২১ বছর ধরে নিময়-রীতি মেনে শ্বশুরবাড়িতে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো পালন করেন রত্না চট্টোপাধ্যায়, এ বছর তাঁর অনথ্যা হল না। ইতিমধ্যেই এই বাড়ি বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিক্রি করে দিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। পুজোর ছুটি শেষে রত্নাদেবী-কে বাড়ি খালি করবার নোটিশও পাঠাবেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়, সেই হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। সেই সব বিতর্কের মাঝেই কোজাগরী লক্ষ্মীর আরাধনায় ব্রতী চট্টোপাধ্যায় বাড়ির ছোট বউ।
এদিন পুজো চলাকালীনই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়। মাায়ের ভোগ রান্না থেকে লাল পেড়ে সাদা শাড়িতে পুজোর জোগাড়, সবই নিজের হাতে করলেন রত্না দেবী। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠে, শোভন বৈশাখীকে সিঁদুর পরানোর জবাব হিসেবেই কী বাড়ির লক্ষ্মীপুজোয় এমন সক্রিয়তা? তাঁর সাফ বক্তব্য, 'নারায়ণ' বাড়ি ছেড়ে গেলেও, 'লক্ষ্মী' এই বাড়ি ছেড়ে যাবে না।পুজোর ফাঁকেই তিনি নিজেকে এই বাড়ির লক্ষ্মী বলে দাবি করেন। তাঁর কথায়, ‘প্রতি বছর লাল পেড়ে সাদা শাড়ি পরে আমি লক্ষ্মী পুজোর অঞ্জলি দিই, আমি এই বাড়ির মা লক্ষ্মী। শোভনবাবু আমাকে মা লক্ষ্মী করেই এনে ছিলেন। মা লক্ষ্মী রয়ে গিয়েছেন, নারায়ন চলে গিয়েছেন। আমি চট্টোপাধ্যায় বাড়ির ছোট বউ। আমি শ্বশুরবাড়ির সব লোকজনকে নিয়ে প্রতি বছর লক্ষ্মী পুজো করি, এবারও সকলে উপস্থিত রয়েছে’।
দশমীর দিন মা দুর্গার সামনে বৈশাখীর সিঁথিতে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সিঁদুর পরানো নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। স্বামী-স্ত্রীর কাদা ছোড়াছুঁড়ি এখন প্রকাশ্যে। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে শোভনবাবুর সিঁদুর পরানোর ঘটনার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়ে বৈশাখীকে ‘রক্ষিতা’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন রত্না। পালটা শোভন নিজের বিবাহিত স্ত্রীকেই ‘রক্ষিতা’ বলে আক্রমণ করেন।
২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর বেহালার বাড়ি ছেড়ে গোলপার্কের এক বহুতলে এসে ওঠেন কলকাতার প্রাক্তন মহানাগরিক। সেই থেকে আর পর্ণশ্রীর বাড়িতে ফিরে যাননি তিনি। ছেলে সপ্তর্ষি ও মেয়ে সুহানিকে নিয়ে বেহালার বাড়িতেই থাকেন রত্না দেবী। সেপ্টেম্বর মাসেই বেহালার পৈতৃক বাড়িটি শোভন চট্টোপাধ্যায় কোটি টাকারও বেশি দামে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিক্রি করে দিয়েছেন। আইনত ওই বাড়ির মালিক এখন বৈশাখী দেবী। তবে বাড়ি না ছাড়ার পণ নিয়েছেন রত্না চট্টোপাধ্যায়ও। সব মিলিয়ে দিন দিন জটিল হচ্ছে শোভন-রত্নার দাম্পত্য কলহ।