নুসরত জাহানের সন্তানের পিতৃপরিচয় প্রকাশ্যে আসতেই আক্ষেপের সুর শোনা গেল লেখিকা তলসিমা নাসরিনের গলায়। অভিনেত্রী সম্পর্কে এতদিন ধরে তাঁর যে ধারণা হয়েছিল, তা একবারেই ভুল। ফেসবুক পোস্ট করে সে কথাই জানালেন নির্বাসিত এই লেখিকা। কিন্তু কেন এই উপলব্ধি হল তাঁর? কিছুদিন আগেও নুসরতের সাহসী পদক্ষেপকে কুর্নিশ জানাতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে।
বৃহস্পতিবার একটি ফেসবুক পোস্টে তসলিমা লেখেন, 'কলকাতার অভিনেত্রী নুসরত যতটা না বিল্পবী, তার চেয়ে বেশি ভেবে নিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম নুসরত তাঁর সন্তানকে শুধু নিজের সন্তান হিসেবে পরিচয় দেবে। কার স্পার্মে সে গর্ভবতী হয়েছে, সেটা মোটেও উল্লেখযোগ্য বিষয় হবে না। কিন্তু, না, নুসরত আসলে অন্য যে কোনও রমণীর মতোই রমণী।'
উল্লেখ্য, গত ২৬ অগস্ট পুত্র সন্তানের জন্ম দেন অভিনেত্রী সাংসদ নুসরত জাহান। এতদিন সন্তানের পিতৃপরিচয় প্রকাশ্যে আনেননি নায়িকা। মনে করা হচ্ছিল, মায়ের পরিচয়েই সন্তানকে মানুষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। যদিও সঙ্গী যশ দাশগুপ্ত পুরো বিষয়টাতেই ছায়ার মতো সঙ্গে ছিলেন নুসরতের।
এদিকে প্রকাশ্যে এসেছে নুসরতের ছেলের জন্ম সংশাপত্র। কলকাতা পুরসভার সার্টিফিকেটে লেখা রয়েছে নুসরতের ছেলের বাবার নাম দেবাশিস দাশগুপ্ত। কে এই দেবাশিস দাশগুপ্ত? একটু স্মৃতিতে জোর দিলেই নামটি শোনা লাগবে, মাস কয়েক আগেই ভোটের হলফনামা জমা দেওয়ার সময় যশ উল্লেখ করেছিলেন তাঁর প্রকৃত নাম, দেবাশিস দাশগুপ্ত। পুরসভার রেকর্ড অনুযায়ী, নুসরত পুত্রের পুরো নাম ঈশান জে (জাহান) দাশগুপ্ত। কলকাতা পুরসভার রেকর্ডে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে নুসরতের সন্তানের বাবা, যশ দাশগুপ্তই।
এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই সামাজিক মাধ্যমের পাতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তলসিমা নাসরিন। তাঁর কথায়, ‘নুসরত তাঁর সন্তানের বার্থ সার্টিফিকেটে উল্লেখ করেছেন সন্তানের পিতার নাম। তাঁর সর্বক্ষণের সঙ্গীই সন্তানের পিতা। নিখিলের সঙ্গে ভারতবর্ষে তার বিয়ে-রেজিস্ট্র হয়নি। সুতরাং নিখিলকে তাঁর স্বামী না বলার পেছনে যুক্তি আছে। কিন্তু, এই লুকোচুরির দরকার ছিল না। আমি অবাক হবো না যদি কোনওদিন প্রকাশ হয় যে গোপনে সে যশকে বিয়েও করেছে। তাহলে যে কোনও ট্রাডিশানাল মেয়ের চেয়ে নুসরাতের তফাৎটা কোথায়?’
শেষে তিনি লেখেন, 'প্রচুর লেখালেখি, প্রচুর স্বাগত জানানো, শুভেচ্ছা জানানো, স্যালুট জানানো, এসব বরং এক্সট্রাঅরডিনারি সাহসী এবং পুরুষতন্ত্রের ছক ভাঙ্গা মেয়েদের জন্য তোলা থাকুক। ট্রাডিশানাল মেয়েদের পেছনে সময় নষ্ট করা, তাঁদের বাহবা দেওয়া আপাতত স্থগিত থাকুক।' তসলিমার পোস্ট থেকে এতটুকু স্পষ্ট, এতদিন নুসরতের সাহসকে তিনি যে বাহবা জানিয়ে ভুলই করে ফেলেছিলাম, তা খানিকটা ঘুরিয়েই স্বীকার করলেন তিনি।