বাংলা টেলিভিশনের অন্যতম পরিচিত মুখ রাজা গোস্বামী। বর্তমানে টিআরপি টপার মেগায় দেখা মিলছে তাঁর। গল্পের দ্বিতীয় হিরো হিসাবে এন্ট্রি নিয়েছেন রাজা। একদিকে যখন নিজের স্মৃতি হারিয়েছে পর্ণা, তখনই গল্পে নতুন নায়ক। সিরিয়ালে পর্ণার বস অভিমন্যুর চরিত্রে দেখা মিলছে তাঁর।
এই সিরিয়ালে গ্রে শেডের চরিত্রে অভিনয় করছেন রাজা। যে কোনও মূল্যে আলোকপর্ণাকে নিজের কাছে রাখতে চায় সে। তাই আলোকপর্ণার লড়াইয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে অভিমন্যু। রাজার কথায়, ‘আমার নেগেটিভ শেডস করার অনেক দিন ধরেই ইচ্ছে ছিল। নিম ফুল বর্তমানের অন্যতম জনপ্রিয় শো, যে কোনও শিল্পীই চায় তাঁর কাজটা যত বেশি সম্ভব মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে। সে জায়গা থেকে এটা আমার কাছে বড় প্রাপ্তি। চরিত্রটা খুব এক্সাইটিং, আমি কাজটা দারুণ এনজয় করছি’।
তবে রাজা এই প্রথম নেগেটিভ চরিত্র করছেন এমনটা নয়। জি বাংলায় এর আগে ‘ছদ্মবেশী’ সিরিয়ালে একইসঙ্গে হিরো এবং ভিলেনের ভূমিকা দেখা মিলেছিল তাঁর। এর পাশাপাশি ‘ইরাবতীর চুপকথা’য় নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাজা। অভিনেতা বললেন, ‘যেটুকুই স্ক্রিনটাইম থাকুক না কেন, চরিত্রটা যদি এতটা পাওয়ারফুল হয় যে দর্শকদের মনে দাগ কাটতে পারে, তাহলে আর কী চাই! সাংবাদিকের চরিত্র আমি আগে কখনও করিনি, সেটা একটা লোভ ছিল। অভিমন্যুর চরিত্র সেটা পূরণ করে দিল।’
সৃজন-পর্ণার গল্পে তৃতীয় ব্যক্তি হয়ে প্রবেশ করেছেন রাজা। সাইড হিরোর ভূমিকায় অভিনয় নিয়ে ছুৎমার্গ নেই ভালোবাসা ডট কমের মতো হিট মেগার নায়কের? রাজার জবাব, 'আমি জীবনে প্রথম কাজ যখন শুরু করি সেটা হিরোর বন্ধুর চরিত্র ছিল, চ্যাম্পিয়ান। আমি কোনও চরিত্রকে ফার্স্ট লিড, সেকেন্ড লিড হিসাবে দেখি না। আমার একমাত্র চাওয়া থাকে যে আমি যে চরিত্রটা করছি সেটা জানো মানুষ মনে রাখে, ধরো শোলে ছবির প্রত্যেকটা চরিত্র দর্শক মনে রেখেছে। আবার অনেক সিনেমার হিরোর পুরো নামও লোকে বলতে পারে না। তাই আমি কোনও প্রোজেক্টের পোস্টার বয় হলাম কিনা সেটা ম্যাটার করে না'।

আজকাল বেশিরভাগ মেগা সিরিয়াল এক বছরের গণ্ডি পার করতে পারছে না। কিছু কিছু মেগা তো ২-৩ মাসেও বন্ধ হচ্ছে। অভিনেতা হিসাবে এটা কতটা চাপে রাখে ‘ফ্যামিলিম্যান’ রাজাকে? স্মৃতি হাতড়ে অভিনেতার জবাব, ‘২০০৯-১০ সালে আমরা যখন কাজ শুরু করেছিলাম, একটা সিরিয়াল ৫০০ পর্ব ছুঁলে কেক কাটা হত। এখন তো দেখি ১০০ এপিসোডেই কেক কাটা হচ্ছে, কারণ সিরিয়ালটা ২০০ এপিসোড যাবে কিনা কেউ জানে না। এটা এলার্মিং জায়গা’।
তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্য অভিজ্ঞ রাজার বার্তা, ‘অভিনেতা হিসাবে যাঁরা আমার জুনিয়র তাঁদের বলব, অভিনয়টা তো প্যাশন অবশ্যই ফলো করা উচিত। তার পাশাপাশি অন্য কোনও রাস্তাও দেখা উচিত, সেটা ব্যবসা হতে পারে কিংবা অন্য কিছু। তাহলে সে অনিশ্চয়তা থেকে অনেকটা মুক্তি পাবে। মানুষ নাম করলে তাঁর খরচ বাড়ে, কারণ তাঁর লাইফস্টাইল বদলে যায়। যখন মেগা তাড়াতাড়ি বন্ধ হয়ে যায়, সেটা অভিনেতার পক্ষে খুব মুশকিলজনক। এর জন্য অনেকটা দায়ী মোবাইল, ওটিটি। সিনেমাতেও এর প্রভাব পড়ছে। কিন্তু কিছু করার তো নেই, চেঞ্জ ইজ দ্য অনলি কনস্টান্ট। পরিবর্তন তো ঘটবেই। এখন দর্শকদের স্বাদ বদলেছে, তাদের কথা ভেবে যত গল্প লেখা হবে সিরিয়াল তত বেশি চলবে বলে আমার মনে হয়’।