পুজো চাই না উৎসব-- আপাতত এই নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত বাংলার মানুষ। একাংশের দাবি, ভক্তিভরে দুর্গা ঠাকুরের সামনে মাথা নোয়ানোই আসল। আরেকাংশ দাবি করেছে, উৎসব না হলে অনেকের রুটিরুজিতে ব্যাঘাত ঘটবে, যেমন বেলুন ওয়ালা, ফুচকা ওয়ালা, ঢাকি বা ফুটপাথে যারা পোশাক বিক্রি করেন। নিম্নবিত্ত মানুষের পেটে পড়বে টান।
এবার ইমন চক্রবর্তী ফেসবুকে সেই সম্পর্কে লিখলেন, ‘বিচারও চাই, উৎসবও চাই’। সঙ্গে লেখেন, ‘ঢাকি থেকে ফুচকাওয়ালা, সবার মুখে হাসি চাই’। তবে এই পোস্টের কারণে, রীতিমতো ট্রোল হয়েছেন গায়িকা সোশ্যাল মিডিয়াতে। এমনকী, কদিন আগেও মমতা-ঘনিষ্ট দাবি করে তাঁর ছবি বিকৃত করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়াতে। মমতা আর তাঁর পাশাপাশি দাঁড়ানো ছবিতে, ইমনের মুখের উপর জোকারের মুখ বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
এবার ইমনের এই ‘উৎসব চাই’ পোস্টে একজন মন্তব্য করলেন, ‘নির্যাতিতার বাবা-মায়ের মুখে কীভাবে হাসি ফুটবে সেটা ভেবেছেন?’ জবাবে ইমন লিখলেন, ‘সে হাসি তো মিলিয়ে গেছে দাদা চিরতরে। তাও ভাবুন গোটা পশ্চিমবঙ্গ রাস্তায় নামছে। রোজ নামছে। কিন্তু এই অসহায় মানুষগুলোর কী হবে? শিল্পীদের কী হবে? কীভাবে চলবে, পারলে সেটাও একটু ভাববেন।’
দ্বিতীয়জনের মন্তব্য, ‘আবার সেই দু নৌকায় পা রেখে পোষ্ট।এইসবের জন্যই আপনারা কিছু শিল্পী আছেন যারা মানুষের মন থেকে হারিয়ে যাচ্ছেন’।
তৃতীয়জন লেখেন, ‘পুজো তো হবেই, কারও ফতেয়ার জন্য অপেক্ষা করব না। জীবনের প্রতিটা দিনই তো উৎসব। আজ মরলে, কাল দু দিন। কোনোকিছুই থেমে থাকবে না। প্রতিবাদ করা মানুষ ভুলে গেছিল। প্রতিবাদ দরকার ইমন তুমি বলেছিলে মনে আছে, যেদিন তোমাকে আক্রমণ করা হয়েছিল। ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে প্রতিবাদ করতে আবেদন করেছিলে। আমরা সবাই তোমার সঙ্গে ছিলাম। ভালো লাগবে যদি আরজি করের এই নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে গান গাইতে। স্বাস্থ্য ও বিচার ব্যবস্থার ভেঙে পড়া নিয়ে গান গাইতে। জানি চ্যারিটি বিগেনস অ্যাট হোম। আমদের নিশ্চয়ই কবে আমার বড়িতে হচ্ছে তার জন্য অপেক্ষা করা আর উচিত নয়!’
তাতে ইমন জবাব দেন, ‘পারলে আমার পেজটা একটু ফলো কোরো ভাই। 'আমি প্রতিবাদ করছি' বলে কি চিৎকার করব? কীভাবে জানাব যে প্রতিবদ করছি? গান গাইছি কি না দেখো। অনুরোধ করলাম। একটু খেয়াল রাখলেই দেখতে পারবে। আমি আজ যা, তা তোমাদের জন্য। তোমাদের ভালোবাসায়। কিন্তু প্রত্যেক মুহূর্তে এরকম আর তো নিতে পারছি না।’