‘আলো ছায়া’ ধারাবাহিকের সেটে শুরু হয়েছি অর্ণব-ইপ্সিতার প্রেমের কাহিনি। অনস্ক্রিন দেওর-বউদি থেকে অফস্ক্রিন জুটি। ২০২২ সালের গোড়াতেই বাগদান ও আইনি বিয়ে সারেন দুজনে। মাঝে দুজনের সম্পর্কে তৈরি হয়েছিল দূরত্ব। তাই ২০২২-এর ডিসেম্বরে সামাজিক বিয়ের কথা পাকা থাকলেও তা পরিণতি পাইনি।
এরপর দূরত্ব মিটিয়ে ফের কাছাকাছি এসেছিলেন তাঁরা। কিন্তু তারপরেও একসঙ্গে পথচলা হল না। টেলিপাড়ায় বেশ কয়েকদিন ধরেই দুজনের বিচ্ছেদের গুঞ্জন ডানা মেলেছিল। শুক্রবার আলাদা হওয়ার কথা জানান অর্ণব। বলেন, ইতিমধ্যেই ডিভোর্স ফাইল করেছেন দুজনে। অর্ণবের সঙ্গে বিচ্ছেদ থেকে নিজেকে ভালোবাসার জার্নি নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার সামনে মনের ঝাঁপি খুললেন ইপ্সিতা।
ডিভোর্স প্রসঙ্গে অভিনেত্রী জানান, ‘আমরা অনেকদিন ধরেই সেপারেশনে আছি। ডিভোর্সের প্রক্রিয়া চলছে। আমাদের তো সামাজিক বিয়ে হয়নি, রেজিস্ট্রি হয়েছিল। সেইমতো আমাদের মিউচুয়াল ডিভোর্স হচ্ছে, জীবনে এইরকম অনেক কিছুই ঘটে (দীর্ঘশ্বাস)। ওর ভালো চাই। অর্ণব ভালো থাকুক’।
সদ্যই জল থই থই ভালোবাসাতে দেওর-বৌদির চরিত্রে দর্শক দেখেছে অর্ণব-ইপ্সিতাকে। প্রাক্তন ফের অর্ণবের সঙ্গে কাজ করবেন? কোজাগরীর বড় বউমা বলেন, ‘জল থই থই ভালোবাসাতে কাজ করার সময়ই আমাদের সেপারেশনটা হয়। সেটা আগে হলে হয়ত আমি একসঙ্গে কাজ করতাম না। আমার কাছে কাজ সবার আগে। ওয়ার্ক কমিটমেন্টে ব্যক্তিগত জীবনের প্রভাব পড়ুক সেটা আমি চাই না। অনেক অসুবিধা হলেও, মানসিকভাবে অনেক কষ্ট হলেও কাজের জায়গাটায় কাউকে বুঝতে দিইনি। কাজের জায়গায় একইরকমভাবে থেকেছি। বিচ্ছেদটা আমাদের ব্যক্তিগত বিষয়, কিন্তু সিরিয়ালটা তো চলছে, তাই শো মাস্ট গো অন। আমার জন্য খুব ডিফিকাল্ট ছিল। এই মুহূর্তে যদি কোনও অফার আসে, (একসঙ্গে কাজের) আমি জানি না… সত্যি জানি না’।
ভালোবেসে পরস্পরের হাত ধরেছিলেন। কেন এই বিচ্ছেদ? ইপ্সিতার কথায়, 'এটা খুব পার্সোনাল এবং সংবেদনশীল বিষয়… খারাপ-ভালো যাই হোক, দুটো মানুষ যখন সম্পর্কে থাকে তখন ভাঙবে বলে তো কেউ গড়ে না। সেখানে দুটো মানুষ একসঙ্গে সম্পর্ক গড়তে না চাইলে সম্পর্কটা টেকেও না। কিছু মানুষের সিদ্ধান্ত কিছু মানুষকে মানতে হয়, কিছু মানুষের অসুবিধা কিছু মানুষকে মানতে হয়। জোর করে সম্পর্ক টেকানো যায় না। আমি টেকানোর অনেক চেষ্টা করেছিলাম। সেটা যখন হচ্ছে না, বেকার সেটা নিয়ে নাড়াচাড়া করে, কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করে, সমস্যার কথা বলা, খারাপ লাগার কথা বলার আজ আর কোনও মানে নেই। আমি অনেক কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গেছি।
এই স্টেট অফ মাইন্ডে আসতে আমাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। আজকে বিচ্ছেদ নিয়ে বেশি কথা বললে আমার সেই মানসিক পরিস্থিতিটা হয়ত নষ্ট হতে পারে। আমি সত্যি কথা বলতে চাই না। যে যেরকমভাবে ভালো থাকে, ভালো থাকুক। আমি চাই অর্ণব ভালো থাকুক।'
আপতত নিজের কেরিয়ারই মূল ফোকাস ইপ্সিতার। বললেন, ‘আমি অনেক ওঠাপড়ার মধ্যে দিয়ে গেলাম গত দেড় বছর ধরে। এবার আমার গোটা ফোকাস আমার কেরিয়ার। আরও বড় জায়গায় যেতে চাই। ঠিকঠাক কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে, এবার একটু বেছে কাজ করতে চাই। নিজেকে আপগ্রেড করতে চাই। এতকিছুর পর আমি উপলব্ধি করেছি নিজেকে প্রায়োরিটি না দিলে খুব মুশকিল। তুমি যখন নিজের চেয়ে অন্য কাউকে বেশি গুরুত্ব দেবে তখন তাঁর মতো তোমার জীবনটা চলতে থাকবে। এতে কী হবে তোমার নিজের সঙ্গে নিজের দূরত্ব তৈরি হবে। এখন নিজেকে ভালোবাসছি, নিজেকে আরও সুন্দর করার চেষ্টা করছি। কাজে ফোকাস করছি। যে মানুষগুলো আমার সঙ্গে থাকতে চায়, তাঁদের সঙ্গে একটা সুন্দর সংসার গুছিয়ে আমি ভালো থাকতে চাইছি। এইটুকুই চাওয়া।’