দেখতে দেখতে একটা বছর অতিক্রান্ত। গত বছর ৭ই জুলাই প্রয়াত হয়েছিলেন বলিউডের ‘ট্রাডেজি কিং’ দিলীপ কুমার। অভিনেতার মৃত্যুর পর থেকেই নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন সায়রা বানু। ৫৬ বছরের দাম্পত্য সঙ্গীর বিচ্ছেদে শোকস্তব্ধ সায়রা। গত এক বছরে সেভাবে জনসমক্ষে আসেনি সায়রা, স্বামীর বিচ্ছেদে আজও ঢুকরে কেঁদে চলেছেন তিনি।
১২ বছর বয়সে কিশোরী সায়রা প্রেমে পড়েছিলেন নায়ক দিলীপ কুমারের। বয়সে অনেকখানি বড় দিলীপ কুমারকেই বিয়ে করবার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। ১৯৬৬ সালের ১১ অক্টোবর বিয়ের পর্ব সারেন দুজনে। নিঃসন্তান এই দম্পতি পাঁচ দশক পরস্পরকে আগলে রেখেছিলেন। দিলীপ কুমারের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তের স্মৃতিগুলোই এখনও বাঁচিয়ে রেখেছে তাঁকে, স্বামীর মৃত্যুবার্ষিকীতে অকপট স্বীকারোক্তি সায়রার।
তিনি লেখেনে, ‘আমি মুখ ফিরিয়ে নিই, বালিশ মুখ গুঁজে ফেলি এবং ঘুমানোর চেষ্টা করি। মনে হয় এমনটা করলে আবার যখন চোখ খুলব দেখব উনি আমার পাশেই শুয়ে আছেন। সূর্যের কিরণ ওঁনার গোলাপি গালে পড়ছে, আর সেটা জ্বলজ্বল করছে, সারা ঘরটা আলো করে দিয়েছে। তবে এইটুকু বলব আমি সত্যি খুব সৌভাগ্যবান যে জীবনের ৫৬ গুলো বছর ইউসুফ সাহাব আমার পাশে ছিলেন। সারা বিশ্ব জানে আমি ১২ বছর বয়সে ওঁনার প্রেমে পড়েছিলাম। আমার স্বপ্ন ছিল উনিই একমাত্র আমার স্বপ্নের পুরুষ। যখন ওই স্বপ্নটা সত্যি হল আমি জানতাম আমিই একমাত্র ওঁনার গুণমুগ্ধ ছিলাম না, লম্বা লাইন ছিল। সেই লাইন পেরিয়ে আমি মিসেস দিলীপ কুমার হয়েছিলাম।’
ইটাইমসের হয়ে সায়রা আরও লেখেন, আজও দিনের প্রতিটা মুহূর্ত চোখের সামনেই প্রয়াত স্বামীকে ঘোরাফেরা করতে দেখেন তিনি। সায়রার লেখনিতে, ‘যখন আমার কোনও স্টাফ টিভিতে কিছু একটা চালায়, হয়ত ওঁনার সিনেমা চলছে বা কোনও গান চলছে আমি সেটা দেখি না। কারণ আমি জানি আমার চোখের জলগুলো ধরে রাখতে পারব না। দিলীপ সাহাবের কোনও ছবি দেখলেই আমার চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে’।
সায়রা বানু ও দিলীপ কুমারের প্রেম কাহিনি বলিউডের কোনও ছবির চিত্রনাট্যকে হার মানায়। স্বামীর হাত সায়রা শক্ত করে ধরে রেখেছিলেন শেষ সময় পর্যন্ত! দিলীপ কুমার ও সায়রা বানুর মধ্যে বয়সের ব্যবধান ছিল ২২ বছরের। কিন্তু তা কখনও চোখে পড়েনি সেভাবে। বরং, একে-অপরকে ধরে রেখেছিলেন আঁকড়ে। অনস্ক্রিনে ‘বৈরাগী’, ‘গোপী’, ‘সাগিনা মাহাতো’-র মতো ছবিতে তাঁদের অভিনয় সবার মন কড়েছে। অনস্ক্রিন হোক বা অফস্ক্রিন, সর্বত্রই হিট দিলীপ-সায়রা জুটি।