বাংলা ওটিটি প্ল্যাটফর্মের মন্টু পাইলট তিনি। ছোট পর্দা থেকে শুরু, এখন রুপোলি পর্দায় চুটিয়ে কাজ করছেন সৌরভ দাস। নায়কের ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও চর্চা কম নয়। মাস কয়েক আগেই টলিপাড়ার সুন্দরী নায়িকা দর্শনার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছেন তিনি। বাংলা ছবি থেকে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার সঙ্গে অকপট আড্ডায় ধরা দিলেন সৌরভ দাস।
বুমেরাং-এর সাফল্য কেমন এনজয় করছেন?
সৌরভঃ (চওড়া হাসি) দুর্দান্ত। দর্শক আমাদের ভালোবাসা দিয়েছেন আর কী চাই!
আচ্ছা, এই ছবিতে আপনার একটা সংলাপ ধরেই জানতে চাইব স্বপ্ন না সম্পর্ক আপনার কাছে কোনটা বেশি জরুরি?
সৌরভঃ আমার কাছে সম্পর্ক বেশি জরুরি। সম্পর্ক ঠিক থাকলে স্বপ্ন সফল হয়, বলে আমার বিশ্বাস।
কেরিয়ারের শুরুতে যে স্বপ্ন দেখেছিলে কাছাকাছি পৌঁছাতে পেরোছো বলে মনে হয়?
সৌরভঃ জীবনে যে স্বপ্নটা দেখেছি সেটার থেকে এখনও অনেক দূরে। এখন সবে শুরু, অনেকটা পথ চলা বাকি। আমার হাতে সবটা নেই, তবে যেটা আছে সেটা হল পরিশ্রম, সমর্পণ আর নিষ্ঠা দিয়ে কাজ করে চলা। সেটাই করছি, আশা করছি আমার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।
এই জীবন দর্শনটা কী বরাবরের, নাকি হালে ‘জীবন-দর্শন’ বদলেছে?
সৌরভঃ (হাসি) না, আমি বর্তমানকে আঁকড়ে বাঁচি। ভবিষ্যত নিয়ে বেশি ভাবি না। বর্তমান সুন্দর হলে ভবিষ্যতটাও সুন্দর হবে বলেই আমার বিশ্বাস।
বুমেরাং-এ জিৎ-রুক্মিণীর সহ-অভিনেতা। সেকেন্ড লিড হিসাবে কাজের সিদ্ধান্ত নিলেন কেন?
সৌরভঃ আমার চরিত্রটা শুনে খুব ভালো লেগেছিল। আমি অনেকদিন কোনও আউট অ্যান্ড আউট কমেডি ছবি করিনি। শেষ বোধহয় বলো দুগ্গা মাঈকী ছবিতে দর্শক আমাকে এমন অবতারে দেখেছে। সেই কারণেই এই ছবিটার অংশ হতে চেয়েছিলাম, গোটা প্রসেসটা খুব এনজয় করেছি।
টলিউডের অনেক সহকর্মী তো এখন বলিউডে, দর্শনাও কাজ করছে। সৌরভকে কবে দেখা যাবে বলিউডে?
সৌরভঃ সত্যি বলতে এটা তো আমার হাতে নেই। আমি প্রচুর অডিশন দিচ্ছি। আমি কিন্তু অনেকদিন আগেই একটা বলিউড ছবি করেছি ওনিরের পরিচালনায়, ‘কুছ ভিগে আলফাস’ (২০১৮)। সম্প্রতি আমাজন প্রাইমের পি আই মীনা বলে একটা সিরিজে কাজ করলাম। গত বছরই সেটা রিলিজ করেছে। এখনও একটা প্রোজেক্টের কথাবার্তা চলছে, দেখা যাক।
আজকাল তো গান নিয়ে ফের চর্চা শুরু করেছো। কী বলবেন?
সৌরভঃ গানটা তো সবসময়ই সঙ্গে ছিল। এমন নয়, সেটা চলে গিয়েছিল। আমি গান গাইতাম, সুর করতাম, সেগুলো আমার ল্যাপটপে রাখা থাকত। এখন মনে হল এটা সঠিক সময় মানুষের কাছে আমার গানগুলো পৌঁছে দেওয়ার। তাই মনে হল গানের জগতে ফের একবার ঝাঁপিয়ে পড়া যেতে পারে। আমার গান দিয়েই শুরু, আবার সেখানে ফিরছি।
জীবনের কোনও বিষয়টা বুমেরাং-এর মতো ফিরে আসুক, এমন ইচ্ছে?
সৌরভঃ আমি কোনও রিগ্রেট রাখি না। প্রফেশন্যাল কেরিয়ারে গানটাই বুমেরাং হয়ে ফিরে আসছে। আর জীবনের ক্ষেত্রে বলব, আমার দিদা যদি বুমেরাং হয়ে ফিরে আসে…..। আমি বড় হয়ে ওঠার সময় দিদার সবচেয়ে ক্লোজ ছিলাম। কারণ আমার জীবনে যা কিছু হয়েছে, যতটুকু হয়েছে সবটাই দিদা চলে যাওয়ার পর। আমার সাফল্যের কিছুই দিদা দেখে যেতে পারেননি, তাই সেটা আমার একটা না-পূরণ হওয়া ইচ্ছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ট্রোলিং এখন তারকাদের জীবনের অংশ। বিয়ে নিয়ে আপনাকেও কম কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়নি। বিষয়টা কীভাবে দেখেন?
সৌরভঃ আমি সত্যি জানি না কী হচ্ছে! কমেন্ট সেকশনে বেশি নজর দিই না। আগে দেখতাম। আমি নিজের কাজ নিয়ে ভাবি। যেটা আমার হাতে নেই সেটা নিয়ে ভেবে লাভ নেই। ইগনোর করাই ভালো।
দাম্পত্য জীবনের তো ৭ মাস কাটিয়ে ফেললেন। জীবনে কী কী বদল এল?
সৌরভঃ বদল আসেনি। ম্যাচুরিটি, রেসপনসিবিলিটি এই জিনিসগুলো একটু স্ট্রং হয়েছে বলেই অনুভব করেছি। সেটা শুধু ব্যক্তিগত জীবনে নয় কাজের জায়গাতেও আমাকে সাহায্য করেছে বলে মনে হয়।
তাহলে ভুল হলে কে আগে Sorry বলে?
সৌরভঃ ওরে বাবা! ভুল হলেও আমি সরি বলি, আর ভুল না হলেও আমি সরি বলি। হোয়াইফ ইজ অল ওয়েজ রাইট (হাসি)। এটাই তো হয়ে এসেছে।
আগামিতে ১০ই জুন ছবিতে সৌমিতৃষার সঙ্গে কাজ করলে, কেমন অভিজ্ঞতা?
সৌরভঃ সৌমির সঙ্গে আমার প্রথম কাজ। খুব ভালো লাগল ওর সঙ্গে কাজ করে। খুব বাবলি একটা মেয়ে, সবসময় সৌরভদা সৌরভদা করেছে। এটা কীভাবে করা যায়, ওটা কীভাবে করব সব সময় জিগ্গেস করেছে। ওর একটা জিনিস যেটা আমার সবচেয়ে ভালো লাগল, যে ও শুধু কিন্ত নিজের চরিত্রটা নিয়ে ভাবে না, পুরো প্রোজেক্টটা নিয়ে ভাবে। নিজেক আইডিয়া সবার সঙ্গে ভাগ করে নেয়। ওটা আমার খুব ভালো লেগেছে।