বাংলা নিউজ > বায়োস্কোপ > Swastika Mukherjee Exclusive: 'কাজটা করতে গিয়ে আমি খুব কষ্ট পেয়েছি…' বিজয়া নিয়ে যা জানালেন স্বস্তিকা

Swastika Mukherjee Exclusive: 'কাজটা করতে গিয়ে আমি খুব কষ্ট পেয়েছি…' বিজয়া নিয়ে যা জানালেন স্বস্তিকা

স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়

হইচইয়ের নতুন সিরিজ 'বিজয়া'য় উঠে আসবে র‍্যাগিং এবং তাঁর বিরুদ্ধে এক সহায়-সম্বলহীন লড়াকু মায়ের গল্প। এই সিরিজেই নাম ভূমিকায় দেখা যাবে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়কে। ‘বিজয়া’ হয়ে উঠতে গিয়ে তাঁর কী উপলব্ধি হল? সেই অনুভূতি হিন্দুস্থান টাইমস বাংলাকে জানালেন নায়িকা।

অনেকেরই চোখে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় স্বপ্নসুন্দরী। বরাবরই সোজাসাপটা জবাব দিতে বিশ্বাসী নায়িকা। তাঁকে নিয়ে কম বিতর্কও হয় না। তবে এবার তিনি নিজের ইমেজ ভেঙে এক মায়ের বেশে আসছেন পর্দায়। যদিও এর আগেও তাঁকে মায়ের চরিত্রে দেখেছেন দর্শক। কিন্তু সেক্ষেত্রে তিনি হয় একেবারে ঘরোয়া, নয়তো সিঙ্গেল মাদার হলেও বেশ দাপুটে পুলিশ অফিসার রূপে ধরা দিয়েছেন। তবে এবার তিনি শহরতলীর এক বিধবা মা। যে একা হাতে মানুষ করেছে তাঁর সন্তানকে। চোখে অনেক স্বপ্ন নিয়ে ছেলেকে কলকাতার নামী সংস্থায় পাঠিয়েছে পড়তে। কিন্তু পরিস্থিতির চাপে সেই মা হয়ে উঠবে প্রতিবাদী, নিজের ছেলের জন্য একাই করবে লড়াই। হইচইয়ের নতুন সিরিজ 'বিজয়া'য় উঠে আসবে র‍্যাগিং এবং তাঁর বিরুদ্ধে এক সহায়-সম্বলহীন লড়াকু মায়ের গল্প। এই সিরিজেই নাম ভূমিকায় দেখা যাবে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়কে। ‘বিজয়া’ হয়ে উঠতে গিয়ে তাঁর কী উপলব্ধি হল? সেই অনুভূতি হিন্দুস্থান টাইমস বাংলাকে জানালেন নায়িকা।

বিজয়ার চরিত্র করতে গিয়ে কী উপলদ্ধি হল?

স্বস্তিকা: কাজটা করতে গিয়ে আমি খুব কষ্ট পেয়েছি। কান্নার দৃশ্য করার জন্য গ্লিসারিন বা অন্যান্য টেকনিকের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এই কাজের ক্ষেত্রে সেরকম কিছুর প্রয়োজন হয়নি। নিজে থেকেই চোখে জল চলে আসত। আমি বাকিদের বলতাম, আমার চোখের ট্যাবটা যেন সব সময় খোলাই আছে। দেবদত্তর (পর্দার ছেলে) মুখটা দেখে খুব মায়া হত। তবে শুধু দৃশ্যগুলো করার সময় নয়, ডাবিং করতে গিয়েও আমি প্রচন্ড কেঁদেছি। আমি ওঁদের বলেছি ৫ মিনিট দাঁড়াও আগে কেঁদেনি তারপরে শুরু করছি।

আরও পড়ুন: 'শীঘ্রই আসছে...' রণজয়ের বাহুডোরে আবদ্ধ শ্যামৌপ্তি, নতুন রূপে ফিরছে 'গুড্ডি' জুটি? কী জানালেন অভিনেতা

আপনিও তো মা, কাজটা করতে গিয়ে মেয়ের কথা মনে হল?

স্বস্তিকা: হ্যাঁ, আমার মেয়েও বাইরে থেকেই পড়াশোনা করছে। এই গল্পে দেখানো হয়েছে নৈহাটি থেকে কলকাতা। কিন্তু আমার জীবনেও তো একটা কলকাতা থেকে লন্ডন আছে। তাই এই চরিত্রটা করতে গিয়ে আরও বেশি করে সন্তান এবং মায়ের মধ্যে যে নারীর টান তা অনুভব করেছি। সেই জন্য আমি কাজটা করতে গিয়েও ইমোশনালি খুব বেশি করে জড়িয়ে গিয়েছিলাম। শুধু অভিনেত্রী বলে নয়, আমার মাতৃ সত্তাটাও এখানে অনেকটা কাজ করেছিল। আমার ক্যারিয়ারে এই চরিত্রটা একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসেবে থেকে যাবে।

আপনার চরিত্রটা নিয়ে যদি বিস্তারিত একটু বলেন...

স্বস্তিকা: এই চরিত্রটা একদিকে যেমন খুব অসহায়, অন্যদিকে খুবই বলিষ্ঠও। একজন বিধবা তাঁর সে ভাবে অর্থবল নেই, লোকবল নেই, কিন্তু আছে মনের অসীম শক্তি। যেটা ভুল সেটার সঙ্গে আপোষ করব না, সেই ভাবনাটার মধ্যেই অনেকটা সাহস আছে, সেটা বাস্তবায়িত করতে তো আরও অনেকটা সাহস লাগে। কিন্তু সমাজ যে ভাবে চলতে বলছে, আমি সে ভাবে চলব না, নিজের মতো করে বাঁচবো। এই ভাবনাটা ভাবার জন্য যে সাহসটা লাগে সেটা 'বিজয়া'-এর রয়েছে এবং তাই এই চরিত্রটা ব্যক্তিগতভাবে আমাকে অনুপ্রাণিত করে।

আরও পড়ুন: 'আমার চেনা তথাগতকেই দেখলাম...' শিলিগুড়ির শোয়ের পর প্রাক্তন প্রসঙ্গে মত দেবলীনার, তবে কি জোড়া লাগছে ভাঙা সম্পর্ক?

আপনিও তো বাস্তবজীবনে খুব স্পষ্ট বক্তা...কিন্তু এর জন্য যে বিতর্কে জড়াতে হয় তাতে ভয় করে না?

স্বস্তিকা: আমি খুবই নির্ভীক। আমার মধ্যে ভয়টা খুব কম। আমি এটা বললে মানুষ আমাকে গালাগাল দেবে, ভয় দেখাবে এগুলো ভেবে পিছিয়ে যাই না। আর লোকে কী বলবে? লোকে আমাকে নিয়ে কী ভাববে? এটা আমাকে একেবারেই বিচলিত করে না। তাই আমার যেটা ঠিক মনে হয়, আমি সেটাই করি। আর এমনিতেই মহিলাদের অ্যাটাক করার সোজা পথ হল, তাঁকে 'বেশ্যা' বলে দেওয়া। আমি এত বছর ধরে সিনেমায় কাজ করছি, এত ছোট বয়স থেকে এই কথাটা শুনে আসছি যে, এখন শব্দটা আমার কাছে আর কিছু মনে হয় না। উল্টে আমি সম্মানিত বোধ করি। ‌কোথাও মনে হয় যে তাঁরাও তো আমাদের সমাজেই একটা অংশ, তাহলে কেন এটা নিয়ে লজ্জিত হব।

'বিজয়া' তো সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার অনুকরণে তৈরি, এতে সেই সময় হওয়া বির্তক আবার নতুন করে যদি শুরু হয়...

স্বস্তিকা: মানুষের মনে যাতে আবার এই বিষয়টা আসে। আমাদের এই কাজটা দেখে যদি আবার নতুন করে আলোচনা শুরু হয়, তাহলেই আমার খুব ভালো লাগবে, কারণ সেটাই এর মূল লক্ষ। আমাদের জীবনে ধৈর্যটা খুব কম। তার উপর আবার এখন আমরা ১০ সেকেন্ডের রিল দেখি, ফলে বেশিক্ষণ কিছুই স্থায়ী হয় না। যখন সদ্য সদ্য কোনও ঘটনা ঘটে, তখন সেটা নিয়ে আলোচনা হয়, তারপর সমস্যাটা চাপা পড়ে যায়। আমাদের মনে রাখার জন্য কোনও কিছু ধৈর্য ধরে শুনতে হবে, দেখতে হবে, জানতে হবে। এত দিন পরে ওই ছেলেটির বাড়ির লোক কেমন আছেন? এখন কেসটা কী জায়গায় দাঁড়িয়ে? সেটার খোঁজ কি কেউ নিয়েছে?

আমি ভিজ্যুয়াল মিডিয়ামে কাজ করি। আর এই মাধ্যমটা তো খুব শক্তিশালী, তাই শিল্পী হয়ে আমরা যদি এরকম কোনও কাজ করতে পারি, যাতে করে আবার সেই আলোচনাটা শুরু হয়, তাহলে তো এর থেকে ভালো আর কিছু হতে পারে না।

কিন্তু আলোচনা হলেও র‍্যাগিংয়ের মতো একটা খারাপ বিষয় নির্মূল তো হচ্ছে না, এর কারণ কী বলে আপনি মনে করেন?

স্বস্তিকা: বিকৃত মানসিকতার ফল, নিজের ক্ষমতা জাহির করারা জায়গা। একটা মানুষের পোশাক, গায়ের রং, তার বড় গাড়ি-বাড়ি আছে কিনা সেটা দেখে তাঁর উপর নিপীড়ন করা।

কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এই ঘটনা কী ভাবে সবম্ভব? এক্ষেত্রে কী প্রতিষ্ঠানও সমান ভাবে দায়ী নয়?

স্বস্তিকা: যেখানে একটা প্রতিষ্ঠান, কর্মকর্তা, পুলিশ বা অ্যান্টি র‍্যাগিং সংগঠন সবই রয়েছে, কিন্তু তার সত্ত্বে এই ঘটনা ঘটছে। এই যে হোস্টেলগুলো সেখানে যারা দায়িত্বে রয়েছেন, বা যারা দেখাশোনা করছেন, সকলেরই তো একটা দায়িত্ব রয়েছে কিন্তু তাঁরা যদি সেখানে চোখে টুলি করে বসে থাকে তাহলে কে দেখবে?

কোথায় তো গিয়ে অভিযোগটা করলে সেটা নেওয়া হবে? কলেজ কমপ্লেন নেবে না। কমিটি নেবে না? পুলিশ নেবেনা, তাহলে যাবটা কোথায়? যখনই আমরা সমস্যা নিয়ে কোথাও যাই, তখন বহু ক্ষেত্রে শুনতে হয় 'উপরওয়ালার চাপ আছে, হবে না।' সেই ওপরওয়ালার থাকে আরও এক উপরওয়ালা। এই ভাবে ব্যাপারটা চলতে থাকে, একদম উপরে কে আছেন তাহলে? এই প্রশ্নগুলো করাও দরকার। কিন্তু এই প্রশ্নগুলো কেউ করেন না।

এক্ষেত্রে উপায়! এই ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে কীভাবে রুখে দাঁড়ানো উচিত বলে আপনি মনে করেন?

স্বস্তিকা: এই ধরনের ঘটনার বিপক্ষে রুখে দাঁড়াতে গেলে গোষ্ঠীবদ্ধ হয়ে, গলা ফাটিয়ে চিৎকার করতে হবে। কারণ কারুর একার পক্ষে তো পুরোটা সম্ভব নয়। কারণ একা একটা মানুষ কত দিন চিৎকার করবেন? কেউ না কেউ তাঁর মুখটা ঠিক বন্ধ করে দেবেন। কিন্তু একসঙ্গে যদি সকলে মিলে প্রতিবাদ করেন, তাহলে একটা ফল পাওয়া যেতে পারে। আসলে আমরা এত ব্যক্তি কেন্দ্রিক হয়ে গিয়েছি যে গোষ্ঠীবদ্ধ ব্যাপারটা বা সেটার যে ইমোশনটা সেটাই কোথাও গিয়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে।

পাশের বাড়ির তিন তলায় কে থাকেন আমি জানিনা, কারণ সবটা এখন আমি সর্বস্ব। কেউ বিপদে পড়লে এখন আমারা এগিয়ে যাই না সাহস করে, পাছে নিজেকে থানা-পুলিশ-কোর্টের ঝামেলায় জড়াতে হয়। কিন্তু কেউ নিজে যখন বিপদে পড়ে, তখন তাঁর ঘুমটা ভাঙে। তাই লোকে কী বলবে এই জায়গাগুলো থেকে বেরিয়ে এসে কথা বলতে হবে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে।

এই প্রতিবাদের ক্ষেত্রে কি তারকাদের একটু বাড়তি সুবিধা থাকে?

স্বস্তিকা: শুধু তারকাদের ক্ষেত্রে আমি বলবো না, যদি চেনার বৃত্তটা অনেক বড় হয় সেক্ষেত্রে যে কোনও কাজই করাটা সহজ হয়। আমি মনে করি আমার লোকজনের সঙ্গে যে পরিচিতি রয়েছে, তার থেকে অনেক বেশি চেনা জানা রয়েছে কলকাতা শহরে বড় বড় ডাক্তারদের আবার রিয়েল এস্টেড ব্যবসায়ীদের তো গভমেন্টের প্রত্যেকটা স্তরে স্তরে পরিচিত লোকজন আছে। সিনেমা কাজ করলেই যে অনেক মানুষ-জনের সঙ্গে পরিচিতি থাকে সেটা কিন্তু নয়। মানুষ আমাকে চেনেন, কিন্তু আমি কটা লোককে চিনি সেটা তো গুরুত্বপূর্ণ। পার্থক্যটা এটাই যে হয়তো একজন তারকা হিসেবে আমাকে দু'টো সিঁড়ি চড়তে হবে, অন্য কোনও সাধারণ মানুষকে হয়তো দশটা ধাপ।

বায়োস্কোপ খবর

Latest News

কফি ভালোবাসেন? তাহলে ট্রাই করুন এই নতুনত্ব কফি ককটেলগুলি নিজের রাশির সঙ্গে মিলবে কোন রাশির? জেনে নিন টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত দক্ষিণবঙ্গ, বাড়ছে বন্যার আশঙ্কা 'বৃষ্টি আরো জোরে আয় তিলোত্তমার বিচার চায়'. বর্ষণ উপেক্ষা করেই শুরু প্রতিবাদ প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপেক্ষা করে প্রতিবাদ, স্বস্তিকা লিখলেন,'বৃষ্টি আরো জোরে আয়..' ‘আমরা ফেভারিট,তাই টেনশন আমাদের নয়,ওদের’…বর্ডার গাভাসকর ট্রফির আগে হুঙ্কার শামির… ইডলি বেঁচে গিয়েছে? সেগুলি দিয়ে বানিয়ে ফেলুন এই দারুণ পদগুলি, রইল রেসিপি জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি নয়, চিকিৎসায় গাফিলতিতে মৃত্যু,ক্ষতিপূরণ ফেরাল পরিবার ২৪ ঘণ্টায় শক্তি হারাবে নিম্নচাপ, এগোচ্ছে কোনদিকে? পূর্বাভাস একনজরে মোদক খেয়ে এবার ক্যালোরিবার্ন করতে হবে? কী বলছেন দীপিকা পাড়ুকোনের ট্রেনার স্বয়ং

Copyright © 2024 HT Digital Streams Limited. All RightsReserved.