ঋত্বিক চক্রবর্তীকে এবার দেখা যাবে এক তদন্তকারী অফিসার হিসেবে? হ্যাঁ, এমনটাই শোনা যাচ্ছে। তাঁর আগামী ছবিতে তিনি এই চরিত্রেই ধরা দেবেন। ছবিটির পরিচালনা করবেন রাজদীপ ঘোষ। এটি একটি থ্রিলার ঘরানার ছবি হবে। তবে তাতে মিশে থাকবে জ্যোতিষ। কলকাতাতেই হবে এই ছবির শ্যুটিং।
জ্যোতিষ বেস করে থ্রিলার ছবিতে তো ঋত্বিক চক্রবর্তী অভিনয় করছেন, কিন্তু তিনি নিজে কি জ্যোতিষে বিশ্বাস করেন? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি আনন্দবাজারকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি একদমই এসব বিশ্বাস করেন না। তবে তিনি জানান, জ্যোতিষবিদ্যা একটি বহু পুরনো বিদ্যা। অনেকে অবশ্য এটা নিয়ে অসৎ ব্যবসা করেন। আবার উল্টো দিকে কিছু জ্যোতিষী খুনও হন। এটার উপর ভিত্তি করেই এই ছবির গল্প এগোবে বলেই অভিনেতা জানান। এখানে তদন্তকারী অফিসার হিসেবে তদন্ত করতে আসবেন ঋত্বিক চক্রবর্তী।
এই ছবিটিতে একটি নতুন প্রযোজনা সংস্থা কাজ করছে। এই প্রসঙ্গে অভিনেতাকে প্রশ্ন করা হয় যে প্রতিষ্ঠিত সংস্থার সঙ্গে কাজ করা কি বেশি নিরাপদ বলে মনে করেন তিনি? উত্তরে তিনি জানান, 'একটি প্রতিষ্ঠিত সংস্থার যে অভিজ্ঞতা থাকে সেটা ইন্ডাস্ট্রিতে সাহায্য করে অনেকটাই। ফলে সেই দিক থেকে দেখতে গেলে অবশ্যই নিরাপদ। কিন্তু তাও চাইব যাতে এই ইন্ডাস্ট্রিতে আরও অনেক বেশি করে নতুন প্রযোজকরা উঠে আসুন। নতুন সংস্থা শুরু হলে একটা উদ্যম, স্ফূর্তি থাকে। নতুন কিছু করে দেখানোর ইচ্ছা থাকে। ইন্ডাস্ট্রি বড় হলে তো কাজ বাড়বেই।'
নতুন অভিনেতাদের কাজ দেখেন কিবা প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, অনেকেরই অভিনয় তিনি দেখেছেন, বাংলায় অভিনেতা, অভিনেত্রীদের কমতি নেই বলেও জানান তিনি। কিন্তু এরপরই যখন তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়, এখন একটা কথা হামেশাই শোনা যায় যে ভালো অভিনেতা নাকি আর পাওয়া যাচ্ছে না? সেই বিষয়ে ঋত্বিক বলেন, 'ভালো, খারাপ সম্পূর্ণ ভাবে বিচার করার বিষয়। তবে বাংলার সাংঘাতিক অভাব আছে এই বিষয় বলে মনে হয় না। তবে সঠিক অন্বেষণ প্রয়োজন।'
বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা কথা প্রায়ই দেখা যায়, 'বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ান', এই বিষয়ে ঋত্বিকের কী মত? অভিনেতা এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন, 'ছবি তো চলতেই হবে। ছবি করার পর লাভ দেখতে না পেলে সেটা চিন্তার বিষয় বটেই। তবে এটা সম্পূর্ণ ভাবে যাঁরা ব্যবসা চালান, সেই প্রযোজক, ডিস্ট্রিবিউটর তাঁদের ভাবনা এগুলো। আমি এখানে বসে দুটো উত্তর বললে সেটা আদতে কোনও কাজে দেবে না। আমার কাজ অভিনয় করা, আমি সেটাই মন দিয়ে করার চেষ্টা করি। ব্যবসাটা যাঁদের এটা তাঁদের ভাবার বিষয়।'
টলি পাড়ার কোনও পার্টিতে কেন তাঁকে দেখা যায় না, কোনও বন্ধুর দলে কেন তাঁকে দেখা যায় না জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান বন্ধুত্ব তাঁর আছে। কিন্তু তিনি নাকি উল্টো জিনিসও দেখেন। এই বিষয় তিনি বলেন, ' সব সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ নয়। যে যার মতো আলাদা আলাদা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত আছেন। একে অন্যের সঙ্গে ঝগড়া করছে। আবার তাঁদেরই একত্রে কোনও কোনও পার্টিতে দেখা যায়। ফলে তাঁদের মধ্যে নিশ্চয় কোনও অন্য ধরনের বন্ধুত্ব আছে।'
যেখানে তাঁর সহকর্মীরা অনেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত সেখানে তিনি কেন যুক্ত হলেন না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি কখনই রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার মতো মানুষ ছিলেন না। তাঁর ভারত হচ্ছে একটা মাত্র দেশ যেখানে এত মানুষ বিনোদন জগতের সঙ্গে যুক্ত, আবার তাঁরাই রাজনীতি করেন। বাংলা ছাড়া আর অন্য কোথাও এতজন অভিনেতা তথা সাংসদ আছেন বলেও তিনি মনে করেন না। 'এটা একটা আলাদা ব্যাপার, খুব অন্য রকম বিষয়টা না?' এছাড়াও তিনি জানান রাজনীতি করা মানে দলের মতাদর্শ মেনে চলা, আর তিনি নিজের মতাদর্শ ছাড়া অন্য কিছু মেনে চলতে চান না। তাই তিনি রাজনীতির মানুষ নন বলেই জানান। রাজনীতিতে মানুষকে সবার আগে দলের ভুল অস্বীকার করতে হয়। কিন্তু ঋত্বিক কখনই সেটা পারবেন না বলে জানান। তিনি ভুল করলে সেটা সবার আগে স্বীকার করেন। কারণ এতে তাঁর উন্নতি হয় বলেই বিশ্বাস করেন।