গণপতি এবং ইন্দ্রধনুশ সম্প্রতি এই দু'টি নতুন রাগ সৃষ্টি করেছেন প্রখ্যাত বেহালা বাদক, শিল্পী ইন্দ্রদীপ ঘোষ। লকডাউনে আমরা দেখেছি প্রচুর শিল্প অনুরাগী মানুষ নিজের সৃজন চিন্তা অবলম্বন করে ঘরে বসেই তৈরি করেছেন সচেতনতা মূলক গান, কবিতা, স্বল্প দৈর্ঘের ছবি ইত্যাদি, এবং সেই সকল সৃষ্টি ছুঁয়ে গিয়েছে হৃদয়কে, হাজার হাজার মানুষকে করোনার পরিস্থিতির বিরুদ্ধে লড়াই করার সাহস জুগিয়েছে।
লকডাউনের এই দীর্ঘ সময়টা শিল্পী ইন্দ্রদীপ মগ্ন ছিলেন এই রাগ সৃষ্টির কাজে। ‘গণপতি’ এবং ‘ইন্দ্রধনুশ’ নামে এই দুই নতুন রাগ এর মধ্যেই বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে দেশ বিদেশের শ্রোতা ও অনুরাগী মহলে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও বেশ সাড়া জাগিয়েছে দুই রাগ।
ইন্দ্রদীপ ঘোষের কথা অনুযায়ী , তিনি তাঁর সঙ্গীতের প্রতি ভালোবাসা থেকে দুটি নতুন রাগ তৈরি করেছেন, যা তাঁকে অনাবিল আনন্দ দিয়েছে। সংগীত মানুষের নানা রকম অবসাদ দূর করতে সাহায্য করে । তিনি মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন যে এই মহামারীর আতঙ্ক থেকে আমাদের জীবনকে মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে সংগীত এক অসাধারণ মাধ্যম।
শুধু ভারতেই নয়, এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বে সঙ্গীত প্রেমী মানুষদের কাছে শিল্পী ইন্দ্রদীপ ঘোষ একজন পরিচিত নাম। সঙ্গীত সৃষ্টি এবং সঙ্গীত পরিবেশনা ছাড়াও তিনি জড়িয়ে রয়েছেন মিউজিক সংক্রান্ত বিভিন্ন গঠন মূলক বিষয়ের সঙ্গে। তিনি টেক্সাসের অস্টিন, স্কুল অফ ইন্ডিয়ান পারকশন অ্যান্ড মিউজিকের অনুষদ প্রশিক্ষকের দায়িত্বে নিযুক্ত রয়েছেন। গ্লোবাল ক্রিয়েটিভ আর্টস একাডেমির মাধ্যমে, টেক্সাসে ভারতীয় ধ্রুপদী শিল্প ও সংস্কৃতি প্রচারের জন্য তাঁর অবদানকে স্বীকৃতি দিয়ে সম্মান জানিয়েছে ‘ইন্দ্রাদীপ ঘোষ দিবস’ হিসাবে ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ তারিখটিকে নির্বাচন করে।
২০১৮ সালে, অ্যাসোসিয়েশন অফ অ্যালায়েন্স ক্লাবস ইন্টারন্যাশনাল শিল্পীকে ‘ প্রিন্স অব ভায়োলিন’ উপাধি প্রদান করে। কিছুদিন আগে শিল্পী জাতিসংঘের অর্থনীতি ও সামাজিক বিষয় বিভাগ (ইউএন ডেসা) এর আন্তঃসরকারী সংস্থা-- আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পর্ক মানবাধিকার ও শান্তি কমিশন দ্বারা দক্ষিণ এশিয়ার কনসোল এবং চ্যান্সেলর জেনারেলের পদে যোগদান করেছেন।
ইউএন-আইজিও, আইসিসি-আইসিএ এবং আইসিজে-র স্বায়ত্তশাসন সালিশী প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক আরবিট্রেশন ও মানবাধিকার আদালত দ্বারা দক্ষিণ এশিয়ার শান্তির বার্তাবাহক শিল্প কলা ও সংস্কৃতির চ্যান্সেলর হিসাবেও নিযুক্ত রয়েছেন শিল্পী ইন্দ্রদীপ ঘোষ। তিনি মূলত দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির জন্য সাংস্কৃতিক শাখার বিকাশের দায়িত্ব পালন করেন।
ইন্দ্রদীপ ঘোষ ইউরোপের লেবরিন্থ-এ কাতালুনিয়া সংগীত কর্মশালা পরিচালনা করেন, এবং সেই কর্মশালা খুবই জনপ্রীয়তা লাভ করে। এরপর লেবরিন্থ- এ জুলাই,আগস্ট মাসে অনলাইন 30 ঘন্টা গ্রীষ্মকালীন সংগীত কর্মশালার জন্য ইন্দ্রদীপ ঘোষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ইন্দ্রদীপ ঘোষ টেক্সাসের গ্লোবাল ক্রিয়েটিভ আর্টস একাডেমির (জিসিএএ) শৈল্পিক পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছন। তিনি "তানসেন-তায়াগরাজ সংগীত ও নৃত্য উৎসব" এর মাধ্যমে ভারতীয় রাগ সঙ্গীতের উত্তর ও দক্ষিণ ধ্রুপদী ধারাকে নিয়ে এক মনজ্ঞ উপস্থাপনার প্রায়াস নিয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শরতকালে এবং আমাদের দেশে শীতকালে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয় জিসিএএ থেকে
এছাড়াও প্রকাশ পেয়েছে ইন্দ্রদীপ ঘোষের বাণিজ্যিক ভারতীয় ভিয়োলা সিডি, ট্রিবিউট টু মিয়াঁ তানসেন অন ভিয়োলা।