একেই হয়ত বলে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। হিনা খানের জন্য রকি জয়সওয়ালের প্রেমটা এমনই। ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছেন হিনা। আর এই লড়াইয়ে প্রতি মুহূর্তে তাঁর পাশে রয়েছে তাঁর পরিবার ও প্রেমিক রকি জয়সওয়াল। রবিবার প্রেমিক ও ভালোবাসার মানু রকি জয়সওয়ালের সঙ্গে একগুচ্ছ ছবি শেয়ার করে নিঃস্বার্থ ভালোবাসার কথা সামনে এনেছেন হিনা।
দীর্ঘ নোটে হিনা লিখেছেন, ক্যানসারের সঙ্গে লড়াইয়ে কীভাবে পাশে থেকেছেন রকি। এমনকি তাঁর কেমো চলাকালীন, রকিও নিজের মাথা কামিয়ে ফেলেন। এছাড়াও তাঁর পোস্টে রয়েছে রকি কীভাবে তাঁর যত্ন নিয়েছেন।
হিনা খানের পোস্ট
হিনার পোস্ট করা প্রথম ছবিতে হিনা এবং রকি মাথা ন্যাড়া অবস্থায় পাশাপাশি বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। রকির কাঁধে মাথা রেখেছেন অভিনেত্রী। আরও একটি ভিডিওতে দেখা যায়, হাসপাতালের রুমে চেয়ারে বসে হিনা। আর রকি তাঁর পা ম্যাসাজ কর দিচ্ছেন তিনি। হিনা তাঁদের ছুটি কাটানোরও বেশ কয়েকটি ছবি এবং ভিডিও শেয়ার করেছেন। একটি ভিডিওতে রকিকে পরচুলা পরে গিটার বাজাতে দেখা যায়।
অভিনেত্রী রকি জয়সওয়ালের বাড়ি থেকে রান্নাকরা খাবার পাঠানোর একটি ছবিও শেয়ার করেছেন, যেখানে ছিল হাতে লেখা একটা নোট। যাতে লেখা ছিল, ‘হ্যালো, বিউটিফুল’। একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, চোখ বন্ধ করে বিছানায় হেলান দিয়ে বসে রয়েছেন হিনা। আর রকি তাঁর মুখে ক্রিম লাগিয়ে দিচ্ছেন। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে হিনাকে খাইয়েও দেন রকি। আবার কখনও তিনি শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামে সাহায্য করেছিলেন। অসুস্থ হিনার হাতে হাত রাখেন রকি। শেষ ছবিগুলিতে একটি সেলফি তোলার সময় হাস্যোজ্জ্বল হিনাকে রকির দিকে ভালোবাসা নিয়ে তাকিয়ে থাকতে দেখা যায়।
হিনা পোস্টটি শেয়ার করে লেখেন, ‘এটা আমার জীবনের সেরা মানুষের জন্য! আমি যখন কেমো চলাকালীন মাথা ন্যাড়া হয়েছিলাম, তখন ও মাথা কামিয়ে ফেলে। যখন আমার চুল গজাচ্ছিল, তখন ও আবার নিজের চুল বাড়াতে লাগল। যে মানুষটি আমার আত্মার খেয়াল রাখে, যে সবসময় বলে আমি তোমাকে পেয়েছি। হাল ছেড়ে দেওয়ার শত কারণ থাকলেও যে মানুষটি সর্বদা আমার পাশে রয়েছেন .. এই সেই নিঃস্বার্থ মানুষটি যে শুধু ধরে রাখতে জানে। খারাপ-ভালো সমস্ত সময়ই আমরা একে অপরের পাশে ছিলাম।'
হিনা আরও লেখেন ‘আমরা সত্যFই সারাজীবন একসঙ্গে কাটিয়েছি এবং একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছি। মহামারী চলাকালীন যখন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হই, তখন সেই কঠিন সময় পার হওয়া থেকে, যখন দুজনেই আমাদের বাবাকে হারালাম তখনও একসঙ্গে কেঁদেছি এবং একে অপরকে সান্ত্বনা দিয়েছি। আমার মনে আছে মহামারীর সময় ও কোভিডে আক্রান্ত হয় নি। তবু ও সারাদিন ৩ টে মাস্ট পরে আমার সঙ্গে থাকত, আমার যত্ন নিত। আর এখন আমার এই রোগ ধরা পড়ার পর ও সবকিছু ছেড়ে আমার দেখাশোনা করছে।’
হিনা রকিকে তার 'গাইডিং লাইট' বলেছেন
‘আমর ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করার আগে প্রশ্নাবলীর তালিকা প্রস্তুত করা থেকে শুরু করে সবকিছু খতিয়ে দেখা যে আমি সঠিক দিকেই এগোচ্ছি। যেদিন থেকে আমার কেমো শুরু হয় সেদিন থেকে আজ অবধি ও-ই আমার পথপ্রদর্শক ছিলেন। আমাকে পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে আমাকে জামাকাপড় পরিয়ে সাজিয়ে তোলা, সবই করেছে রকি... ও আমার চারপাশে দুর্ভেদ্য সুরক্ষার কবজ তৈরি করে রেখেছে।’
রকির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন হিনা
হিনা লেখেন, ‘বিশেষত গত দুই মাস আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। আমি বুঝতে পেরেছি তুমি আমার জীবনে পাওয়া সেরা মানুষ। যখন সবকিছু সহজ ছিল না তখন তুমিই আমাকে ঠিক করেছেন এবং চারপাশের সবকিছু ঠিক করেছো। তুমিই আমায় নিজেকে ভালোবাসতে শিখিয়েছ, আমার নিঃশ্বাস নেওয়াকে এত সহজ করে দিয়েছো। আমার হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে তোমাকে ধন্যবাদ। আমি খুব দুঃখিত যদি আমি কখনও আপনাকে আঘাত করে থাকি।’
এর আগেও এবং এখনও আমরা দুজনে একসঙ্গেই হেসেছি, কেঁদেছি, চোখের জল মুছেছি। বাকি জীবনেও এটা চালিয়ে যাব। আমি তোমাকে ভালোবাসি। তুমি সত্যিই ঈশ্বরের আশীর্বাদ। আমার সমস্ত ডাক্তার এবং হাসপাতালের কর্মীরা প্রায়শই আমাকে এই কথাই বলেন, আর আমিও এই একই কথা বলছি। এমন একজন পুরুষ পাওয়ার মতো আশীর্বাদ যেন প্রতিটি নারীর জীবনেই আসে। @rockyj1 কেয়া হো তুম (হোয়াট আর ইউ)'
প্রসঙ্গত রকি জয়সওয়ালের সঙ্গে হিনা খানের আলাপ, তাঁর প্রথম ধারাবাহিক ‘ইয়ে রিশতা কেয়া কেহলাতা হ্যায়’ সময় থেকে, সেই তখন থেকেই তাঁদের প্রেম ও সম্পর্কের সূত্রপাত।