আর জি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে প্রথম দিন থেকে সরব জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। টলিপাড়ার অন্যতম স্পষ্টবাদী অভিনেতা তিনি। সময়ে-সময়ে শাসক দলকেও প্রশ্নবাণেবিদ্ধ করতে ছাড়েন না। যৌন হেনস্থার মামলায় অরিন্দম শীলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হতেও পরিচালককে একহাত নেন অভিনেতা। এর কয়েকঘণ্টার মধ্যেই ফেসবুকে এক উঠতি অভিনেত্রী জয়জিৎ-এর নামে বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন।
ঝুমা নামের ওই স্বঘোষিত অভিনেত্রী দাবি, মেসেজ করে তাঁর ‘ব্রা-এর সাইজ’ জানতে চেয়েছিলেন জয়জিৎ। সেই নিয়ে হইচই শুরু হতেই কড়া জবাব দেন জয়জিৎ। রবিবারও আরজি করের নির্যাতিতার বিচার চেয়ে পথে নামলেন অভিনেতা। টালিগঞ্জ থেকে হাজরা পর্যন্ত মিছিলে মানসী সিনহা, অপরাজিতা আঢ্য, সোহাগ সেন, রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়, বাদশা মৈত্রদের সঙ্গে পা মেলালেন জয়জিৎ। শ্লীলতাহানির অভিযোগে এতটুকু কুণ্ঠিত নন তিনি। হিন্দুস্থান টাইমস বাংলাকে আগেই তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভুয়ো এবং ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছিলেন অভিনেতা।
মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে ফের হুঁশিয়ারি দিলেন জয়জিৎ। এক কিশোর সন্তানের পিতা জয়জিৎ যৌন হেনস্থার অভিযোগ নিলে বলেন, ‘যে কেউ কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতেই পারেন। কিন্তু অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। আমি তো যখন জানতে পেরেছি, ওই অভিযোগকারিণীর পোস্টের নিচেই সঙ্গে সঙ্গে স্ক্রিনশট দিয়ে উত্তর দিয়েছি। আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ করব।’
জয়জিৎ-কে অনেকেই মানহানির মামলা করার পরামর্শ দিচ্ছেন। রবিবার দুপুরেই অভিযোগকারিণীর ফেসবুক পোস্টে গিয়ে ফেসবুক চ্যাটের একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করেন জয়জিৎ। ২০২০ সালের ওই অভিনেত্রী জয়জিৎ-কে Hi লিখে মেসেজ পাঠিয়েছিলেন, যার পালটা কোনও জবাব দেননি অভিনেতা। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, ওই অভিনেত্রী তাঁর ফ্রেন্ডলিস্টে নেন। কোনওদিন কথাও হয়নি তাঁদের।
আরও পড়ুন-‘ওই চোখাচোখিটা কোনওদিন ভুলব না…’, কাঞ্চন অতীত! পিঙ্কির জীবনের সবচেয়ে কাছের কে?
জয়জিৎ অভিযোগ সম্পর্কে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে জানিয়েছেন, ‘কেন বলল, কী জন্য বলল। আমি ডিরেক্টরের (পড়ুন অরিন্দম শীল) সম্পর্কে বলেছি বলে, গায়ে লেগে গেল নাকি, জানি না…’! তাঁর আশঙ্কা হয়ত আরজি কর কাণ্ড নিয়ে তিনি প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন বলে তাঁকে থামানোর চেষ্টা করার প্রয়াস এটা। জয়জিতের কথায়, ’আমার উপর যখন অভিযোগ এসছে, তখন প্রমাণ দিক। তারপর কথা হবে। আমি এত প্রতিবাদ করছি বলে, সেটা থামানোর চেষ্টাও হতে পারে। জানি না আমি কিছু বুঝতে পারছি না।’
জয়জিৎ-সহ নেটিজেনরা ওই মহিলার কাছে প্রমাণ দাবি করলে উলটো সুর তাঁর গলায়। তিনি বলেন, ‘সকলে আমাকে ইনবক্সে জিজ্ঞেস করছেন স্ক্রিনশট দেব কি না। কেউ কেউ নেগেটিভ কথা বলছেন, তারা সকলেই পুরুষ। সুতরাং সকলকেই বলছি, ভুলটা ধরিয়ে দিতে হয়। পরে আবার ভুল করলে শাস্তি। তাই এইবার আমি কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছি কি না, তা বলা মুশকিল। আশা করি আপনারা বুঝবেন। বহুদিনের অভ্যেস। একটা মানুষ অন্যজনকে হঠাৎ করে খারাপ কথা বলে। একদিনের এটা বিষয় নয়।’