তাঁর বাঁকা ঠোঁটের হাসি আজও মন কেড়ে নেয় আপামর বাঙালির। ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালে থমকে যায় সময়, তিনি বাঙালির মহানায়িকা, তিনি সুচিত্রা সেন। তাঁর কোনও তুলনা হয় না, তবে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে এক ছবি। সেই হাসি, সেই চাউনি দেখে কয়েক পলকের জন্য থমকে যেতে হয়েছে নিজের ফেসবুক ফিডে।
সুচিত্রা সেনের পর তাঁর লুকে বাঙালিকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছেন মহানায়িকার নিজের রক্ত, তাঁর নাতনি রাইমা সেন এবং অভিনেত্রী পাওলি দাম। তবে যে ছবি ঘিরে এত আলোচনা, সেই ছবিটি কার চিনতে পেরেছেন? এই ছবি জি বাংলার রাইপূর্ণার অর্থাৎ অভিনেত্রী আরাত্রিকা মাইতির। দিন কয়েক আগে নিজের ফেসবুকে এই ছবি শেয়ার করেছিলেন অভিনেত্রী। ক্যাপশনে লিখেছিলেন, ‘এমনি’।
এমনি এমনি এই ছবি এমন ভাইরাল হবে তা ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি নায়িকা। সোমবার রাতে এই ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে নেন পরিচালক রাজর্ষি দে। সঙ্গে লেখেন, ‘এই হাসিতেই শান্তি’। পরিচালক পোস্ট দেখেও অনেকেই বিচলিত। এই ছবির রহস্য জানতে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল আরাত্রিকার সঙ্গে। মিঠিঝোরার সেট থেকেই ফোন ধরলেন। আরাত্রিকা জানালেন, ‘বিশ্বাস করো আমি ভাবিনি ছবিটা এইরকমভাবে সবার মনে দাগ কাটবে। বিশেষ কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে ছবিটা তুলিনি। এটা কোনও শ্যুটের ছবি নয়। আলাদা করে মেকআপ করিনি। মিঠিঝোরার শ্যুটিং থেকে ফিরে, এমনি বাড়িতে একটু রেট্রো স্টাইলে চোখ এঁকেছিলাম। এরপর নিজের ফোনের ক্যামেরাতে সেলফিটা তুলেছি’।
অভিনেত্রী জানালেন, স্বর্ণযুগের বাংলা ছবির নায়িকাদের লুক তাঁর খুব পছন্দ। সেই কারণে সাদাকালো ছবি তুলতে ভালোবাসেন তিনি। সঙ্গে জানাতে ভুললেন না পুরোনো দিনের বাংলা ছবি দেখেন বলেই তিনি সেই নিয়ে খুব দ্বিগজ এমনটা নন। আরাত্রিকার কথায়, ‘আমি কায়দাবাজি করে ছবিটা তুলেছিলাম। এমন সাড়া পাব ভাবিনি’।
সুচিত্রা সেনের সব ছবিই আরাত্রিকার খুব প্রিয়। আলাদা করে বলেলন, ‘দেওয়া-নেওয়া, সপ্তপদী বহুবার দেখেছি। রিনা ব্রাউন চরিত্রটা আমার ফেভারিট। বাকি আমি তো নগণ্য, ওঁনাকে নিয়ে কী আর বলব’।
রাজর্ষি দে তাঁর ছবি শেয়ার করেছেন, সেই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে আরাত্রিকা বললেন, 'আমি ভেবেছি ভুল করে আমার ছবি শেয়ার করে ফেলেছেন রাজর্ষিদা। কাল রাত ২টোর সময় আমাকে শ্রুতিদি (দাস) মেসেজ করেছে। ওই পোস্টটার লিঙ্ক আর স্ক্রিনশট পাঠিয়ে আমাকে বলছে, দেখ রাজর্ষিদা তোর ছবিটা পোস্ট করেছে। আমি তো কমেন্টে গিয়ে লিখছি- এটা তো আমার ছবি'। জবাবে পরিচালক জানিয়েছেন, ‘এই হাসি যার, ছবি তো পৃথিবীর’।
ভবিষ্যতে যদি কখনও পর্দায় সুচিত্রা সেনের চরিত্রে অভিনয়ের অফার আসে? লুফে নেবেন? প্রশ্ন শুনেই আকাশ থেকে পড়লেন আরাত্রিকা। জবাব, ‘প্রত্যেক অভিনেত্রীর কাছে এটা বিরাট একটা আর্শীবাদ। সঙ্গে বিরাট বড় চ্যালেঞ্জও পর্দায় মহানায়িকার চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলা। সম্প্রতি দর্শনাদি (বণিক) যমালয়ে জীবন্ত ভানু-তে সুচিত্রা সেনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। যে-কেউই এই সুযোগ পাক না কেন, মহানায়িকার চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলা বীভৎস বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ আমরা কেউ ওঁনার নখতুল্য নই। তবে নিঃসন্দেহে চেষ্টা করব যদি ওঁনার ১% পর্দায় তুলে আনা যায়’।