লেখক-গীতিকার-পরিচালক গুলজার পরিচালিত ‘আঁধি’ ৫০ বছর পূর্ণ করল। ১৯৭৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ছবিটি। এই ছিবিতে অভিনয় করেছিলেন প্রয়াত অভিনেতা সঞ্জীব কাপুর এবং মহানায়িকা সুচিত্রা সেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গুলজার জানান তিনি মহানায়িকাকে 'স্যার' বলে ডাকতেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আঁধি ছবির শ্যুটিং চলাকালীন তিনি আমাকে স্যার বলে ডাকতে শুরু করেন। এদিকে কলকাতার সবাই ওঁকে ম্যাডাম বলে ডাকেন। যেহেতু আমি ওঁর জুনিয়র, তাই আমি ওঁকে অনুরোধ করি যে, তিনি যেন আমাকে স্যার বলে না ডাকেন। কিন্তু তাও তিনি আমাকে স্যারই বলতেন। এরপর আমিও ওঁকে স্যার বলে ডাকা শুরু করি। আমিও ওঁকে ওই সম্বোধন করতাম আর তিনিও আমাকে স্যার বলেই ডাকতেন। আমরা সব সময় বাংলায় কথা বলতাম।’
আরও পড়ুন: 'রনিতকে লাথি মেরে বাস থেকে বের করে দিই…', লাগানের শ্যুটিংয়ে কেন এমন করেন অপূর্ব লাখিয়া?
সুচিত্রা সেনের সঙ্গে কাজ করার সময়ের কথা মনে করে গুলজার বলেন, ‘মানুষ তাঁকে নিয়ে যে ধরনের ধারণা পোষণ করতেন, তিনি কিন্তু মোটেই তেমনটা ছিলেন না। তিনি অত্যন্ত আন্তরিক ছিলেন। আমাদের মধ্যে যথেষ্ঠ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। তিনি বেশ কিছু সেরা কাজ করেছেন হিন্দিতে। হৃষিদার ‘মুসাফির’ (১৯৫৭), অসিত সেনের ‘মমতা’ (১৯৬৬), রাজ খোসলার ‘বোম্বাই কা বাবু’ (১৯৬০)। আপনি এই তালিকায় আমার ‘আঁধি’ও যোগ করতে পারেন। আমার মনে হয় উত্তম কুমার এবং সুচিত্রা সেনকে যথাযথ স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আমি ওঁকে খুব ভালোবাসতাম এবং শ্রদ্ধাও করতাম। তবে তিনি বিচার বিবেচনা করে বন্ধু নির্বাচন করতে পারতেন।'
কিন্তু গুলজার তাঁর ছবি ‘আঁধি’তে কাজ করার জন্য কীভাবে সুচিত্রা সেনকে রাজি করিয়েছিলেন? সে সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি জানান যে, ‘আঁধি’ ছিল মহানায়িকার পছন্দের হিন্দি ছবিগুলির মধ্যে একটি। আরেকটি ছবি ছিল অসিত সেনের ‘মমতা’।
আরও পড়ুন: তথাগতর আগেই প্রেম সুমিতের সঙ্গে, সব দায় চুমুর! ‘বিয়ে হবে না বিচ্ছেদ বলা মুশকিল’, দাবি ঋতাভরীর
গুলজার আরও জানান যে, তিনি প্রযোজক সোহানলাল কানওয়ারের জন্য আরেকটি চিত্রনাট্য নিয়ে সুচিত্রা সেনের কাছে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি চিত্রনাট্যে কিছু পরিবর্তন চেয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব না হওয়ায় তাঁরা আর এক সঙ্গে কাজটি করতে পারেন না।
তিন বছর পর যখন তিনি ‘আঁধি’ ছবির স্ক্রিপ্ট নিয়ে কলকাতায় সুচিত্রা সেনের সঙ্গে দেখা করেন, তখন অভিনেত্রী বলেন, ‘এবার আমি কোনও পরামর্শ দেব না।’
‘আঁধি’ ছবির স্ক্রিপ্ট দেখে অভিনেত্রীর প্রতিক্রিয়া কেমন হয়েছিল তাও ভাগ করে নেন গুলজার। তিনি বলেন, ‘আঁধির গল্পটা ওঁর খুব পছন্দ হয়েছিল। তিনি আমাকে ঠান্ডা দুধ খেতে দিয়েছিলেন। আমাদের মধ্যে এটাই চল ছিল। রাখী (গুলজারের স্ত্রী) ও সেখানে ছিলেন। আমার কাছে সুচিত্রা সেনের কোলে আমার মেয়ে মেঘনার ছবি আছে। ওঁর মেয়ে মুনমুনও তখন ছোট। ওঁর সঙ্গে কাজ করা জীবনের এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে।’