ফের পর্দায় আমির খানের 'দঙ্গল কন্যা' ফতিমা সানা শেখ। নতুন সিনেমা নয়, কঠিন রোগে আক্রান্ত ফতিমা। সম্প্রতি নিজেই নিজের এই ব্যাধি নিয়ে মুখ খুলেছেন ফতিমা। জানিয়েছেন, নিজের এই রোগের বিষয়ে তিনি শুরুতে কাউকে জানাননি। তবে এখন মুখ খুলছেন। কিন্তু কী হয়েছে ফতিমার?
ফতিমা সানা শেখ জানাচ্ছেন, Epilepsy (এপিলেপসি) অর্থাৎ মৃগী রোগে আক্রান্ত তিনি। ফতিমার কথায়, ‘দঙ্গল-এর শ্যুটিংয়ের সময়ই আমার প্রথম মৃগী রোগটি ধরা পড়ে। তবে প্রথমে আমি এটাকে কিছুতেই মানতে পারছিলাম না। আমি স্বীকার করতেই রাজি ছিলাম না যে আমার এই স্নায়বিক ব্যাধি রয়েছে, তাই আমি কোনও ওষুধও খাইনি। খুব ভয়ে ছিলাম যদি লোকজনের সামনে খিঁচুনি শুরু হয়, যেটা কিনা এই রোগের অন্যতম একটা লক্ষ্মণ। মৃগী রোগীদের অনেক কলঙ্কের ভাগীদার হতে হয়, লোকেরা মনে করে আপনি হয়ত মাদকাসক্ত, মনোযোগ পেতে চাইছেন, অথবা ভোগ করছেন। অনেকেই এই রোগে আক্রান্তদের এড়িয়ে যেতে চান।’
ফতিমা আরও বলেন যে বেশিরভাগ মানুষই মৃগীরোগ সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন না। এটা কীভাবে মোকাবিলা করতে হয়, সেকথা জানেন না। লোকজনের এটা সম্পর্কে জ্ঞানের সত্যিই অভাব রয়েছে। মৃগী রোগীদের খিঁচুনি ঠিক কেমন হয়, তা ব্যাখ্যা করে ফতিমা বলেন খিঁচুনির পরে মৃগীরোগীরা প্রায়শই ট্রমা অনুভব করেন। কথা প্রসঙ্গে নিজের কথা টেনে ফতিমা বলেন, ‘যেহেতু আমি ঠিকমতো ওষুধ খেতাম না, তাই আমার বেশিই খিঁচুনি হবে সেটাই স্বাভাবিক। আমি ওষুধ খেতেই চাইনি। আমি শুধু লোকজনের সঙ্গেই যুদ্ধ করছিলাম না, ওষুধের সঙ্গেও যুদ্ধ করেছি। আমি ভেবেছিলাম স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য আমার এগুলির দরকার নেই।’
আরও পড়ুন-ছুটবে হাসির ফোয়ারা, আসছে অক্ষয়-গোবিন্দা-পরেশ রাওয়ালের ‘ভাগাম ভাগ ২’
আরও পড়ুন-বিশেষ বিবাহ আইনে সেরেছিলেন বিয়ে, জন্মের পর মেয়ের কী নাম রাখলেন রিচা চাড্ডা-আলি ফজল?
ফতিমা জানান, তিনি একবার নিজের এই রোগের কথা পাপারাৎজিদের জানিয়েছিলেন। তাঁরা সহানুভূতির সঙ্গে বিষয়টি বুঝেছিলেন। সেজন্য তিনি কৃতজ্ঞ বলেও জানা। ফতিমার কথায়, ‘আমার সপ্তাহে একবার বা ২বার খিঁচুনি হত। ঘটনার আগে উদ্বেগ তাঁকে গ্রাস করত। ফ্ল্যাশিং লাইট মৃগীরোগের জন্য একটা পরিচিত ট্রিগার, যদিও এই কারণেই যে খিঁচুনি হবে এমনটাও নয়। তবে এই রোগের কথা জানার পর এতটাই ভয় পেয়েছিলাম যে আমি কোনও অনুষ্ঠানে এবং স্ক্রিনিংয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম। অগত্যা এই বিষয়টা আমি পাপারাৎজিদের ও জানালাম, সেসময় তাঁরা সত্যিই সুন্দর ব্যবহার করেছিল। ওরা আমার আশে পাশে কখনওই ফ্ল্যাশলাইট ব্যবহার করত না। কখনও কখনও, আমার সহকর্মীরাও যা বুঝতে পারে না, সেটা কিন্তু পাপারাজ্জিরা বুঝতে পেরেছিল।’
ফতিমার কথায়, ‘কখনও কখনও এমন দিনও যায়, যখন তিনি নিজের এই শারীরিক সমস্যার কারণে শ্যুটিং করতে পারেন না। আবার কখনও মাইগ্রেনের তীব্র ব্য়থায় কাবু হয়ে যান তিনি।’ অনেকে মনে করেন মৃগী আক্রান্ত রোগীকে জুতোর গন্ধ শুঁকিয়ে হয়ত জ্ঞান ফেরানো সম্ভব। তবে ফতিমা বলেন, ‘এটা এক্কেবারেই করবেন না, এটা সম্পূর্ণ মিথ, ভুল ধারণা। আমার পরিবারের লোকজনও একবার এটা আমার উপর প্রয়োগ করেছিল, তবে এটা কখনওই করবেন না।’