অভিনেত্রী, প্রযোজক, গায়িকা হিসাবে নিজের প্রতিভা আগেই প্রকাশ করেছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। এবার লেখিকা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করলেন। প্রিয়াঙ্কার আত্মজীবনী ‘আনফিনিসড’। বইয়ে জীবন সম্পর্কে তাঁর অভিজ্ঞতা, দুঃখ, পিতৃতান্ত্রিক সমাজ এবং পক্ষপাতিত্বের মতো নানা বিষয় নিয়ে লিখেছেন।
আবেদনময়ী একটি গান শ্যুটের সময় অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়াকে দৃশ্যে প্যান্টি দেখাতে বলেছিলেন পরিচালক। মূলত, দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য। সেই কথা আগেই নিজের আত্মজীবনী ‘আনফিনিসড’এ জানিয়েছেন অভিনেত্রী। অপর এক প্রযোজক তথা পরিচালক প্রিয়াঙ্কাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন কসমেটিক্স সার্জারির মাধ্যমে স্তনের আকার পরিবর্তনের। নিজের আত্মজীবনীতে কয়েক বছর আগের সেই সকল অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন তিনি।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বিনোদন জগতে নিরাপত্তাহীনতা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছিল প্রিয়াঙ্কাকে। সেই প্রশ্নের জবাবে প্রিয়াঙ্কা বলেন, নিরাপত্তাহীনতার জন্যই এতদিন মুখ বুজে ছিলেন ইন্ডাস্ট্রিতে।
এন্টারটেইনমেন্ট টুনাইটকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানান, তিনি সাহসী দৃশ্যটি করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু পরিচালকের বলার ধরণে তাঁর মনে হয়েছিল, পরিচালক তাঁকে অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করছেন। অভিনেত্রী নিজেকে সেই সময় পরিচালকের চোখে ছোট মনে করছিলেন। এরপরই তিনি কোনো কিছু না ভেবে ছবি থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছিলেন। সেই সময় বেশি কিছু বলার তিনি সাহস দেখাননি কারণ তাঁকে সিস্টেমের মধ্যে কাজ করতে হবে সেই কথা মাথায় রাখতে হয়েছিল। তাই জন্য তিনি চুপচাপ নিজের কাজ চালিয়ে যান।
তিনি আরও বলেন, ‘কেন আমি সেই সময় বলব? আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলাম। ভয় পেয়েছিলাম। সেই সময় আমাকে কেরিয়ার বানানোর কথা মাথায় রাখতে হয়েছিল। সব কিছু আমার থেকে দূরে চলে যাক সেটা আমি কখনোই চাইনি। মেয়েদের বলছি, তোমরা ভুল ধরণের দৃষ্টিকে প্রশ্রয় দিও না। কাজের ক্ষেত্রেও কঠোর হও না। হাসি মুখে মনে করো সব কিছু ঠিক আছে। আমিও দীর্ঘদিন এটাই করে এসেছি নিরাপত্তাহীনতার জন্য। সবাই পুরোপুরি সঠিক হয়না। কালো-সাদার মধ্যে সকলে বাঁচতে পারে না। অনেকেই ধূসরে বাঁচে, সেটাও ঠিক আছে’।
২০০০ সালে বিশ্ব সুন্দরী খেতাব জেতার পর প্রথম ছবির অডিশন দিতে গিয়ে আরও একটি খারাপ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কা। স্বাধীনচেতা মনোভাবাপন্ন হওয়ার দরুন প্রিয়াঙ্কা জানান, প্রথমে সামান্য কিছু কথোপকথনের পরই পরিচালক তথা প্রযোজক তাঁকে একপাক ঘোরার কথা বলেন। তিনি সেটা করেন। এরপরই তিনি অভিনেত্রীর দিকে রূঢ় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন। এমনকি প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করেন। সেই পরিচালক তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, প্লাস্টিক সার্জারি করানোর। তাঁর শরীর সম্পর্কে নানা অশালীন মন্তব্য করেন। প্রিয়াঙ্কাকে বলেন, অভিনেত্রী হতে গেলে শারীরিক গঠন, স্তনের গঠন এবং নিতম্বের বিষয় নজরে রাখতে হবে, এমনকী লস অ্যাঞ্জেলসে ডাক্তারের খোঁজ দেন।