অভিনয় থেকে প্রযোজনা সবটা নিয়ে ব্যস্ত অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী। পুজোয় আসছে তাঁর নতুন ছবি 'শাস্ত্রী'। ছবিতে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার প্রাপক মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে ১৬ বছর পর জুটি বাঁধছেন দেবশ্রী রায়। তাছাড়াও বিরাট স্টার কাস্ট থাকা পুজোর মেগার ছবি নিয়ে প্রবল ব্যস্ত অভিনেতা। ছবির কাজের মাঝে পুজো নিয়ে তাঁর এবছর কী পরিকল্পনা? তাঁর দলনেত্রী উৎসবে ফেরার ডাক দিয়েছিলেন, তা নিয়ে দানা বেঁধেছিল বিতর্ক। এ বিষয়েই বা কী মত বিধায়কের? সবটা নিয়ে খোলা মনে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার সঙ্গে আড্ডা দিলেন সোহম চক্রবর্তী।
সোহম চক্রবর্তী কেবল ‘শাস্ত্রী’-এর প্রধান মুখ নন, সুরিন্দর ফিল্মসের সঙ্গে এই ছবি যৌথভাবে প্রযোজনা করেছেন তিনি। তাই সবটা মিলিয়ে পুজোর ছবি মুক্তি নিয়ে চূড়ান্ত ব্যস্ত অভিনেতা। কিন্তু এত ব্যস্ততার মাঝে এবারের পুজো নিয়ে কী পরিকল্পনা তাঁর? কীভাবে কাটবে এবারের শারদীয়া? প্রশ্নে অভিনেতা বলেন,'আমার কাছে এবছর পুজো মানেই 'শাস্ত্রী'। ছবি নিয়ে প্রচন্ড ব্যস্ততা চলছে। তাই আলাদা করে আর পুজোয় কী করব তা নিয়ে ভাবার সময় পায়নি। যদি এই পুজোয় আমাদের ছবি হিট হয় তাহলে সেটাই আমার জন্য বড় প্রাপ্তি হবে। আমার পুজো সার্থক হবে।'
আরও পড়ুন: ঢাকের তালে জমল মিঠুন-দেবশ্রীর রসায়ন, ‘শাস্ত্রী’র পুজোর গানে অভিজিৎ-এর কামব্যাক
কিন্তু ছেলেবেলায় তো এত ব্যস্ততা ছিল না। তখন কীভাবে পুজোর আনন্দে মেতে উঠতেন অভিনেতা? আর ৫ জনের মতো কী প্যান্ডেলে যেতেন ঠাকুর দেখতে? কারণ ছোট থেকেই তো তিনি বেশ জনপ্রিয় মুখ। এই প্রশ্নে কিছুটা নস্টালজিক হয়ে নায়ক উত্তর দেন, ‘ছোটবেলায় খুব হই-হুল্লোড় করে পুজোর সময়টা কাটতো। কিন্তু বাবা-মার সঙ্গে হাত ধরে সন্ধ্যাবেলা প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঠাকুর দেখার যে বিষয়টা সেটা আমার খুব একটা হয়ে ওঠেনি। কারণ ছোটোবেলা থেকেই আমার ভিড় খুব একটা ভালো লাগতো না। আর লাইনে দাঁড়ানোর মতো ধৈর্যও আমার ছিল না। সকালবেলা কিছু ঠাকুর দেখে আসতাম। সন্ধ্যাবেলাটা কাটত পাড়াতেই। বন্ধুদের সঙ্গে আমাদের বাড়ির সামনের পার্কে ক্যাপ বন্দুক নিয়ে খেলতাম। ওই মাঠের পুজোয় আমরা ভলান্টিয়ারও হতাম।’ অভিনেতা জানান তাঁর ছোটবেলার সেই পুজোর স্মৃতি বিজড়িত মাঠেই তাঁর নতুন ছবি 'শাস্ত্রী'-এর পুজোর গানের শ্যুটিং হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘বিরাট আমাকে ডাকল না?’ বিয়ের রিসেপশনে নেমন্তন্ন না পেয়ে অভিমানী গুরুদাস মান, তারপর যা ঘটেছিল…
তবে এবার কলকাতার পরিস্থিতি বেশ উত্তাল। মানুষ কিছুটা হলেও উৎসব বিমুখী। অথচ তাঁর দলনেত্রী দিয়েছিলেন উৎসবে ফেরার ডাক। তা নিয়ে দ্বন্দও সৃষ্টি হয়েছিল। দানা বেঁধে ছিল বিতর্ক। বিনোদন জগতের জনপ্রিয় সব মুখেরাও হয়েছিলেন সরব। এই বিষয়ে অভিনেতার কী মত? জানতে চাওয়া হলে, সোহমের সাফ জবাব, ‘এই বিষয়টা নিয়ে এই মুহূর্তে আমি কিছু বলতে চাই না। এটা সম্পূর্ণ একটা অন্য বিষয়। এই বিষয় নিয়ে আমরা মুখ খুললে তাহলে যিনি উৎসবের ডাক দিয়েছেন তাঁকে অসম্মান করা হবে। তাই এখন এটা নিয়ে আলোচনা না করাই শ্রেয়। যতটা বলার আমরা তো আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বা রাস্তায় নেমে বলেছি।’
তবে তৃণমূল বিধায়ক সুবিচারের কথাও বলেছেন। তাঁর মতে,'যা হয়েছে তা কাম্য নয়। যারা অন্যায় করেছ অবিলম্বে তাদের ফাঁসি হোক। বা যদি তার থেকেও বড় কোনও শাস্তি থেকে থাকে তাহলে সেটা তাদের দেওয়া হোক।'
তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারকাদের যে ভাবে বার বার টার্গেট করা হয়েছে তাতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অভিনেতা। তিনি বলেছেন, ‘প্রত্যেকেই কাজে ব্যস্ত। সকলে আন্দোলন করছেন ঠিকই। পাশাপাশি কাজও করছে। বিনোদন মাধ্যম আমাদের রুজি রুটি জোগায়। তাই কাজ তো আমাদের করতেই হবে। সেখানে আমাদের আলাদাভাবে টার্গেট করার কোনও মানে হয় না।’ যাঁরা অফিস যাচ্ছেন, ব্যবসা করছেন তাঁরা নিজেদের কাজ করলে সমস্যা নেই, কিন্তু শিল্পীরা কাজ করলে যে জনরোষের মুখে পড়তে হচ্ছে তা অভিনেতার চোখে 'দ্বিচারিতা'। নায়কের মতে, ‘আমরা নিজেদের কাজকে সম্মান করে এই আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাব। আমার বাংলায়, আমার কলকাতায় যদি কোনও অন্যায় ঘটে, তার প্রতিরোধ আমরা একসঙ্গে করব। একসঙ্গে সবাই প্রতিবাদ করব।'