বাংলা নিউজ > বায়োস্কোপ > ‘প্রতিভার করবস্থান বলিউড, ধীরে ধীরে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে উঠতি অভিনেতারা': বিবেক অগ্নিহোত্রী

‘প্রতিভার করবস্থান বলিউড, ধীরে ধীরে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে উঠতি অভিনেতারা': বিবেক অগ্নিহোত্রী

পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী।

Vivek Agnihotri shares Bollywood's ‘inside story’: গ্ল্যামার জগতের আলোর পিছনে বড্ড কালো লুকিয়ে রয়েছে! সেই অন্ধকারময় দিক নিয়েই মুখ খুললেন ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ পরিচালক। 

বলিউডের চাকচিক্যের আড়ালে রয়েছে একটা অন্ধকার জগত। পর্দার ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ চরিত্রদের গ্ল্যামারের আলোয় ঢাকা থাকে সব অন্ধকার, সব কালো। আসলে কথাতেই আছে, প্রদীপের তলাতেই লুকিয়ে থাকে অন্ধকার। শোবিজ দুনিয়ার এমন অচেনা, অচেনা জগত নিয়ে বিস্ফোরক ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ পরিচালক বিকে অগ্নিহোত্রী। বিবেকের কথায়, বলিউড শুধু ‘ট্যালেন্ট হাব’ নয়, বহু ‘ট্যালেন্টের সমাধি’ও। 

সিনেমা মানেই রংমহল। তবে সেই রংচকে জগতের বাইরে তারকার জীবনেও রয়েছে বেশ কিছু হতাশা, না-পাওয়ার গল্প। এমন কি সেই হতাশা থেকেই গ্ল্যামার জগৎ পর্যন্ত ছাড়তে চেয়েছেন বহু তারকা। কারা রয়েছেন সেই তালিকায়, আসুন শুনে নিই।

পরিচালক লেখেন, ‘আপনারা যা দেখেন তা বলিউড নয়, আসল বলিউড তো খুঁজে পাওয়া যায় অন্ধকার গলিতে। সেটা এতটাই অন্ধকার যে কোনও সাধারণ মানুষের পক্ষে সে পথে হাঁটা অসম্ভব। সেই অন্ধকার গলিতে তুমি খুঁজে ভাবে চুরমার হওয়া স্বপ্ন, দুমড়ে-মুচড়ে থাকা স্বপ্ন, আর সমাধিস্থ করা স্বপ্ন। যদি বলিউড প্রতিভার জাদুঘর হয়, তাহলে এটা প্রতিভার কবরস্থানও।’ 

এরপর বিবেক অগ্নিহোত্রী আরও যোগ করেন, প্রত্যাখ্যান নিয়ে কথা বলছি না, যেই এখানে আসুক, প্রত্যাখ্যান তো থাকবেই। সেটা তো সবকিছুর অংশ। তবে যে অপমান আর শোষণের শিকার হতে হয়, সেটাই সব স্বপ্ন, আশা আর বিশ্বাসকে ভেঙে দেয়। মনুষ্যত্বের উপর থেকে ভরসা উঠে যায়। খাবার ছাড়াও মানুষ বাঁচতে পারে, কিন্তু সম্মান,আত্ম বিশ্বাস আর আশা ছাড়া বাঁচা অসম্ভব।'

বলিউডের স্ট্রাগলারদের কথা বলতে গিয়ে বিবেক অগ্নিহোত্রী লিখেছেন, ‘মাঝেমধ্যে এই লড়াইটা এত কঠিন হয়ে পড়ে যে অনেকে হাল ছেড়ে দেয়। তাঁরা সৌভাগ্যবান, যাঁরা লড়াইতে হেরে গিয়ে বাড়ি ফিরে যায়। যাঁরা থেকে যায়, তাঁরাই তিলে তিলে শেষ হয়। আবার যারা সামান্য সাফল্য পায়, তাঁদের বিপদ আরও বেশি। কারণ এরপর ধীরে ধীরে ড্রাগস, অ্যালকোহল এবং জীবন ধ্বংস করবার মতো সব নেশার জিনিসের সঙ্গে তাঁরা নিজেদের জড়িয়ে ফেলে। তাঁদের প্রয়োজন অনেক টাকার। সেই টাকার জোগান কোথায়? এই ধরণের সাফল্য়গুলোই সবচেয়ে বিপজ্জনক। কোনওরকম রোজগার ছাড়া শোবিজে টেকা যায় না। তারকার মতো হাবভাবের পাশাপাশি তোমাকে সেভাবে নিজেকে পেশ করতে হবে, তবে তোমার সেই ক্ষমতা নেই। ভাবুনতো গ্যাংস্টারদের মধ্যিখানে আপনার কাছে ছুরি নেই, বন্দুক নেই- তবুও আপনি গ্যাংস্টার! এখান থেকেই শুরু শোষণের। লোকে তোমার ফায়দা লুটতে চাইবে’। 

নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবার লড়াইয়ে এইভাবে নিজেকেই হারিয়ে ফেলে উঠতি অভিনেতারা। এরপর তাঁকে নিয়ে হাসাহাসি, আশেপাশের মানুষরাই তাঁকে ফেলনা করে দেয়। এরপর নিজের স্বপ্নের কবরে দাঁড়িয়ে অন্য়কে সেই স্বপ্নের অপমৃত্যু নিয়ে উপহাস করতে দেখতে হয়। ব্যর্থতাটাই এরপর সেই অভিনেতার আজীবনের সঙ্গী।  বিবেক অগ্নিহোত্রী আরও লেখেন, ‘এরপর তুমি মরা মানুষের মতো হেঁটে চলে বেড়াও। ধীরে ধীরে একদিন প্রকৃত অর্থেই শেষ হয়ে যাও। তারপর দুনিয়া দেখে তুমি সত্যি মৃত’। 

 

বন্ধ করুন