতে এলে আমি সমান ভাবে আনন্দ পাই। ছোটবেলায় সকলে ছিল। আমার দাদু, দিদা, ঠাকুরমা। তাছাড়া আমার সব ভাই বোনেরা এক হতাম। সবাই মিলে আমরা খুব মজা করতাম। আমার বাড়ির একেবারে উল্টো দিকেই ছিল দিদার বাড়ি। তাই ভাই-বোনেরা মিলে পুজোর ক্যাপ ফাটাতাম, একসঙ্গে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘুরে প্রচুর ঠাকুর দেখতাম।'
আর প্রেম? পুজো মানেই তো প্রেম, এমনকী হালেই অভিনেত্রীকে নিয়ে প্রেমের গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল। টা নিয়ে প্রশ্ন করতেই তিনি হেসে বলেন, 'এরকম কোনও খবর আমি জানি না। আর এই যে বললেন গুঞ্জন। হ্যাঁ এই গুঞ্জন বা গুজবে একদম কান দেবেন না।'
কিন্তু এইসব কিছুর মাঝেও শহরের উত্তাল পরিস্থিতি তাঁকে ভাবাচ্ছে। তার মধ্যেই ছবির রিলিজ। এই ঘটনার প্রভাব তো বাংলা ছবিতেও দৃশ্যমান। তাঁদের আগের ছবি 'বাবলি' এই আবহে খুব একটা সাড়া ফেলতে পারেনি দর্শকদের মধ্যে। সেখানে শাস্ত্রী কি দর্শকদের হলমুখী করতে পারবে? প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলে নায়িকের জবাব, 'বিগত এক দেড় মাস ধরে আমরা যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি তাতে কারোর মন মেজাজ ভালো নেই। আমরা সব জায়গাতেই এখন সুবিচারের ডাক শুনতে পারছি। কিন্তু যতই হোক কয়েকটা দিনের জন্য মা তাঁর সব সন্তানদের নিয়ে আসছেন। দুর্গাপুজো বাঙালির কাছে একটা আবেগ। যখন মা দুর্গা আসেন তখন তিনি কিন্তু অনেকটা আশা আলো জ্বালিয়ে দেন আমাদের মনে। তাই আমিও আশা রাখি যে একদিন ঠিক এই পরিস্থিতি থেকে আমরা সবাই বেরোতে পারব। সুবিচার আসবে এবং আমরা সবাই শান্তিতে একে অপরের পাশে থেকে মিলেমিশে কাজ করতে পারব। এ পুজোতেও দর্শকরা নিশ্চয়ই আমাদের ছবি দেখতে হলমুখী হবেন বলেই আমি আশা।'