ছেলেবেলায় বেশ কয়েকবার শ্লীলতাহানি-র শিকার হয়েছিলেন অভিনেত্রী নীনা গুপ্তা। নিজের অটোবায়োগ্রাফি ‘সচ কহু তো’তে এই ব্যাপারে লিখেছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। যা ভাইরাল হয়েছে সম্প্রতি। আর নীনার সঙ্গে হওয়া সেই ভয়বহ অভিজ্ঞতা জানতে পেরে অনেকেই চমকে উঠেছেন। কেউ কেউ আবার নিজের জীবনের অভিজ্ঞতার সঙ্গে মিলও খুঁজে পেয়েছেন।
এক ডাক্তার ও দরজি-র দ্বারা শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছিলেন নীনা। আর গোটা ঘটনায় এতটাই ভয় পেয়েছিলেন যে, মাকেও বলতে পারেননি সেকথা! নীনা তাঁর বইতে লেখেন যৌবনের শুরুতে অনেক মেয়েই তার পরিবারকে ভয়ে সেইসব কথা বলতে পারে না। কারণ তার ফলে তাঁদের যে ‘স্বল্প স্বাধীনতা’ দেওয়া হয়েছে, তাও কেড়ে নেওয়া হবে।
নীনা তাঁর বইতে লিখেছেন, ‘চোখের ইনফেকশনের জন্য ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম। সঙ্গে ভাই ছিল। ওকে ওয়েটিং এরিয়াতে বসতে বলা হয়েছিল। প্রথমে ডাক্তার আমার চোখের পরীক্ষা করেন, তারপর আমার গালে হাত দেন, তারপর আমার শরীরে অন্যান্য জায়গায় যা চোখের সঙ্গে জড়িত নয়। আমি তখন ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। সারা রাস্তা ঘেন্না লাগছিল আমার। বাড়ি ফিরে সবার অলক্ষ্যে ঘরের এক কোনায় বসে কেঁদেছিলাম হাউহাউ করে। কিন্তু তাও আমি ভয়তে মাকে কিছু বলতে পারিনি। ভয় ছিল মা হয়তো বলবে এটা আমার দোষ। আমিই ডাক্তারকে উত্তেজিত করার জন্য কিছু করেছি। ডাক্তারের কাছে এই অভিজ্ঞতা আমার বহুবার হয়েছিল।’
দরজির কাছে গিয়েও এই একই অভিজ্ঞতা হয়েছিল নীনার। পোশাকের মাপ নেওয়ার আছিলায় শরীরে হাত দিয়েছিলেন সেই ব্যক্তি। আর সেবারেও ভয়ে মা-কে কিছু বলেননি নীনা! ভয় পেতেন স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেওয়া হবে।
নীনা তাঁর বইতে লিখেছেন, ‘আমি কাওকে এই ব্যাপারে কিছু বলতে পারিনি। বারবার ওদের (ডাক্তার ও দরজি) কাছে গিয়েছি। কেন? কারণ আমার মনে হয়েছিল এটা ছাড়া আমার আর কিছু করার নেই।’ নীনা এই প্রসঙ্গে আরও লেখেন, ‘আমি আমার মা-কে কখনও বলতে পারিনি আমি সেই ডাক্তার বা দরজির কাছে যেতে চাই না! তাহলে মা আমাকে কারণ জিজ্ঞাসা করবে আর আমাকে বলতে হবে। যা বলতে আমার লজ্জা করবে, ভয় করবে। শুধু আমি নই, আমাদের দেশের অনেক মেয়ের সঙ্গে এমন হয়, এবং তাঁরা ভয়ে নিজেদের মা-কে বলতে পারে না। আমরা ভয় পাই কারণ আমাদের পরিবারের তরফে যেটুকু স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে, সেটুকুও ছিনিয়ে নেবে। ’
পরবর্তীতে যখন মেয়ে বন্ধুদের সঙ্গে তিনি এই ব্যাপারে কথা বলতে শুরু করেন, বুঝতে পারেন তাঁর বন্ধুদের সাথেও এমন ঘটনা ঘটেছে। তিনি একা নন, যার সঙ্গেই ঘটেছে শ্লীলতাহানি!