বলিউডের সুপরিচিত নাম ফারহা খান। শুধু কোরিওগ্রাফার হিসেবে নয়, পরিচালক হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি। রিয়েলিটি শো-এর বিচারক ফারহা। একজন সফল সঞ্চালকও। সম্প্রতি মণীশ পলের পডকাস্ট শো-তে এসে ফারহা তাঁর ছোটবেলার দারিদ্র্যের দিনগুলি নিয়ে কথা বলেন। তাঁকে বলতে শোনা যায় কীভাবে রাতারাতি তাঁরা গরীব হয়ে যান।
ফারহার বাবা কামরান খান ছিলেন একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা, যিনি অনেক সিনেমা বানিয়েছিলেন। তবে বানানো একটি ফ্লপের কারণে ‘পথে বসে’ তাঁর গোটা পরিবার, স্ত্রী-সন্তানেরা।
ফারহাকে মণীশের শো-তে সেই নিয়ে খোলাখুলিই কথা বলতে শোনা যায়। তিনি বলেন, ‘আমরা রাতারাতি ব্যর্থতা দেখেছি। ছবিটি শুক্রবার মুক্তি পেয়েছিল এবং শনিবারের মধ্যে তা চলে আসে প্রেক্ষাগৃহের বাইরে। রবিবার আমরা সর্বস্বান্ত। তিনি সেই ছবির জন্য মায়ের গয়না বন্ধক রেখেছিলেন, কারণ তিনি নিশ্চিত ছিলেন যে ছবিটি ভালো চলবে। ওই ছবির পর থেকে তিনি মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত প্রায় ১৩ বছর ধরে তার হাতে কোনও কাজ ছিল না। আমরা ৪ বিএইচকে থেকে ১ বিএইচকে-তে চলে আসি। বাবা মদ খাওয়া শুরু করে।’
ফারহা সেই কঠিন সময়ের কথা বলতে গিয়ে জানান, ‘৫ বছর বয়স থেকে ১৩ বছর বয়স অবধি ওভাবেই ছিলাম। এরপর মা সিদ্ধান্ত নেয় ওই বাড়ি ছেড়ে আমাকে আর সাজিদকে নিয়ে বাবার বাড়ি ছেড়ে আসবে। সেটাও একটা দৃশ্য। সোহো হউল এখন যেখানে, আমরা রাত দুটোয় ওখানে দাঁড়িয়ে আছি। মা আমাদের দুই ভাইবোনকে নিয়ে। আমরা একটা রিকশা নিয়ে ডেইজি ইরানি আন্টির সঙ্গে থাকতে চলে গেলাম। আমরা ৫ বছর তাদের সঙ্গে ছিলাম।’
ফারহা খান আরও জানান, পাঁচ বছর ডেইজি ইরানির বাড়িতে থাকার পর তিনি ও তাঁর মা বাবার বাড়িতে ফেরেন। তার মা সেই সময় হোটেলে হাউজ কিপিংয়ের কাজ করতেন। ফারাহ বলেন, 'আমাদের বাড়িতে কিছুই ছিল না। আমরা ঘরের দরজা খোলা রেখে ঘুমাতাম, যাতে কেউ এলে কিছু দিয়ে যায়। কারণ নিয়ে যাওয়ার মতো কিছু তো ছিল না। ফারহা বলেন, আজ যখন মাঝে মাঝে নিজের বিলাসবহুল বাড়ি দেখেন, তখন বিশ্বাস করতে পারেন না যে এটা তাঁরই বাড়ি।
এর আগে নিজেদের খারাপ আর্থিক অবস্থা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন সাজিদ নিজেও বিগ বসের ঘরে থাকাকালীন। জানিয়েছিলেন বাবার পরলৌকিক কাজের টাকা দিয়ে কীভাবে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন সলমন খানের বাবা সেলিম খান। বাবার শেষ কাজ করার জন্য আত্মীয়দের বাড়ি বাড়ি ঘুরছিলেন ১৩ বছরের সাজিদ। কারও সাহায্য পাননি। সেই সময় এগিয়ে আসেন সেলিমই। সাজিদ বিগ বসে এমসি স্ট্যানকে বলেছিলেন, ‘মদ খেয়ে আমার বাবা আমার চোখের সামনেই মারা গিয়েছিল। লিভার ফেটে গিয়েছিল। চোখ থেকে রক্ত বের হচ্ছে, মুখ থেকে রক্ত বের হচ্ছে। বাবাকে যেখানে কবর দেই, সেখানে সেলিম আঙ্কেল এসেছিল। আমাকে যে টাকাটা দিয়েছিল তা দিয়ে আমাদের দু মাসের রেশন আর ইলেকট্রিকের বিল হয়ে গিয়েছিল।’