ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পীদের অন্তিমবার সতর্ক করল দ্য ফেডারেশন অফ ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া সিনে এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন। উরি হামলার পর ভারতে পাকিস্তানি শিল্পীদের উপর সম্পূর্ন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ফেডারেশন। তবুও সেই নিষেধ উপেক্ষা করে কোনও কোনও ভারতীয় গায়ক কাজ করছেন পাকিস্তানি শিল্পীদের সঙ্গে, এমন খবর সামনে আসায় অসন্তুষ্ট বলিউডের এই ফিল্ম ফেডারেশন। নিয়ম ভাঙলে এবার শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলে রবিবার নোটিস জারি করা হয়েছে FWICE-এর তরফে। প্রসঙ্গত সম্প্রতি ভারতীয় গায়িকা হর্ষদীপ কৌর ও পাক সঙ্গীত তারকা রাহত ফতে আলি খান একসঙ্গে একটি অনলাইন কনসার্ট করেন। এরপরেই নড়েচড়ে বসে ফেডারেশন।
FWICE-নোটিসে পরিষ্কার জানিয়েছে, ' আমরা খুব দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি আমাদের সকল সদস্যরা এই বিষয়টির সঙ্গে খুব ভালোভাবে অবগত যে কোনও পাক শিল্পী, গায়ক, টেকনিশিয়ানের সঙ্গে কোনওরকম সহযোগিতা করা চলবে না। তা সত্ত্বেও কেউ কেউ নির্দ্বিধায় সেই অসহযোগিতার নিয়ম মানছে না।
পাশাপাশি ফেডারেশনের তরফে এও জানানো হয়েছে হর্ষদীপ এবং রাহত ফতে আলি খানের ঘটনাই এই নোটিশ জারি করার একমাত্র কারণ নয়, আরও বেশ কিছু ঘটনা সামনে এসেছে। 'আমরা জানতে পেরেছি আরও কিছু গান বা বিনোদনমূলক বিষয় পরিকল্পনা করা হয়েছে যৌথভাবে। তাই আমরা আমাদের সদস্যদের সাফ জানাতে চাই যে কোনওরকম মাধ্যম বা মিডিয়ার দ্বারা পাক শিল্পীদের সঙ্গে বিনোদনমূলক যুগলবন্দি মেনে নেবে না ফেডারেশন। দোষী পাওয়া গেলে তাঁর বা তাঁদের বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে'
ফেডারেশনের তরফে আরও বলা হয়েছে,'গোটা বিশ্ব যখন করোনার সঙ্গে মোকাবিলা করছে, পাকিস্তান সীমান্তে আমাদের সৈন্যদের হত্যা করছে। তাই এই সার্কুলারের লঙ্ঘন আমরা নেব না। এবং নিজেদের স্বার্থে ভারতীয় শিল্পীদের এই শর্ত মেনে চলতে হবে'।
২০১৬ সালে উরি হামলার পর থেকেই ভারতে কাজ করার ব্যাপারে পাকিস্তানি শিল্পীদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। উরি হামলায় ১৮ জন ভারতীয় সৈন্য প্রাণ হারিয়েছিলেন, আহত হন আরও অনেকে। ঘটনার পরবর্তী সময়ে কোনও পাকিস্তানি অভিনেতা ভারতীয় ছবিতে কাজ না করলেও পাকিস্তানি সঙ্গীতশিল্পীরা ভারতীয় ছবিতে গান গেয়েছেন। কিন্তু ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর পাক শিল্পীদের সঙ্গে সবরকম যোগাযোগ ছিন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়। ঘটনার একদিন আগে ১৩ ফেব্রুয়ারি টি-সিরিজ লেবেল থেকে মুক্তি পেয়েছিল জনপ্রিয় পাক সঙ্গীত শিল্পী আতিফ আসলামের সিঙ্গলস 'বারিসেঁ'। সেটাই আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতে পাকিস্তানি শিল্পীর তরফে মুক্তি পাওয়া শেষ কাজ।
সম্প্রতি পাকিস্তানি সংবাদপত্র ডনকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে আতিফ এই নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে জানিয়েছেন, 'আমি বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত নই, নিষেধাজ্ঞা জারি থাকলেও সেখানে(ভারত) আমার প্রচুর ভক্ত রয়েছে। এটা পরিষ্কার তাঁরা আমার বলিউড মিউজিক ভালোবাসে। বলিউড ছবি নোটবুক থেকে আমার গান বাদ দেওয়ার পর ইন্ডিয়ায় টুইটারে #UnbanAtifAslam ট্রেন্ড করেছে। এই ভালোবাসাটাই যথেষ্ট'।