সবে মাত্র গতকাল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস গেল। এত হইচই, এত অনুষ্ঠান, তারিখ বদলাতে না বদলাতেই ভাষাটার কঙ্কালসার চেহারা বাইরে বেরিয়ে এল। জনপ্রিয় খাবার ডেলিভারি অ্যাপের বাংলা বানান দেখে রীতিমত ভিরমি খেতে হল। এ কী অবস্থা বাংলার বাঙালির!
আজ এক ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনটি ছবি পোস্ট করেন। সেখানে জোমাটো অ্যাপটির খাবারের নাম বাংলায় দেখা যাচ্ছে। সে বাংলা হরফে যতই খাবারের নাম লেখা থাক আপনার উদ্ধার করতে গিয়ে কিন্তু মুখের কলকব্জা সব খুলে হাতে চলে আসবেই আসবে। তার থেকেও বড় কথা এখানে যে খাবারগুলোর নাম শেয়ার করা হয়েছে সেগুলো একটিও আমাদের চেনা খাবারের নাম নয়। আসলে ওগুলো খাবারের নাম নাকি বোমার বোঝা দায়!
কী লেখা ছিল? অ্যাপের কল্যাণে নারকোল পাটিসাপ্টাটা নরকোল পটিশপ্ততে পরিণত হয়েছে, গুড় ভরা বড় তালশাঁস সন্দেহ হয়েছে গুর ভোরা তালসাস সন্দেশ বিগ! সর্বোপরি বাঞ্ছারামের নামটাই পাল্টে বাঁছারামসি হয়ে গিয়েছে! আপনি চেনেন এমন নামের কোনও মিষ্টির দোকান? এছাড়া বাঙালির সাধের কড়াইশুঁটির কচুরি পরিণত হয়েছে কারাই সুতির কাছোরি, ৪ পিস হয়েছে ৪ পিসি, কচি পাঁঠার ঝোল হয়েছে কোচি পাথার ঝোল (পাঁঠাটা নিশ্চয় এতক্ষণে হাত পা ছুঁড়ে কাঁদছে!), মাংসর ঘটিগরম কালের চক্করে হয়ে গিয়েছে মাংশর ঘোটি গ্যারম, ইত্যাদি প্রভৃতি।
বানানের নমুনা দেখে এটা স্পষ্ট যে আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স বা স্রেফ ট্রান্সলেটরের উপর ভিত্তি করে বানানগুলো রাখা হয়েছে অ্যাপে, সামান্যতম চেক পর্যন্ত করা হয়নি। যে ভাষায় ব্যবসা বাড়ানোর জন্য অ্যাপে নতুন ভাষা আনা হল তার প্রতি সামান্য নজর থাকবে না? যত্ন থাকবে না? যা খুশি একটা লিখে দেওয়া কি এতটাই সহজ? আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় গোটা বিষয়টা নিয়ে যতই হাসি মজা চলুক না কেন, এটা যে একটা ভয়ঙ্কর দিক সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।