এন্ট্রি পয়েন্টে থার্মাল স্ক্রিনিং, মাস্কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার, কম করে ছয় ফুটের দূরত্ব বজায় রাখা- এমনই সব নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে দেশের ফিল্ম ও টেলিভিশন প্রোডাকশন হাউজগুলিকে। করোনা সংকটের এই সময়ে মিডিয়া প্রোডাকশন ইন্ডাস্ট্রির জন্য কাজের নিয়মাবলি বেঁধে দিল কেন্দ্র সরকার। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সুপারিশ অনুযায়ী তৈরি হয়েছে এই স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর। রবিবার এই নিময়াবলীর ঘোষণা সারলেন কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ প্রকাশ জাভড়েকর।এই SOP তৈরির মূল উদ্দেশ্য হিসাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, 'মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রির কাস্ট এবং ক্রুয়ের জন্য একটা সুস্থ ও সুরক্ষিত কাজের পরিবেশ তৈরি করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। গোটা দেশজুড়েই শ্যুটিং শুরু করবার অনুমতি দেওয়া হয়েছে কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে। তবে শ্যুটিংয়ের ক্ষেত্রে যে সব নিয়ম মেনে চলতে হবে তার দীর্ঘ তালিকা প্রকাশ করা হয়।
এসওপিতে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে শ্যুটিংয়ে স্থলে এবং অনান্য জায়গাতেও নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। নিয়মিত অন্তরালে সেট এবং মেক-আপ ভ্যান,শ্যুটিংয়ের সরঞ্জাম সব কিছু জীবাণুমুক্ত করতে হবে। একমাত্র ক্যামেরার সামনে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা ছাড়া সকলের জন্য মাস্ক পরে থাকাটা বাধ্যতামূলক। অভিনেতারাও শট শেষে মাস্ক ব্যবহার করবেন। কোনওভাবেই শ্যুটিংয়ের আশেপাশে দর্শকের ভিড় জমতে দেওয়া যাবে না। রিয়ালিটি শো বা অন্য কোনও অনুষ্ঠানে দর্শকাসনে কেউ হাজির থাকতে পারবে না। যিনি মেক-আপ করবেন তাঁর পিপিই কিট পরে থাকা বাধ্যতামূলক। যতটা সম্ভব কম সংখ্যক কাস্ট ও ক্রু নিয়ে কাজ করতে হবে, ল্যাপেল মাইকের যতটা সম্ভব কম ব্যবহার এবং করা হলে একটি ল্যাপেল যেন বাধ্যতামূলকভাবে একজনই ব্যবহার করেন।
এদিন প্রকাশ জাভড়েকর বলেন আমি অত্যন্ত খুশির সঙ্গে ফিল্ম এবং টেলিভিশন অনুষ্ঠানের শ্যুটিংয়ের এই স্টান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর। গত ছয় মাস ধরে দেশের বহু জায়গায় এই ইন্ডাস্ট্রি একেবারে থমকে গিয়েছিল। কিছু কিছু রাজ্যে যদিও শ্যুটিংয়ের আংশিক অনুমতি ছিল। এই এসওপি ঠিক করা হয়েছে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং স্বরাষ্ট্র ও স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করে। আমি নিশ্চিত টেলিভিশন ও ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি এই নিয়মগুলিকে স্বাগত জানাবেন। আমাদের দেশের অর্থ ব্যবস্থার একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে এই ইন্ডাস্ট্রি। গত চার-পাঁচ মাস ধরে এঁনাদের অনেকের হাতেই কোনও কাজ নেই। আমাদের তরফ থেকে গোটা দেশে প্রোডাকশনের কাজ শুরুর সবরকম অনুমতি দেওয়া হল'।
কেন্দ্র সরকারের এই ঘোষণা মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রির জন্য অনেকখানি স্বস্তির কারণ হতে চলেছে। মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু,পশ্চিমবঙ্গ সব বহু রাজ্যে শ্যুটিং শুরু হলেও সব রাজ্যে সেই অনুমতি দেওয়া হয়নি। যার জেরে সেই সব রাজ্যের মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছিল। অন্য দিকে ভুল ভুলাইয়া টু, থালাইভি, ময়দান, আতরঙ্গি রে'র মতো বহু বলিউড ছবির শ্যুটিংও আটকে ছিল, যার শ্যুটিং হওয়ার কথা দেশজুড়ে।
এখন দেখবার থিয়েটার খোলবার অনুমতি কবে দেওয়া হয় কেন্দ্র সরকারের তরফে। মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে তালাবন্ধ রয়েছে দেশের সমস্ত সিনেমাহল।