বহুদিন হল ‘নিম ফুলের মধু’ থেকে উধাও 'ছোটকা'। তিনি কোথায় গেলেন, তা নিয়ে দর্শকদের আগ্রহের অন্ত নেই। তবে এরই মাঝে ৮ই নভেম্বর, শুক্রবার হঠাৎ সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা মেলে 'ছোটকা' অর্থাৎ অভিনেতা প্রসূণ গায়েনের। তাঁকে দেখে একপ্রকার আঁতকে উঠেছিলেন অনুরাগীরা। একী চেহারা হয়েছে তাঁর!
উসকো-খুসকো চুল, গাল ভর্তি দাড়ি শরীর এক্কেবারেই ভেঙে গিয়েছে। শীর্ণকায়! পরনে কিছুটা মলিন সাদা স্যান্ডো গোঞ্জি, ধূসর রঙের পুরনো একটা ট্রাউজার। এ কেমন হাল অভিনেতার? হঠাৎ কী হল প্রসূণের।
নাহ তবে চিন্তার কারণ নেই, অভিনেতা পোস্টের ক্যাপশান পড়লেই বেশ বোঝা যায়, চরিত্রের প্রয়োজনেই নিজেকে এভাবে ভাঙছেন, বদলে ফেলছেন প্রসূণ। যদিও লোকজনের তা নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। অভিনেতা তাই ক্যাপশানে লেখেন, ‘পাড়া থেকে প্রতিবেশী... শেষ ছয় মাসে, সবাই যখন আমাকে বলেছে, চেহারাটা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। নিজের যত্ন নে। কাউকেই বোঝাতে পারিনি, আমি একজন অভিনেতা । চরিত্রের প্রয়োজনে আমাদের অনেক কিছু করতে হয়। আর বোঝাতে পারিনি,আমি যত্ন নিচ্ছি, তবে নিজের নয় - চরিত্রের (DEB)।’ তাও যদি হিন্দি ছবি হয়। ক্রমশঃ প্রকাশ্য।' নাহ, এর নিজের পোস্টে বেশি কিছুই খোলসা করেননি অভিনেতা।
তবে ব্যাপারটা ঠিক কী?
একথা জানতেই Hindustan Times Bangla-র তরফে যোগাযোগ করা হয়ে অভিনেতা প্রসূণ গায়েনের সঙ্গে। প্রশ্ন করতেই তিনি আমাদের বলেন, ‘বেশিকিছু বলতে পারব না এখনই। তবু বলছি, এটা হল শিলাদিত্য মৌলিকের নতুন ছবি। ও সম্প্রতি সূর্য-ছবিটা করল, ওখানে আমার কাজ ওঁর ভালো লাগে। তখনই এই ছবিটির প্রস্তাব দেয়। এটা একটা হিন্দি ছবি। বোম্বে থেকেই আমায় ফোন করেছিল। অডিশন পাঠাই। এটা প্রায় ৮ মাস আগের কথা বলছি। (তখন আমি নিম ফুলের মধু করছি) এরপর সিলেক্ট হই। তবে যেহেতু হিন্দি ছবি, তাই একটু দ্বিধায় ছিলেন, তবে এখানে পরিচালক শিলাদিত্য মৌলিক আমায় ভীষণ গাইড করেছেন। এরপর থেকেই চরিত্রের জন্য আমি নিজেকে ভাঙতে শুরু করি। ছবিটার নাম হল চড়ক। আর আমার চরিত্রের নাম দেব। চড়কের উপরই ছবি। এই ছবির প্রযোজক হলেন, দ্য কেরালা স্টোরির প্রযোজক সুদীপ্ত সেন।’
প্রসূণ গায়েন বলেন, ‘চড়ক তো একটা আঞ্চলিক প্রথা, উৎসব। আর এই গল্পটা পুরুলিয়া-ঝড়খণ্ড এলাকার প্রত্যন্ত গ্রামের একটা গল্প। এরবেশি গল্পটা নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না, তাহলে অনেক কিছু বলা হয়ে যাবে। গল্প নিয়ে এই টুকুই বলব। তবে গল্পটা এক্কেবারেই অন্যরকম গল্প, আর আমার চরিত্রটি কেন্দ্রীয় চরিত্রের মধ্যে একটা। পুরোটাই হচ্ছে হিন্দিতে।
আমাকে এটার জন্য ভীষণ হোমওয়ার্ক করতে হয়েছে। তবে আমি এক্ষেত্রে শিলাদিত্য মৌলিক-এর কাছে কৃতজ্ঞ। আমার এই চরিত্রটি করার পিছনে সবথেকে বেশি যাঁর অবদান রয়েছে, সেটা শিলাদিত্যদার। আমাকে ধরে ধরে উনি গ্রুমিং করিয়েছেন। হিন্দি উচ্চারণ, শব্দ নিয়ে উনি আমায় বিভিন্ন ভাবে প্র্যাকটিস করিয়েছেন দিনের পর দিন। আমি ওনার ফ্যান হয়ে গিয়েছি। এছাড়াও সুব্রত দত্ত, শশীভূষণজি আমায় অনেক সাহায্য করেছেন। '
প্রসূণ জানান, ‘এই ছবিতে মুম্বইয়ের অভিনেতারাই মূলত রয়েছেন। যার মধ্যে বাঙালি অভিনেতা সুব্রত দত্ত রয়েছেন। এছাড়াও কলকাতার গোটা কয়েক বাঙালি অভিনেতা রয়েছেন, যেমন কৌশিক কর, প্রদীপ ধর, শাহিদুর রহমান, দীপঙ্কর মুখোপাধ্যায়। তবে বাকিরা বোম্বের। শ্যুটিং হয়ে গিয়েছে। খুব ভালো কাজ হয়েছে। শাহিদুর রহমান আমার অনেক পুরনো বন্ধু, ওর সঙ্গে ১৮ বছর পর একসঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করছি। এটা আনন্দের।’
প্রসূণ বলেন, 'এটাকে অনেকে আমার বলিউড ফিল্ম বলছেন, তবে এর আগে আমি সুশান্ত সিং রাজপুত-এর সঙ্গে 'ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বক্সী'তে কাজ করেছিলাম, যদিও ছবিতে আমায় দেখা যায়নি। কারণ, সেই চরিত্রটি কেটে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়।'
আর সিরিয়ালে আর দেখা যাবে? 'অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়ের একটি টিভি সিরিজ করছি, 'দেবী নিয়ে কাণ্ড হেবি। ১০০ এপিসোডের সিরিজ।'