চেন্নাই: অভিনেত্রী তথা সঞ্চালিকা চিত্রাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার দায়ে গ্রেফতার তাঁর স্বামী হেমন্ত। গত ৯ ডিসেম্বর চেন্নাই শহরতলির একটি হোটেলের বাথরুম থেকে উদ্ধার হয় চিত্রার ঝুলন্ত দেহ। আইনি বিয়ের ২ মাসের মধ্যেই মৃত্যু হল অভিনেত্রীর, ঘটনায় গত কয়েকদিন ধরেই চাঞ্চল্য দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে। গতকাল গভীর রাতে চিত্রার স্বামীকে গ্রেফতার করল চেন্নাই পুলিশ। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারা অনুসারে (আত্মহত্যা প্ররোচনা) গ্রেফতার হন হেমন্ত।
পুনমাল্লি পুলিশ ডিভিশনের অ্যাসিস্টেন্ট কমিশনার তথা এই মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক কে এন সুদর্শন জানান, ‘গত কয়েকদিনের তদন্তের পর আমার গতকাল (সোমবার) রাতে হেমন্তকে গ্রেফতার করেছি প্রয়াতকে (চিত্র) আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার জন্য। তাঁকে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে পেশ করা হয়েছে। এবং বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে পোন্নেরি জেলে’।
শ্যুটিং লোকেশন কাছে হওয়ায় চেন্নাই শহরতলির ওই হোটেলে হেমন্তে সঙ্গে বসবাস করছিলেন ২৯ বছর বয়সী অভিনেত্রী। তবে পুলিশকে চিত্রার স্বামী জানিয়েছে ঘটনার সময় হোটেল রুমে ছিল না সে। গভীর রাতে শ্যুটিং থেকে ফিরে চিত্রা তাঁকে বাইরে অপেক্ষা করতে বলে। জানায়, সে স্নান করবে। তবে দীর্ঘ সময় দরজা না খোলায় এক হোটেলকর্মীর সাহায্য নিয়ে দরজা খোলে হেমন্ত। এবং স্ত্রীর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায়। এরপর ৯ তারিখ ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ পুলিশকে ফোন করেন চিত্রার স্বামী।
দক্ষিণী অভিনেত্রী তথা সঞ্চালিকা চিত্রার মৃত্যুর জন্য স্বামীর বিরুদ্ধেই শুরু থেকে অভিযোগের আঙুল তুলছেন প্রয়াতের মা। তাঁর দাবি মেয়ে শক্ত মনের মানুষ, আত্মহত্যা করবার পাত্রী সে নয়। এই মৃত্যুর ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে মেনে নিতে রাজি নয় পরিবার। তবে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন চিত্রা। এখনও ফাউল প্লে-র কোনও সম্ভাবনা চোখে পড়েনি।
তদন্তে উঠে এসেছে, আর্থিক বিষয়-সম্পত্তি নিয়ে এবং বেশ কিছু ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় নিয়ে হেমন্তের সঙ্গে বিবাদ হয়েছিল চিত্রার। পেশায় ব্যবসায়ী হেমন্ত। দক্ষিণ ভারতীয় টেলিভিশন জগতের জনপ্রিয় মুখ ভি জে চিত্রা চিন্না পাপা পেরিয়া পাপা, সর্বানন মীনাটচি, ডার্লিং ডার্লিং, ভেলুনাচি প্রমুখ সিরিয়ালে অভিনয়ের সূত্রে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছান চিত্রা।
অন্যদিকে চিত্রার স্বামীর গ্রেফতারির দিন থেকেই এই মামলার তদন্ত শুরু করল রিজিয়ন্যাল ডিভিশন্যাল অফিসার (RDO)। সাত বছর বা তার কম সময়কাল বিবাহিত কোনও নারীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে তা খতিয়ে দেখে আরডিও। জানুয়ারি মাসে সামাজিকভাবে বিয়ের বাঁধনে বাঁধা পড়ার কথা ছিল চিত্রা-হেমন্তের। তার আগেই চলে গেলেন নায়িকা। দোষী সাব্যস্ত হলে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে হেমন্তের।