ইন্দিরা ধর মুখোপাধ্যায়ের প্রথম ছবি ‘পুতুল’। যে ছবির গল্প অবহেলিত রাস্তার শিশুদের নিয়ে। কান চলচ্চিত্র উৎসবে আগেই প্রশংসা কুড়িয়েছিল বাঙালি পরিচালকের তৈরি এই ছবি। আর সেই পুতুল এবার আরও একবার ইতিহাস গড়ল। অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস অর্থাৎ অস্কারে বিশ্বের ৮৯টি গানের মধ্যে জায়গা পেয়েছে 'পুতুল' ছবির গান ‘ইতি মা’। গানটি গেয়েছেন ইমন চক্রবর্তী। সুর দিয়েছেন সায়ন গঙ্গোপাধ্যায়। এই প্রথম কোনও বাংলা গান অস্কারের তালিকায় জায়গা করে নিল।
এবিষয়ে ছবির পরিচালক সংবাদ প্রতিদিনকে জানান, যখন গানটি তৈরি হচ্ছিল, তখন তিনি ভাবতেই পারেননি যে এই গান অস্কারের জন্য মনোনীত হবে। এই প্রথম কোনও বাংলা গান অস্কারের জন্য মনোনীত হল। এটা ইতিহাস তৈরি করেছে। জানা যাচ্ছে, এবার অস্কারের মঞ্চে সেরা মৌলিক গানের তালিকায় প্রাথমিক পর্যায়ে ৮৯টি গান এবং সেরা মৌলিক ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরের জন্য মোট ১৪৬টি গান ব্য়ালটে রয়েছে। সেই তালিকায় জ্বলজ্বল করছে ইমন চক্রবর্তীর গাওয়া ‘ইতি মা’ গানটি। আর তাই অস্কার কমিটি ও অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডসের জুরি মেম্বারদের ধন্যবাদও জানিয়েছেন 'পুতুল' পরিচালক ইন্দিরা ধর মুখোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-অসুস্থ, রূপঙ্করের জন্মদিনেই হাসপাতালে ভর্তি গায়কের স্ত্রী , কী হয়েছে চৈতালী লাহিড়ির?
ইন্দিরা আরও জানিয়েছেন অস্কারের আরও দুটো ক্যাটাগরিতে এই গানটি মনোনীত হয়েছে। সেটা অরিজিনাল গান ও সেরা আবহসঙ্গীত। যদিও সেরা ছবি ও সেরা বিদেশি ছবির তালিকা এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। ১৭ ডিসেম্বর সেটি সামনে আসবে। সেই তালিকা নিয়েও আশাবাদী বলে জানাচ্ছেন ইন্দিরা।
তবে সাফল্যের মধ্যেও ইন্দিরার অভিমান 'কান' চলচ্চিত্র উৎসব থেকে ফেরার পরও ‘পুতুল’ ছবির প্রচার নিয়ে কেউ সেভাবে মাথা ঘামাননি। এমনকি কোনও প্রতিবেদনও বের হয়নি। ইন্দিরার কথায়, 'যখন ইন্টারন্য়াশনাল মিডিয়া 'পুতুল' নিয়ে মাতামাতি করছে, তখন বাংলা মিডিয়া অন্য ছবি নিয়ে লাফালাফি করছে। আমি কাউকে কোনও কথা বলতে যায়নি, বোঝাতেও চাইনি। কান উৎসবে যে ৭টি ছবি গিয়েছিল তার মধ্যে পুতুলও ছিল। তবে আমি চুপ থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। অপেক্ষায় ছিলাম কখন অ্যাকাডেমির তালিকা বের হবে। শেষপর্যন্ত এই গানটা মনোনীত হয়েছে। তাই এটা নিয়ে কথা হচ্ছে। শেষপর্যন্ত কাজই কথা বলল। আমার চুপ থাকার জবাব।'
১৩ ডিসেম্বর মার্কিন মুলুকে 'পুতুল'-এর প্রিমিয়ার হবে। তারপর ২৭ ডিসেম্বর এই বাংলায় মুক্তি পাবে এই ছবি। ইন্দিরার কথায়, বাংলার সব জায়গায় এই ছবি তিনি পৌঁছে দিতে চান। আর তাই তিনি নিজেই ডিস্ট্রিবিউটারশিপ নিয়েছেন। প্রয়োজনে নিজে গ্রামে গ্রামে গিয়ে ছবির টিকিট বিক্রি করবেন।