জনি ডেপ (Johnny Depp) আর অ্যাম্বার হার্ডের (Amber Heard)র মধ্যেকার ঝামেলা ঘরোয়া গণ্ডি পেরিয়ে বহুদিন আগেই পৌঁছে গিয়েছে আইন-আদালতে। দু'জনের বিয়ে ভেঙেছিল পাঁচ বছর আগে। কিন্তু ঝামেলায় তাতে ইতি পড়েনি। বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য় আবেদন করতে গিয়ে জনির বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ আনেন অ্যাম্বার। জনি তাঁকে মারত, মাদক খেয়ে ভাঙচুর চালাত বাড়িতে বলে অভিযোগ আনেন। প্রমাণ হিসেবে নিজের ও জনির কিছু ছবিও পেশ করেন। কিছু সময় পর প্রাক্তন হৃবউ-এর নামেই মানহালির মামলা করে জনি ডেপ। বুধবারই এসেছে সে মামলার রায়। যাতে আদালত মেনে নিয়েছে জনিকে ‘কালিমালিপ্ত’ করার চেষ্টাই করেছে অ্যাম্বার। যদিও আদালতের তরফে এটাও বলা হয়েছে মামলা চলাকালীন জনির আইনজীবীরা অ্যাম্বারের নামে কুৎসা করেছে।
তবে মানহানির মামলার রায় তাঁর পক্ষে যাওয়ার পর ইনস্টাগ্রামে একটি বিবৃতি পেশ করেছেন জনি। যাতে লেখা, ‘৬ বছর আগে আমার জীবন, আমার বাচ্চাদের জীবন আমার কাছের মানুষগুলোর জীবন, সঙ্গে যাঁরা এতবছর ধরে আমার পাশে থেকেছেন তাঁদের জীবন হঠাৎ করে বদলে যায়। মিথ্যে, খুব গুরুতর ও অপরাধমূলক অভিযোগ আমার উপর তোলে মিডিয়া। যা থেকে ছড়ায় ঘৃণা, যদিও আমার উপর কার্যত কোনও প্রমাণ ছিল না। কিন্তু চোখের নিমেষে তা গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে ও সরাসরি প্রভাব ফেলে আমার কাজে, আমার কেরিয়ারে। ছয় বছর পর জুরি আমার সম্মান ফিরিয়ে দিল। আমি কৃতজ্ঞ।’
মাস ১৫-র বিবাহিত জীবন ছিল জনি আর অ্যাম্বরের। তবে জনির প্রাক্তন স্ত্রী শুধু যে ডিভোর্সের আবেদন করেন তাই নয়, সঙ্গে গার্হস্থ্য হিংসের অভিযোগও আনেন। শারীরিক অত্যাচারের প্রমাণ স্বরূপ নিজের কিছু ছবিও জমা দেন, যাতে তাঁর মুখে, হাতে, আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। জনির কিছু ছবি দেন যাতে তাঁকে এলোমেলো অবস্থায় দেখানো হয়েছিল। জনির কাছ থেকে ৭০ লক্ষ ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেন অ্যাম্বার সেইসময়।
এরপর আদালতে ডিভোর্স হয়ে যাওয়ার পর একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয় জনি স্ত্রীকে মারধর করতেন। আর তা নিয়ে ব্রিটেনের একটি সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে প্রথমে মানহানির মামলা করেন জনি। কিন্তু ২০২০ সালে সেই মামলায় হেরে যান জনি। এদিকে 'পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ান' এবং 'ফ্যানটাস্টিক বিস্টস'-এর মতো বিখ্যাত সিরিজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় জনিকে। বিজ্ঞাপন থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়। তারপরই অ্যাম্বারের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন জনি। মিথ্যা অভিযোগ এনে সারাজীবন ধরে গড়ে তোলা তাঁর উত্তরাধিকার, ভাবমূর্তি এক নিমেষে অ্যাম্বার শেষ করে দিয়েছেন বলে দাবি করেন জনি। সেই মামলার রায়ই এল বুধবার।
আদালতে জনির আইনজীবীরা প্রমাণ করিয়ে দিয়েছেন আসলে বরের উপরে অত্যাচার করত অ্যাম্বার নিজেই। সঙ্গে অডিও ক্লিপ পেশ করা হয়েছে যাতে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘বাইরে গিয়ে বলো জনির বউ জনিকে মারে, কে বিশ্বাস করে দেখি’! একাধিক প্রমাণ পেশ করা হয়েছিল জুরির সামনে। যেখানে অভিনেতার হয়ে কথা বলেছেন তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক, বিভিন্ন হোটেল-রিসর্টের কর্মীরা যেখানে জনি ও অ্যাম্বার একসঙ্গে ঘুরতে গিয়েছেন। একটি অডিও রেকর্ডিংয়ে অ্যাম্বারকে স্বীকার করতেও শোনা যায় তিনি নিজে জনিকে মারধর করতেন।
প্রসঙ্গত, আদালতের রায়ের পরে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন অ্যাম্বার। লিখেছেন, আদালতের রায় হতাশ করেছে তাঁকে। গার্হস্থ্য হিংসার শিকার মহিলাদের জন্য তা মোটেই সুখকর নয়। তবে বুধবার আদালত রায় দেওয়ার সময় তিনি চুপচাপ মাথা নীতু করেই বসে ছিলেন।