ভারতীয় যুদ্ধের ছবির ইতিহাস পাল্টে দিয়েছিল 'বর্ডার'। বক্স অফিসে ঝড় তোলার পাশাপাশি হিন্দি ছবির ইতিহাসে পাকাপাকি জায়গা করে নিয়েছে এই ছবি। তবে 'বর্ডার' মুক্তির পরপরই লাগাতার খুনের হুমকি পাওয়া শুরু করেন ছবির পরিচালক জেপি দত্ত। এরপরেও যখন আরও একটি ওয়ার-ড্রামা করার পরিকল্পনা ফাঁদছিলেন তখন রুখে দাঁড়িয়েছিল এই বলি-পরিচালকের নিজের পরিবার। তা সত্ত্বেও সেসব হুমকি পাত্তা না দিয়ে 'এলওসি: কার্গিল' ছবি তৈরিতে মেতে উঠেছিলেন তিনি।
ফোর্বস পত্রিকার কলামে একবার এই অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছিলেন স্বয়ং জেপি দত্ত। 'বর্ডার' মুক্তির পরপরই খুনের হুমকি পাওয়া শুরু করেন তিনি। প্রতিটিরই মূল বক্তব্য ছিল 'তাঁকে উচিত শিক্ষা দেওয়া হবে'। প্রাণনাশের আশঙ্কা দেখে অন্য উপায় না পেয়ে দু'জন সশস্ত্র দেহরক্ষী রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। সর্বক্ষণ ছায়ার মতো তাঁরা পরিচালকের সঙ্গে লেগে থাকত। তবে এহেন পরিস্থিতিতেও আরও একটি জাতীয়তাবাদে ভরপুর ওয়ার-ড্রামা শুরু করার কাজে হাত দিয়েছিলেন তিনি। ছবির নাম 'এলওসি: কার্গিল'।

পরিচালকের এই পরিকল্পনা জানার পর বেঁকে বসেন পরিচালকের পরিবারের লোকেরাই। অবশ্যই তাঁর জীবনের কথা ভেবে। তবে সেসব কিছুই পাত্তা দেননি তিনি। তাঁর যুক্তি ছিল যদি একজন ভারতীয় জওয়ান দেশের জন্য, দেশবাসীর জন্য নিজের প্রাণ দিতে পারেন তবে তাঁর জন্য কেন তিনি তিনি নিজের জীবনের ঝুঁকি নেবেন না? 'বর্ডার' পরিচালকের কথায়, ' লেজ গুটিয়ে পালিয়ে যাওয়ার বান্দা ছিলাম না আমি!' ওই কলামে তিনি আরও লিখেছিলেন যে বক্স অফিস সাফল্যে পাওয়ার জন্য মোটেই 'এলওসি: কার্গিল' তৈরির ব্যাপারে সেদিন এগিয়ে যাননি তিনি। কোনও রাখঢাক না করেই জানিয়েছিলেন এই ছবির জন্য যে যে শহীদদের পরিবারের সঙ্গে তিনি দেখা করেছিলেন তাঁদের সঙ্গে ইচ্ছে থাকলেও আর দেখা করতে পারেননি তিনি লজ্জায়। বলা ভালো যাননি। কারণ? ছবির দৈর্ঘ্যের কথা ভেবে বহু সিকোয়েন্স কাঁটছাঁট করতে হয়েছিল তাঁকে। ফলে যুদ্ধে শহীদ হওয়া জওয়ানদের বীরত্ব গাঁথা পুরোপুরি দর্শকদের সামনে হাজির করতে পারেননি তিনি।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধের ঘটনার ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল 'এলওসি: কার্গিল'। ছবিতে সঞ্জয়ই দত্ত, অভিষেক বচ্চন, অক্ষয় খান্না, সুনীল শেট্টির পাশাপাশি দেখা গেছিল সইফ আলি খান, মনোজ বাজপেয়ী, করিনা কাপুর, রানি মুখোপাধ্যায়দের।