ভারতীয় ছবির জন্য আরও অনেককিছুই করতে পারতেন দিলীপ কুমার কিন্তু তা করেননি তিনি। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের জন্য দিলীপকুমারের স্মরণিকায় এ কথা লিখেছিলেন নাসিরুদ্দিন শাহ। আরও লিখেচিলেন যে তাঁর অবাক লাগে এই ভেবে যে দিলীপকুমারের মতো ভারতীয় ছবির এতবড় কিংবদন্তি এবং এত দক্ষ একজন অভিনেতা হয়েও নিজের গোটা কেরিয়ারে এতটা 'সেফ গেম' কী করে খেলতে পারেন।
এখানেই থামেননি নাসির। ওই লেখায় নিজের মনোভাব ব্যক্ত করতে এই কিংবদন্তি অভিনেতা আরও লেখেন যে নিশ্চিতভাবে 'দিলীপ সাহাব' এর কিছু কাজ কালজয়ী। এবং তা ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে অমলিন থেকে যাবে। কিন্তু তাঁর যা ক্ষমতা ছিল, বলিউড ইন্ডাস্ট্রির যে স্থানে তাঁর অধিষ্ঠান ছিল সেই জায়গা থেকে বিচার করলে তিনি আরও অনেককিছু করতে পারতেন ভারতীয় ছবির জন্য, তবে তা করেননি। অভিনয় ছাড়া একটি ছবিও পরিচালনা করেননি। প্রযোজনা করেছিলেন বটে তবে তাও মোতে একটিমাত্র ছবি। তাছাড়া নিজের মহাসমুদ্রের মতো অভিজ্ঞতা ভাগ করে যাননি তেমন, কোনও নতুন তারকা কিংবা অভিনেতাকে নিজের হাতে তৈরি করেও যাননি। আরও আছে। সাতের দশকের পরে এমন কোনও ছবি উপহার দেননি যা ভবিষ্যতের অভিনেতাদের দিশা দেখতে পারে। অথচ সেই ক্ষমতা তাঁর ছিল পুরোদমে। এমনকি তাঁর আত্মজীবনীতেও বিশেষ কিছু কাজ করে যাননি 'দিলীপ সাহাব'। বদলে কী করেছেন? না, যা তাঁর ভীষণ পছন্দের অর্থাৎ বিভিন্ন সামাজিক কাজের সঙ্গে নিজেকে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে নিয়েছিলেন।
নাসিরের এই মন্তব্য ঘিরেই এরপর শুরু হয় ব্যাপক বিতর্ক। এই প্রসঙ্গে 'স্পটবয়'-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে 'মাসুম' খ্যাত অভিনেতা দৃঢ়ভাবে জানান যে তিনি তাঁর বক্তব্যের থেকে একচুলও সরবেন না। তিনি যা বক্তব্য পেশ করেছেন অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় ভেবেচিন্তেই বলেছেন। ' যাঁরা আমার বক্তব্য নিয়ে এত লাফালাফি করছেন তাঁরা যদি আমার লেখাখানা পুরোটা পড়ত তাহলে সহজেই বুঝতে পারতেন দিলীপ কুমারের ব্যাপারে আমি কতটা শ্রদ্ধাশীল। আদতে তাঁর কাজের ব্যাপারে তারিফই করেছি আমি। তাঁর অভিনয় ক্ষমতা কিংবা দক্ষতার সঙ্গে আমার সেই 'নালিশ'-এর কোনও যোগ নেই। এরপরেও যদি কেউ তা না বোঝেন তার দায়িত্ব আমার নয়। আমি পাত্তাই দিই না সেসব মন্তব্যে! তাই যা বলেছি বেশ করেছি! '