বিগত কয়েকদিন ধরেই জয়া বচ্চন ও জগদীপ ধনখড়ের মধ্যে মস্করা, হাসির ছলে কথার লড়াই, বিনোদনের কারণ হয়েছে একাধিকের জন্য। সোমবারও এই একই পরিবেশ বজায় থাকল। রাজ্যসভায় চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের কাছে সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জয়া বচ্চন হঠাৎই জানতে চান, তিনি ‘জয়া অমিতাভ বচ্চন’ নামটির মাঝের শব্দটির অর্থ সম্পর্কে অবগত কি না! এখানেই শেষ নয়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর, যিনি কি না অবিবাহিত তাঁকে নিজের নামের সঙ্গে ‘স্ত্রীর নাম’ যুক্ত করার পরামর্শও দিলেন জয়া। গত ২৯ জুলাই ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিং জয়াকে আচমকা ‘জয়া অমিতাভ বচ্চন’ ডেকে ফেলার পর থেকেই, এই বিষয়ের সূত্রপাত। তখন অবশ্য বেশ আপত্তি তুলেছিলেন তিনি। পরে নিজেকে আবার হঠাৎই স্বামীর নাম নিয়ে পরিচয় করিয়ে, চমকে দিয়েছিলেন জয়া।
দেখা যায়, জগদীপ সোমবারও বলছেন, ‘সাপ্লিমেন্টারি নম্বর ফোর… শ্রীমতী জয়া অমিতাভ বচ্চন…’! এতেই উঠে দাঁড়িয়ে জয়া বলে ওঠেন, ‘স্যার আপনার অমিতাভ নামের অর্থ জানা আছে তো?’ তাতে জগদীপ বলেন, ‘না, না বদলে দেব আমি’। অবশ্য সে কথায় বিশেষ পাত্তা না দিয়ে অমিতাভ-পত্নী বলতে থাকেন, ‘আমি আমার স্বামীর সঙ্গে নাম জুড়ে থাকা নিয়ে গর্বিত। আমি শুধু বলতে চাই…’
ধনকড় এবার গোটা ঘটনাকে নাটকীয় মোড় দিয়ে বলেন, ‘নির্বাচনী শংসাপত্রের জন্য আপনি যে নাম জমা দিয়েছেন তা পরিবর্তন করার একটি পদ্ধতি রয়েছে। আমি নিজে ১৯৮৯ সালে সেটার সুবিধে নিয়েছি…’
এতে জোর গলায় জয়া জবাব দেন, ‘না স্যার। আমি নিজের নাম নিয়ে গর্বিত। স্বামীর নাম নিয়ে গর্বিত। ওঁর কৃতিত্বে গর্বিত। এর অর্থ এমন আভা, যা কোনওদিন মুছে যাবে না। এসব নিয়ে আপনারা চিন্তা করবেন না। যে নাটক আপনারা নতুন শুরু করেছেন। আগে তা ছিল না।’
এ সময় ধনখড় বলে ওঠেন, কয়েক বছর আগে ফ্রান্সের একটি হোটেলে পরিদর্শনের কথা। যেখানে গ্লোবাল আইকনদের মধ্যে ছবি ছিল অমিতাভ বচ্চনের। ধনখড় সেকথা উল্লেখ করে বলে ওঠেন, ‘আমি শংসাপত্র দিচ্ছি যে ওকে নিয়ে পুরো দেশ গর্বিত’।
এরপর জগদীপ খট্টরের কাছ থেকে সাপ্লিমেন্টারি চাইতেই জয়া বলেন, 'স্যার, ওঁর নামের আগে স্ত্রীর নাম রাখুন। আর জয়ার এই কথায় স্ত্রীর নাম শ্রীমতী সুদেশ উল্লেখ করে ধনখড় বলে ওঠেন, তিনি মাঝেমধ্যেই নিজেকে 'সুদেশপতি' বলে সম্বোধন করেন।
এরপর নিজের অবিবাহিত স্ট্যাটাসের কথা উল্লেখ করে মনোহর লাল খট্টর বলেন যে, জয়া বচ্চন এই জীবনে যা বলছেন তা তিনি পূরণ করতে পারবেন না (স্ত্রীর নাম নিজের নামের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া)। এর জন্য পরবর্তী জীবনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। স্বভাবতই গোটা ঘটনাকে জয়ারে বিরক্ত করলেও, সাংসদে বেশ হাসির পরিবেশ ছিল।
গত ২৯ জুলাই হরিবংশ যখন জয়া অমিতাভ বচ্চন নামটি নেন, তখন আপত্চি জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘এটা নতুন কিছু, নারীরা তাদের স্বামীর নাম ধরে এমনভাবে স্বীকৃতি পাবে যেন তাদের নিজস্ব কোনো অস্তিত্ব বা অর্জন নেই।’
সিনেমা ও রাজনীতি উভয় ক্ষেত্রেই প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব জয়া বচ্চন ১৯৭৩ সালের ৩ জুন মেগাস্টার অমিতাভ বচ্চনকে বিয়ে করেন। এই দম্পতির দুই সন্তান শ্বেতা বচ্চন এবং অভিষেক বচ্চন। 'জঞ্জির', 'শোলে', 'অভিমান', 'মিলি', 'চুপকে চুপকে', 'সিলসিলা', 'কাভি খুশি কাভি গম'-এর মতো বেশ কয়েকটি ছবিতে একসঙ্গে অভিনয় করেছেন অমিতাভ-জয়া। ২০০৪ সালে রাজনীতিতে প্রবেশের পর থেকে জয়া নারী অধিকার এবং বিভিন্ন সামাজিক ইস্যুতে সোচ্চার হয়েছেন।