আরজি কর কাণ্ডের আবহে টলিউডের পরিচালক অরিন্দম শীলের বিরুদ্ধে উঠল যৌন হেনস্থার অভিযোগ। এক অভিনেত্রী পরিচালকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। এবার করলেন এফআইআর।
সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে মহিলা কমিশনেও অভিযোগ জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। আর এবার সরাসরি তাঁর নামে এফআইআর দায়ের করলেন থানায়। যদিও প্রথম থেকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন অরিন্দম শীল।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থানায় এফআইআর দায়ের হয়েছে পরিচালকের বিরুদ্ধে। ওই এলাকার একটি রিসর্টে শুটিং চলছিল, সেখানেই ওই অভিনেত্রীকে পরিচালক যৌন হেনস্থা করেছেন বলে দাবি করেন অভিনেত্রী। তাই তিনি নিকটবর্তী থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন। এই ঘটনার জেরে টলিউডের ডিরেক্টরস গিল্ডও অরিন্দম শীলকে সাসপেন্ড করে।
এফআইআর দায়ের হওয়ার কথা শুনে পরিচালক TV9 বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, 'আইন আইনের পথে চলবে। তার জন্য যা করার করতে হবে। আমি বারবার একটাই কথা বলছি। একটা দৃশ্য অভিনয় করে দেখানোর সময়, আমার শিল্পী যদি অস্বস্তি অনুভব করে থাকেন, তাহলে তখন বলেননি কেন। তবে যদি অস্বস্তি বোধ করে থাকেন, তার জন্য আমি দুঃখিত। পুরো ঘটনাটা অনভিপ্রেত।'
প্রসঙ্গত, পরিচালকের নামে অভিযোগ ওঠে তিনি সম্মতি ছাড়াই অভিনেত্রীকে কোলে বসিয়ে চুমু খান। ঘটনায় মহিলা কমিশনের সামনে চিঠি লিখে অভিনেত্রীর কাছে ক্ষমাও চেয়েছিলেন অরিন্দম। এরপর গত শনিবার পরিচালককে সাসপেন্ড করে পরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টর্স গিল্ড। তারপর থেকেই একঘরে হয়েছেন পরিচালক। পরিচিত মহলে আক্ষেপ করে বলেছেন, ইন্ডাস্ট্রির কোনও বন্ধুই তাঁর খোঁজ পর্যন্ত নেয়নি। একমাত্র কয়েকজন প্রযোজকের ফোন এসেছিল। একই আবাসনে থাকেন এমন ঘনিষ্ঠ টলি সেলেবরা একটা মেসেজ পর্যন্ত করেননি তাঁকে।
আরও পড়ুন: কোলে বসিয়ে চুমু নাকি ‘অ্যাক্সিডেন্ট’, টলিউডে ‘একঘরে’ হওয়া অরিন্দমের সাফাইতে চটল অভিযোগকারিণী
মিডিয়াতে অরিন্দম সাফাই দিয়েছেন, ওই ঘটনা স্রেফ একটা ‘অ্যাক্সিডেন্ট’ ছিল। পরিচালকের এই সাফাইয়ের কড়া জবাব দিয়েছিলেন অভিযোগকারিণী। অরিন্দম বলেছিলেন, ‘শুট চলাকালীন ওঁর গালের পাশে আমার মুখটা লেগেছিল একবার। এটা পুরোটাই একটা অ্যাক্সিডেন্ট।’ এই নিয়ে পালটা প্রশ্ন করেন অভিনেত্রী। তিনি বলেন, ‘গালে চুমু খাওয়া কী ভাবে অ্যাক্সিডেন্ট হতে পারে? ওটা নাকি শিল্পসত্ত্বা থেকে হয়ে গিয়েছে। বুঝতে পারেনি আমার খারাপ লেগে যাবে।’
অভিনেত্রীর কথায়, পরিচালকের ধারণা ছিল এই ঘটনার জেরে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন তিনি। হেসে কথা বললেই অভিনেত্রীদের সঙ্গে যেমন খুশি আচরণ যে করা যায় না, সেই বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা দেন তিনি। তিনি বলেন, 'ওর কাছে বিষয়টা এতটাই সাধারণ যে, কাউকে না জিজ্ঞেস করে, তার পারমিশন ছাড়াই এমন অসভ্যতা করা যায়। এটা এত বড় ইস্যু হতে পারে, ভাবতেই পারেনি তিনি।’