‘মা কালী’ আসছে। রাইমা সেন অভিনীত এই ছবি তুলে ধরবে স্বাধীনতার আগে এই বাংলায় বাঙালিদের উপর চলা মর্মান্তিক সাম্প্রদায়িক হিংসার কথা। ১৯৪৬ সালের ১৬ অগস্ট ঘটে যাওয়া সেই ইতিহাস ‘ক্যালকাটা কিলিংস’ নামে পরিচিত। সেই ছবিই উঠে আসবে রাইমার ছবিতে। ‘মা কালী’ মুক্তির আগে ছবি সহ নানান কথা Hindustan Times Bangla-র সঙ্গে ভাগ করে নিলেন রাইমা সেন।
‘মা কালী’র টিজারে যা দেখা যাচ্ছে তা সাম্প্রদায়িক হিংসার ছবি, এমন একটা ছবি করতে কেন রাজি হলেন?
রাইমা: এটা স্বাধীনতার আগের একটা গল্প। যে সময়ে বাঙালিদের দুর্ভোগ, একজন বাঙালি হিসেবে তুলে ধরা আমার নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করি। আমি যখন চিত্রনাট্য হাতে পেয়েছিলাম এবং পড়েছিলাম তখন আমি নিজেও অবাক হয়ে যাই। সত্যিই আমারও জানা ছিল না, যে এত কিছু ঘটেছে। সেই ইতিহাস নিয়ে বর্তমান প্রজন্মেরও কোনও ধারণা নেই।
ধর্ম নিয়ে হিংসা, কেউ কেউ এটাকে 'প্রোপাগান্ডা ছবি'র তকমা দিচ্ছেন, কী বলবেন?
রাইমা: এটা কোন ধর্মের কথা নয়, এটা বাঙালির কথা। মানুষ ইতিহাসকেও আজ অপপ্রচার হিসেবে দেখছে এটা জেনে সত্যিই দুঃখ হয়। এই ছবির সবটাই কিন্তু বাস্তব। ইতিহাস থেকে নথি নিয়েই এই ছবি বানানো হয়েছে।
মা কালী’র পোস্টার মুক্তির পর আপনি হুমকি ফোন পেয়েছেন। আর এবার টিজার রিলিজ হল, আবার এমন কিছু ঘটতে পারে, বা নতুন বিতর্ক হতে পারে ভেবে ভয় করেনি?
রাইমা: যখন আমি ছবিটি করব বলে ঠিক করেছিলাম, তখনই জানতাম যে এগুলো আমার সঙ্গে ঘটবে। সব জেনেই ছবিতে সই করি। তাই আমি এই বিষয়টা নিয়ে বিশেষ চিন্তিত নই। আসলে আমি গর্বিত, যে একজন বাঙালি হিসেবে আমি এই ছবিতে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি।
আরও পড়ুন-সামনেই উচ্চমাধ্যমিক, পড়াশোনা ও অভিনয় দুটো কীভাবে সামলাচ্ছেন ঐশানী?
মা কালী-র শ্যুটিংয়ের সময় এমন কোনও ঘটনা ঘটেছে যেটা আপনার মনে দাগ কেটেছে। শ্যুটিং করার সময় কোনও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন?
রাইমা: অনেক ঘটনা আছে। তবে সেবিষয়গুলি নিয়ে এখনই কথা বললে তাড়াহুড়ো হয়ে যাবে। পরে একদিন নিশ্চয় বলব।
অনন্ত আম্বানি-রাধিকা মার্চেন্টের রিসেপশনে আপনিও আমন্ত্রিত, কীভাবে সাজবেন বলে ভেবেছেন?
রাইমা: বিয়েতে মায়ের (মুনমুন সেন) শাড়ি পরে যাব বলে ঠিক করেছি।
বাংলা নাকি হিন্দি কোন ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য়বোধ করেন?
রাইমা: শুধু বাংলা বা হিন্দি নয়, মালায়ালম, তেলুগু, তামিল ছবিতেও কাজ করেছি। সব ভাষার ছবি ও ইন্ডাস্ট্রিতেই কাজ করতে ভালো লেগেছে। এক একটা ইন্ডাস্ট্রি আমায় অনেক কিছু শিখিয়েছে। অভিনেত্রী হিসাবে পরিণত করেছে।
আপনি নিঃসন্দেহে দক্ষ, যোগ্য অভিনেত্রী, তবু ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ পাওয়া নিয়ে কোনও আফসোস আছে?
রাইমা: সিনেমায় অভিনয়ের ক্ষেত্রে আমার আলাদা করে কোনও ব্যক্তিগত পছন্দ নেই। অভিনয় নিয়ে আমার কোনও আফসোসও নেই। আমি জীবনে কিছু সেরা পরিচালক, অভিনেতা এবং প্রযোজকের সঙ্গে কাজ করেছি। বরং আমি যে ধরনের ছবি বা চরিত্রে কাজ করেছি সেজন্য আমি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করি। যে চরিত্রগুলিতে কাজ করেছি, তাতে আমি মানানসই , সেটা ভালোলাগার। এখনও আমি অনেক ভালো ভালো কাজের প্রস্তাব পাচ্ছি।
কাজ ছাড়া অবসরে কীভাবে সময় কাটাতে পছন্দ করেন?
রাইমা: ছুটি কাটাতে চলে যাই। আবার কখনও আমার বোন (রিয়া সেন) বা পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গে সময় কাটাই। বই পড়ি এবং নিজেকে আপডেট রাখি। নিজেকে নতুন ভাবে অনুপ্রাণিত করতে আমি অনেকসময় নতুন কোনও কোর্স করি বা নতুন কিছু শিখি। আর অনেক সিনেমা দেখি। এইভাবেই কাটে…।
অভিনয় আপনার রক্তে, এছাড়া, আর কোনও গোপন প্রতিভা আছে? যা এখনও অনেকেই জানেন না…
রাইমা: গোপন প্রতিভা নাহয় গোপনই থাক (হাসি)। আমি চাই মানুষ আমায় অভিনেত্রী হিসাবেই মনে রাখুক।
অনেকেই বলেন আপনাকে অনেকটা আপনার দিদার মতো দেখতে, কী বলবেন?
রাইমা: আমি গর্বিত। এটা আমার কাছে অনেক বড় পাওনা, অনেক বড় একটা প্রশংসা বলতে পারেন।
দিদি সুচিত্রা সেনের কাছে পাওয়া এমন কোনও পরামর্শ, যা আপনি আপনার স্মৃতির পাতায় যত্ন করে রেখে দিয়েছেন?
রাইমা: আমার দিদা আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছেন। আর সেটা শুধু সিনেমার আইকন হিসেবে নয়, আমার দিদা হিসাবেও। মূল্যবোধ, সময়ানুবর্তিতা, আমার দিদার থেকেই শেখা।