৩রা অক্টোবর সাত পাকে বাঁধা পড়েন অভিনেত্রী রূপসা চট্টোপাধ্যায় ও সায়নদীপ। বিয়ের মাস ঘুরতেই গুড নিউজ দিয়েছেন অভিনেত্রী। বৃহস্পতিবার শিশুদিবসে প্রেগন্যান্সির খবর প্রকাশ্যে আনেন রূপসা। জানান, তাঁর শরীরে বেড়ে উঠছে আরও একটা প্রাণ। আরও পড়ুন-চলছে স্যালাইন! হাসপাতালে ভর্তি অন্বেষা, কী হয়েছে তাঁর? আনন্দীতে কবে ফিরবেন?
স্বামী সায়নদীপকে পাশে নিয়ে গোলাপি-নীল-সাদা কেক হাতে সুখবর ভাগ করে নিয়েছেন ভানুমতীর খেল খ্যাত অভিনেত্রী। একদিকে যেমন অভিনন্দন বার্তার বন্যা, তেমনই জুটছে কটাক্ষও। মা হওয়ার খবরে যেখানে তাঁর হাসিখুশি থাকার কথা, সেখানেই তাঁর হবু সন্তানকে নিয়ে চলছে কাটাছেঁড়া। এই বিতর্ক কীভাবে সামাল দিচ্ছেন রূপসা, কেমনভাবে কাটছে মাতৃত্বের দিনগুলো? প্রেগন্যান্সি জার্নি নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার সামনে মুখ খুললেন রূপসা।
গত বছরই আইনি বিয়ে সেরে ফেলেছিলেন রূপসা-সায়নদীপ। সামাজিক বিয়ের দিন কয়েক আগেই প্রেগন্যান্সির খবর জানতে পারেন রূপসা। আপতত সাড়ে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা নায়িকা। রূপসা বললেন, ‘যখন থেকে জানতে পেরেছি মা হতে চলেছি, এত দ্রুত দিনগুলো পেরিয়েছে কিছু উপলব্ধি করতে পারেনি। তখন বিয়ের প্রস্তুতি তুঙ্গে। ফাইনালি সবাইকে সুখবরটা দিলাম, এখন মনে হচ্ছে আমি অনুভব করতে পারছি সত্যি আমি মা হতে চলেছি! সবাই অভিনন্দন বার্তা জানাচ্ছে, প্রতিদিন বুঝতে পারছি শরীরের আমার ভিতরে একটা প্রাণ বেড়ে উঠছে। এই অনুভূতিগুলো তো প্রথমবার অনুভব করছি, ভাষায় বলে বোঝাতে পারব না।’
প্রথম কয়েক মাস অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর চেপে রেখেছিলেন সঙ্গত কারণে। জানান, ‘প্রথম কিছুদিন না বলাটাই বেটার। ওই জন্য প্রথমে কাউকে জানাইনি। তবে পরিবারের তরফে কোনও আপত্তি আসেনি। কারণ সকলে হ্যাপিলি বিষয়টা গ্রহণ করেছে।’ ট্রোলিং নিয়ে মাথা ঘামাতে না-রাজ রূপসা। তবে নেতিবাচক মন্তব্য নজর এড়ায়নি তাঁর। কাঞ্চন-শ্রীময়ীর সঙ্গে তুলনাও চলছে রূপসা-সায়নদীপের, কেই প্রশ্ন তুলছেন সামাজিক বিয়ের প্রাসঙ্গিকতা নিয়েও। অভিনেত্রী কড়া ভাষায় বলেলন,'আমার জীবনটা খোলা খাতার মতো, সেটা ফ্যানসদের জন্য হোক বা সোশ্যাল মিডিয়ায়। লুকানোর জায়গা নেই! আর মানুষ লুকায় কখন, যখন ভুল করে বা বলতে দ্বিধাবোধ করে। আমি তো কোনও ভুল করিনি, এটা আমার কাছে খুশির খবর।'
খানিক থেমে রূপসার সংযোজন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় যেমন ভালো মানুষ রয়েছে, তেমনই খারাপ মানুষও রয়েছে। আমি আমার জীবনের কিছু খুশির খবর শেয়ার করে নিচ্ছি আমার শুভাকাঙ্খীদের সঙ্গে। কে কী বলবে সেই আশা নিয়ে আমি পোস্ট করছি না। সবার বাক স্বাধীনতা আছে। কে কী বলল তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না। অনেক মানুষ অভিনন্দন জানিয়েছে। যারা কটূক্তি করেছে তারা অন্যের ভালো দেখতে পারে না। আমি অনেকদিন পর কমেন্ট সেকশন চেক করছিলাম, কারণ এটা আমার বেবির ব্যাপার। সেখানে দেখলাম ট্রোলারদের বিরুদ্ধে গিয়ে বহু মানুষ মন্তব্য করেছেন। আমাকে আর কাউকে কোনও পালটা জবাব দিতে হয়নি। ঢালের মতো প্রচুর ফ্যানসরা আমরা পাশে দাঁড়িয়েছে’।
পরিবারের সকলে দারুণ খুশি। রূপসার কথায়, 'সবাই খুব খুশি। সায়ন বাড়ির একমাত্র ছেলে, আমিও বাড়িতে সবচেয়ে ছোট। বাবা-মা'র একমাত্র মেয়ে। সবাই উচ্ছ্বসিত যে আমাদের চেয়েও ছোট কেউ আসছে। আমাদের নিজেদের কাছেও বাবা-মা হওয়ার এই ব্যাপারটা শকিং ছিল, আমরা নিজেরাই ছোট, কী করে একটা বেবিকে বড় করব। বিশাল বড় একটা দায়িত্ব হঠাৎ করে কাঁধে চলে এসেছে। আস্তে আস্তে ব্যাপারটার মধ্যে আমরা ঢুকেছি। খুশিও ছিলাম, একটু ভয়ও ছিল। তবে সবটা ভালোভাবে কাটছে ভগবানের কৃপায়'।
সারাক্ষণ বউকে আগলে রাখছেন সায়নদীপ। রূপসা বললেন, বাপের বাড়িতে তো কোনও কাজেই হাত দিতে হয় না। শ্বশুরবাড়িতে হালে একটু দায়িত্ব নিতে হচ্ছে, কারণ তাঁর শাশুড়ি মার হাঁটুতে অস্ত্রোপচার হয়েছে সম্প্রতি। তবে গৃহকর্মী রয়েছেন সব কাজে সাহায্য করতে। আপতত কাজ থেকে দূরেই রয়েছেন রূপসা। বললেন, ‘এখন বড় কাজ ধরছি না। যতক্ষণ না সন্তান আসছে, তবে আগামী বছর মাঝামাঝি সময়েই কাজে ফিরব আশা করছি’। মার্চের শেষেই খুব সম্ভবত ভূমিষ্ঠ হবে রূপসা-সায়নদীপের প্রথম সন্তান।