মির্জা গালিব থেকে শুরু করে মারাসিম এবং জজবাত পর্যন্ত গুলজারের কোনও ক্লাসিক গজল অ্যালবামই ভোলার নয়। প্রবীণ কবি-গীতিকার, ১৮ অগস্ট রবিবার ৯০ বছর বয়সে পা দিয়েছেন, তবে তিনি এই ধারার প্রতি তাঁর উৎসাহী আরও বেড়ে চলেছে। তাঁর উদ্দেশ্য হল বর্তমান প্রজন্মকে গজল এবং সেমি-ক্ল্যাসিক্যাল বুঝিয়ে তার সম্মান করতে শেখানো। এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে গুলজার বলেছেন, 'বর্তমান প্রজন্ম যে হিন্দি ছবির গান শোনে তা সবই পা কাঁপানো ট্র্যাক, যা শুধুমাত্র বিটের উপর ভিত্তি করে। কিন্তু গজল এবং সেমি-ক্ল্যাসিক্যালের মতো ক্ষেত্রগুলি মনে দাগ কাটে, তার প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হয়। আপনাদের মাথা ঘুরে যাওয়ার মতো পারফর্মেন্স না হলে তা আপনাদের মনে ধরে না। তাই এই সঙ্গীতের ঘরানাগুলি এবং তা কতটা সমৃদ্ধ তা বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।'
গীতিকার জানান যে, তিনি বলিউডে যে সমস্ত কাজ করেছেন সেগুলি নির্বাচন করার আগে তিনি সে সম্পর্কে খুব ভালো করে জেনে নিতেন, 'কারণ ছবির ক্ষেত্রে গান একটি অঙ্গ মাত্র, তাছাড়াও আরও নানা বিষয় তাঁকে ভাবায়। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, 'আমি একটি গজল অ্যালবাম নিয়ে এসেছি, 'দিল পরেশান কর্তা হ্যায়', এই অ্যালবামে গান গেয়েছেন তরুণ গজল গায়ক সুমিত তপু এবং সুরকার ভবদীপ জয়পুরওয়ালে।'
গুলজার মন থেকে গান লেখার নিয়ে তাঁর এক অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নেন। তিনি বলেন, 'একবার, আমার ডাক্তার আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে আমার হার্ট সংক্রান্ত কোনো সমস্যা আছে কিনা। আমি তাকে বললাম, হৃদয়ের অনেক সমস্যা আছে স্যার। হার্টের সমস্যা হলে আমি কেমন শায়ার?' তিনি কীভাবে গজল 'দিল পরেশান কর্তা হ্যায়' লিখেছিলেন তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, 'ভবদীপ চেয়েছিলেন আমি এমন কিছু লিখি যা বর্তমান প্রজন্মের সঙ্গে সম্পর্কিত৷ তিনি আমায় জানান 'দিল তো বাচ্চা হ্যায় জি' ( ইশকিয়া ২০১০) গানটি শুনে তিনি মুগ্ধ হয়েছিলেন এবং একই ধরণের কিছু চেয়েছিলেন। আমি ভেবেছিলাম এখন হয়তো সবার মন বাচ্চা নেই, তাই সেগুলো নিয়ে তাঁর মনে উচাটন হয়। এভাবেই গজলের হুকলাইন এসেছিল আমার মাথায়। আমি আশা করি এই প্রজন্মের শ্রোতারাও এর সঙ্গে মিল খুঁজে পাবেন, তাঁদেরও আশা করি ভালো লাগবে।'
আরও পড়ুন: ফের অক্ষয়-প্রিয়দর্শন জুটি, ফিরছেন হরর কমেডি নিয়ে!
গান ছাড়া আর কী তাঁকে আবিষ্ট রাখে? এই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলে তাঁর উত্তর, 'আমি ৪০০ টিরও বেশি কবির কবিতা অনুবাদ করেছি। অতি সম্প্রতি, আমি ভারতের ৩৪টি ভাষায় ২৭৯ জন কবির সমসাময়িক কবিতা অনুবাদ করেছি। এটি করতে এবং এটিকে একটি বইতে পরিণত করতে আমার নয় বছর লেগেছিল। এটাই এখন আমার কলিং, এমন কিছু যা আমাকে ব্যস্ত রাখে।'