আরজি কর কাণ্ড নিয়ে পথে নেমেছে গোটা বাংলা। প্রতিবাদে সামিল টলিপাড়ার পরিচিত মুখেরাও। আরজি কর ইস্যুতে নানা সময়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে চর্চায় উঠে এসেছেন কুণাল ঘোষ, পিছিয়ে থাকেননি তৃণমূলের যুবনেতা দেবাংশু ভট্টাচার্যও। আর সপ্তাহের শুরুতে নতুন বিতর্কে তৃণমূলের দুই নেতা। নেপথ্যে অভিনেত্রী মৌসুমী ভট্টাচার্যের একটি সাক্ষাৎকার। আরও পড়ুন-আরজি কর নিয়ে মুখ খোলায় কুণাল-দেবাংশুর যৌথ আক্রমণ টলি অভিনেত্রীকে! একজন বানাল বৌমা,অন্য জন ‘দজ্জাল’
'পাবলিক যেদিন হাতে পাবে, সেদিন ওদের কে বাঁচাবে আমি দেখব… মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু ওদের বাঁচাতে আসবে না', কুণাল ঘোষ ও দেবাংশু ভট্টাচার্যকে নিয়ে মৌসুমীর এই বক্তব্য নিয়ে যাবতীয় বিতর্কের সূত্রপাত। সোশ্য়াল মিডিয়ায় খোলাখুলি মৌসুমীকে ব্যক্তিগত আক্রমণ শানিয়েছেন শাসক দলের দুই নেতা। দেবাংশু মৌসুমীর পেশা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তাঁকে বডি শেমিং পর্যন্ত করেন। কুণালের তরফে আসা বিয়ের প্রস্তাবের পালটা লেখেন, ‘বড় দজ্জাল মনে হচ্ছে…. সিরিয়ালে কাজ নেই। বদন বিগড়ে গেছে। ডাক্তারদের আন্দোলনে বিরিয়ানি খেতে গেছে। আমাদের নাম নিয়ে একটু ফুটেজও খাক।’
এই মর্মে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল মৌসুমীর সঙ্গে। ফোনের ওপার থেকে মৌসুমী জানালেন, ‘উনি (দেবাংশু) পোস্ট করছেন, এডিট করছেন। মনে হচ্ছে উনি নিজের লেখা দেখে নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আমি কিন্তু কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করিনি। আমরা সবসময় ডাক্তারদের পাশে আছি। আমি অভিনেত্রী, সেলিব্রিটি এই সবের উর্ধ্বে গিয়ে বলছি আমি একজন সাধারণ মানুষ। এবং বাংলার আম জনতা হিসাবেই ডাক্তারদের পাশে রয়েছি, রোজ ওদের আন্দোলন মঞ্চে যাচ্ছি, ধরনাতে আছি। প্রতিদিন সেখানে সংবাদমাধ্যমকর্মীরা আমার থেকে জানতে চায়, দেবাংশু এই বললেন, কুণাল ঘোষ ওই বললেন…আপনি এটা নিয়ে কী বলতে চান? আমি তো সেটার উত্তর দিয়েছি মাত্র। আমি যা বলেছি, সেটা ভুল নয়। আমি কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করিনি। বডি শেমিং করিনি। খুব সাধারণ দুটো-তিনটে কথা বলেছি’।
দেবাংশুর তরফে ধেয়ে আসা ব্যক্তিগত আক্রমণের কী জবাব দেবেন মৌসুমী? মুচকি হেসে তাঁর জবাব,'আমি সকালেই পোস্টটা দেখেছি। আমার একটাই বক্তব্য, আমি ওদের লেভেলে নামতে পারব না। ওই ভাষা ব্যবহার করতে পারব না, ওদের বিরুদ্ধে একটা কথাও বলব না। কারণ আমি তো একটা শিক্ষিত পরিবারের মেয়ে। ওটা আমার কালচার নয়, ওটা আমার শিক্ষা নয়। আমার একটা মানসম্মান আছে। আমি ওদের এইসব লেখাতে আমি একটা বক্তব্যও রাখব না। কারণ জনসাধারণ আছে। আমার বলার কিচ্ছু নেই। আমি শিক্ষিত মানুষ, বুদ্ধিমতী। সেখানে জবাব দেওয়ার আমি ঠিক দিয়ে দেব'।
এই বিষয়ে,কী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা ভাবছেন মৌসুমী? অভিনেত্রী জানালেন, ‘দেখি একটু ভাবনা-চিন্তা করি। আলোচনা করে তারপর সিদ্ধান্ত নেব’।
নারী-সুরক্ষা, নারী-স্বাধীনতা নিয়ে এত আন্দোলন। সে জায়গায় শাসক দলের দুই নেতার তরফে মৌসুমীর দিকে ধেয়ে এসেছে কদর্য আক্রমণ। আক্ষেপের সুরে অভিনেত্রী বললেন, 'সরকারের লোক হয়ে যদি মেয়েদের নিয়ে এই ভাবনা হয়, তাহলে শুধুই বলব এটা ওদের শিক্ষা। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এইটুকুই বলতে চাইব এই লোকগুলোর জন্য আপনি বদনাম হচ্ছেন। কই মুখ্যমন্ত্রী তো এই ভাষায় কথা বলেন না। রাগের মাথাতেও উনি কাউকে এই ভাষায় আক্রমণ করেননি। ওঁনার অধীনে থাকা এই সব ক্যারেক্টারগুলোর জন্য, যারা মেয়েদের সম্মান রাখতে পারে না। কী ভাষা! আমাকে বডি শেমিং করেছে। মুখ্যমন্ত্রীর উচিত এই লোকগুলোকে দল থেকে বার করে দেওয়া। একটু ভাবুন। এবার ভাবা উচিত'।
মৌসুমীকে দর্শক শেষ ছোটপর্দায় দেখেছেন ‘মন দিতে চাই’, ‘বিয়ের ফুল’ এই দুই সিরিয়ালে। আপতত ছোটপর্দা থেকে দূরে, পুজোর পর ফিরবেন নতুন কাজে।