আমির খানের বড় ছেলে জুনায়েদের প্রথম ছবি 'মহারাজ'-এর মুক্তিতে এল বড় ধাক্কা। ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি হিন্দু সংগঠনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গুজরাট হাইকোর্ট ছবিটির মুক্তিতে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। সিদ্ধার্থ পি মালহোত্রা পরিচালিত 'মহারাজ' ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন জয়দীপ আহলাওয়াত।
মহারাজ সিনমাকে ঘিরে বিতর্ক
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘ভগবান কৃষ্ণের ভক্ত এবং পুষ্টিমার্গ সম্প্রদায় (বৈষ্ণবধর্মের একটি সম্প্রদায়) বল্লভাচার্যের অনুগামীদের পক্ষ থেকে দায়ের করা আবেদনের ভিত্তিতে স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছিল। ১৮৬২ সালের মহারাজ লিবেল কেসকে কেন্দ্র করে তৈরি এই ছবিটি জনশৃঙ্খলায় ফাটল ধরতে পারে এবং এমনকী এই সম্প্রদায়ের অনুগামীদের বিরুদ্ধে হিংসা উস্কে দিতে পারে, এই ভিত্তিতে করা হয়েছিল পিটিশন।’
পিটিশনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ১৮৬২ সালের মহারাজ লিবেল মামলাটি একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির অসদাচরণের অভিযোগের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল এবং বোম্বে সুপ্রিম কোর্টে ইংরেজ বিচারকদের দ্বারা রায় দেওয়া হয়েছিল। এই সিনেমাতে ‘ভগবান কৃষ্ণ ও তাঁকে নিয়ে থাকা ভক্তিমূলক গানের বিরুদ্ধে নিন্দামূলক মন্তব্যে’ রয়েছে বলে দাবি করা হয়।
আরও পড়ুন: রানিকে ‘অভদ্র’ বলে আক্রমণ কঙ্গনার হেয়ার স্টাইলিস্টের, ‘এত বদমেজাজ…’
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, সিনেমাটির ট্রেলার-সহ পর্যাপ্ত প্রচারমূলক কাজ বেশি না করেই মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে নির্মাতাদের। যাতে গল্প নিয়ে বেশি ধারণা আগেভাগে কারও কাথে না থাকে। এই ভিত্তিতে, গুজরাট হাইকোর্টের বিচারপতি সঙ্গীতা ভিষেণ একটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ জারি করেছেন যে, সিনেমাটির মুক্তি স্থগিত রাখা হোক। আগামী ১৮ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলার শাহরুখ খান! মাথায় ঝুঁটি বেঁধে সামনে আসলেন দেব, রাতারাতি বদলে গেল চেহারা
স্ট্রিমিং জায়ান্টের শেয়ার করা সংক্ষিপ্তসার অনুসারে, ‘সালটি ১৮৬২, এমন একটি সময়, যখন ভারতে মাত্র তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বয়স এক বছর এবং ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ স্বাধীনতার আগুনে ঘি ঢালছে। সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে, একজন ব্যক্তি একটি যুগান্তকারী আইনি লড়াইয়ে সাহসী অবস্থান নেন, একটি সত্য গল্প যা এখন মহারাজের মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে - ১৬০ বছরেরও বেশি সময় পরে।’
আরও পড়ুন: ভাবি ২-র রাজকীয় ছুটি কাটানো, ১৪ কোটির বাড়ি কিনেই তৃপ্তি ঘুরতে গেলেন কোথায়
সাংবাদিক ও সমাজ সংস্কারক কারসান্দাস মুলজি ছিলেন নারী অধিকার ও সমাজ সংস্কারের অগ্রণী প্রবক্তা। মুম্বইয়ের এলফিনস্টোন কলেজের ছাত্র এবং পণ্ডিত-নেতা দাদাভাই নওরোজির শিষ্য, তিনি বিধবা পুনর্বিবাহ সম্পর্কে লিখেছিলেন, নিপীড়িতদের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন এবং সমাজে সংস্কারের বীজ বপন করেছিলেন।
'মহারাজ' ছবিটি ১৮৬২ সালের মহারাজ মানহানি মামলার সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি যা ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আইনি লড়াইগুলির অন্যতম বলে ধরা হয়। সিনেমায় জুনায়েদকে সাংবাদিক ও সমাজ সংস্কারক করসনদাস মুলজির চরিত্রে দেখা যাবে। আর জয়দীপকে যদুনাথজি ব্রিজরতনজি মহারাজের চরিত্রে, যিনি ছিলেন বল্লভাচার্য সেক্টরের অন্যতম কর্তা।
মুক্তির আগে 'বয়কট নেটফ্লিক্স', 'বান মহারাজ ফিল্ম'-এর মতো হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড হয়ে গিয়েছে টুইটারে।