ঋতুস্রাব নিয়ে ছুঁৎমার্গ বহু কাল ধরেই চলে আসছে। একজন রজঃস্বলা নারী কী করতে পারবেন, কী পারবেন না তা নিয়ে এই পিতৃতান্ত্রিক সমাজে রয়েছে নানা বিধি-নিষেধ। এককালে রজঃস্বলা নারীর সঙ্গে এমন আচরণ করা হত, যেন তাঁরা অশুচি। কালের চাকা গড়িয়েছে, যুগ পাল্টেছে, তবে সমাজের এই কট্টর ট্যাবুগুলি কোথাও না কোথাও এখনও যেন রয়েই গিয়েছে। যদিও এযুগের নারীরা এটা নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন। তবু বহু পরিবার থেকেই গোঁড়ামি থেকে এখনও মুক্ত নন।
তবে শুনলে হয়ত অনেকেই অবাক হবেন, ঋতুস্রাব নিয়ে ছুঁৎমার্গ থেকে মুক্তি পাননি খোদ হেমা মালিনী কন্য এষা দেওয়াল। হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন। সম্প্রতি এবিষয়েই মুখ খুলেছেন এষা। কারণটা অবশ্য মা হেমা নন, কারণ তাঁর রক্ষণশীল পরিবার।
এষা সাক্ষাৎকারে জানান, তাঁর দিদা (হেমার মা) এবিষয়ে ছিলেন ভীষণই গোঁড়া। তাই বড় হওয়ার সময় বাড়িতে ঋতুস্রাব নিয়ে কোনওরকম আলোচনার অনুমতিও ছিল না। ঠিক কী কী নিষেধ ছিল? এবিষয়ে কথা বলতে গিয়ে হেমা কন্যা এষা বলেন, ‘আমাদের ওই সময়টা ঠাকুরঘরে ঢোকার অনুমতি ছিল না, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করারও অনুমতি ছিল না। এমনকি পিরিয়ডস শেষ না হওয়ার আগে পর্যন্ত শ্যাম্পু করার অনুমতিও ছিল না। ঋতুস্রাব শেষ হলে ভালো করে স্নান করে তবেই ঠাকুর ঘরে ঢোকা যেত। যদিও এটা ভীষণই একটা গোঁড়ামো, তবে যে বাড়িতে থাকব, সেই বাড়ির রীতি-নিয়ম মেনে চলার বিষয়টা আমি সম্মান করি।’
এখানেই শেষ নয়, এষা জানিয়েছেন, বাড়িতে কখনও তাঁর বন্ধু-বান্ধব এলে তাঁর নানী (দিদা) CCTV ক্যামেরার মতো সব পর্যবেক্ষণ করতেন। এষার কথায়, 'চশমার ফাঁক থেকে নানী সব খেয়াল রাখতেন। এমনকি বাড়িতে তাঁকে শর্ট স্কার্ট বা স্প্যাগেটি পরার অনুমতি ছিল না। আমার বন্ধুরাও অনেকসময় বিভিন্ন ধরনের পোশাক পরে এলেও উপরে একটা বড় শার্ট পরে আসত। পরে আমার ঘরে ঢুকে সেটা ওরা খুলে ফেলত। বেশি রাত পর্যন্ত বাড়ির বাইরে থাকারও অনুমতি ছিল না। আমি তো মিথ্যে বলে দেরি করে ঢুকতাম’।
এষা বলেন, 'আমরা যখন থিয়েটারে যেতাম, তখন আমার মা আমাদের সঙ্গে দিদাকেও পাঠাতেন। বিষয়টা অবশ্য মজার ছিল। আমরা দিদাকে লুকিয়ে এদিক-ওদিক দৌড়াদৌড়ি করতাম। প্রসঙ্গত, এষা তাঁর দিদার কথা বলেছেন, কারণ, ধর্মেন্দ্রর সঙ্গে বিয়ের পরও হেমা তাঁর নিজের বাড়িতেই থাকতেন। আর ধর্মেন্দ্র বেশিরভাগ সময় থাকতেন তাঁর প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে নিজের বাড়িতে। তাই দিদার সামনেই বড় হয়েছেন এষা।
যৌনশিক্ষার পাঠ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এষা দেওল বলেন, ‘আমি স্কুলে এটা সম্পর্কে শিখেছি। আমাদের স্কুলে যৌন শিক্ষার পাঠ দেওয়া হত। শিক্ষক-শিক্ষিকারা সঠিক সময়েই এটা শিখিয়েছিলেন আর এটা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। কিছু অভিভাবক আছেন যাঁরা এটা নিয়ে খুবই অস্বস্তিতে ভোগেন, লজ্জা পান।’