এখনও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেননি কবীর সুমন। এস এস কে এম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। এবার সেখান থেকেই এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে রাগ চুরি করার গুরুতর অভিযোগ তুললেন 'গানওয়ালা'. নেটমাধ্যমে নিজেই সেকথা জানিয়েছেন এই খ্যাতনামা শিল্পী। সুমন জানিয়েছেন বছর খানেক আগে একটি রাগ তৈরি করেছিলেন তিনি। নাম রেখেছিলেন 'আহির বৈরাগী'। সুভদ্রকল্যাণ রাণা নামের এক ব্যক্তি সেই রাগ বেমালুম চুরি করে নিজের রচিত বলে দাবি করছেন, অভিযোগ 'হাল ছেড়োনা বন্ধু'-র স্রষ্টার!
শিল্পীর দাবি, 'আহির বৈরাগী' নিজের রচিত বলে শুধু প্রচার করেই ক্ষান্ত হচ্ছেন না সুভদ্রকল্যাণ রাণা, সঙ্গে সাঙ্গপাঙ্গ জুটিয়ে বাংলা খেয়ালের নাম নিন্দেমন্দ করে বেড়াচ্ছেন। বাংলা খেয়ালকে রীতিমত আক্রমণ করছেন তিনি। গোটা ঘটনার কথা ফেসবুকে তুলে ধরেছেন সুমন। তিনি জানিয়েছেন বছরখানেক আগে এই রাগ তিনি তৈরি করেছিলেন। সেই রাগের কথা ফেসবুকেও জানিয়েছিলেন শিল্পী। এরপরেই ওই রাগের কথা জানতে পেরে সুভদ্রকল্যাণ রাণা নেটমাধ্যমেই যোগাযোগ করেন কবীর সুমনের সঙ্গে। জানিয়েছিলেন তিনি তবলা বাজান। রাগটি শিখে নিয়ে বাজাতে চান। 'তিনি শিখে নিয়ে আমায় তবলা তরঙ্গে বাজিয়ে শোনান। তারপর সেই বাহাদুর সুভদ্রকল্যাণ রাণা প্রচার করতে থাকেন যে ঐ রাগটি তাঁরই সৃষ্টি। সেই সঙ্গে তিনি আরও লোক জুটিয়ে ফেসবুকে বাংলা খেয়াল সম্পর্কে আক্রমণ শুরু করেন। এমন ঘটনা তাঁর চেয়ে নামী বঙ্গসন্তান আগেও ঘটিয়েছেন, আরও ঘটবে হয়ত।' সাফ কথা সুমনের।
যদিও কবীর সুমনের এই অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা বলে দাবি করেছেন তরুণ তবলাবাদক। সুভদ্রকল্যাণ রাণার স্পষ্ট জবাব, কোনওদিন তিনি ‘আহির-বৈরাগী’ রাগটি নিজের বলে কোথাউ দাবি করেননি এবং এমন দাবির প্রমাণ কবীর সুমন দিতে ব্যর্থ। বছর পাঁচেক আগে সর্বভারতীয় বালশ্রী প্রতিযোগিতায় বৈরাগীতে ধৈবতের প্রয়োগ ঘটানোর পরে ‘আহির-বৈরাগী’ নিয়ে মনে কৌতূহল তৈরি হওয়াতেই কবীর সুমনের কাছে সেটির ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলেন মাত্র।
নিজের কল্পনাকে ‘ধৈবতী’ নামে প্রকাশ করেছেন সুভদ্রকল্যাণ।শিল্পীর কথায়, ‘তাতে বৈরাগীতে ধৈবতের স্পষ্ট প্রয়োগ আছে। উনি (কবীর সুমন) হয়ত ভাবছেন সেটা ওনার ‘আহির-বৈরাগী’র হুবহু অনুরূপ। প্রবীণ শিল্পীর অভিযোগ উড়িয়ে বছর কুড়ির এই তরুণ শিল্পী ফেসবুকে লিখেছেন, 'আমি যখন 'আহির-বৈরাগী' বাজিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করি, ওনার সৃষ্টি-কৃতিত্বের উল্লেখ যথাযথ পরিপূর্ণ সম্মান সহযোগে করেছি। পরে ওনার অকারণ দুর্ব্যবহারে বিরক্ত হয়ে আমার পোস্টটি সরিয়ে নি। কিন্তু ওনাকে আমি কোনও অসম্মান করিনি'।
সুভদ্রকল্যাণের আক্ষেপ, কবীর সুমন ‘জগদ্বিখ্যাত অসীম প্রভাবশালী ব্যক্তি বলেই’ সকলে ওঁনার অভিযোগকে সঠিক বলে মেনে নিয়েছে এবং তাঁকে ‘আত্মপক্ষ সমর্থনের প্রাথমিক অধিকার’ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তাঁর স্পষ্ট কথা, ‘আমার বিরুদ্ধে ওনার রাগ চুরির অভিযোগ সর্বৈব মিথ্যা ও অন্তঃসারশূন্য, হাস্যকর ও নিন্দনীয়ও বটে’।