Kabir Suman: ‘চটিপিসি, শকুনপিসি, চটিবুড়ি, কালীঘাটের ময়না…’, বন্যার্তদের পাশে মমতা, ফেসবুকে লম্বা পোস্ট কবীর সুমনের

বন্যা পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখা যাচ্ছে এক হাঁটু জলে গিয়ে, আর্তদের পাশে দাঁড়াতে। সে প্রসঙ্গে ফেসবুকে দীর্ঘ পোস্ট কবীর সুমনরে। যা লিখলেন সোশ্যাল মিডিয়াতে-

বাংলার অন্যতম বিখ্যাত গায়ক কবীর সুমনের মমতা-প্রীতি নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই। এই কারণে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘চটি চাটা’ বলে কটাক্ষও শুনতে হয় তাঁকে। অবশ্য তাতে, সরকারের হয়ে নিজের মত জানাতে দ্বিধা করেন না। এখানে শেষ নয়, রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়েও গলা চড়ান।

বর্ষীয়ান গায়ক তাঁর ফেসবুক পোস্টে শুক্রবার রাতে লিখলেন, ‘কদিন আগেও যারা সদলে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করছিল, চটিপিসি, শকুনপিসি, চটিবুড়ি, কালীঘাটের ময়না বলে অনর্গল চ্যাঁচাচ্ছিল, এই মুহূর্তে তারা কোথায়। এই রাজ্যের কোন বন্যাদুর্গত এলাকায় গিয়ে তারা মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। মার্ক্সিস্ট আর হিন্দুত্ববাদীদের চটিপিসি কিন্তু চটি খুলে খালি পায়ে এক হাঁটু বন্যার পানিতে গ্রামে গ্রামে দেখে বেড়াচ্ছেন ক্ষতির বহর। সতর্ক করে দিচ্ছেন গ্রামবাসীদের- জল আরও বাড়তে পারে।’

‘এই শহরের স্মার্ট ইংরেজি বলা প্রসাধন-ঘষা পপুলার ব্যক্তিত্বরা কোথায় গেল। কোথায় গেল বিদ্রোহীরা। বন্যাদুর্গত এলাকায় এলাকায় তারা কেউ নেই কেন। আমার বন্ধুস্থানীয় দু একজন উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিকে ফেসবুকে লিখতে দেখেছি- মমতা রাক্ষুসী। এরা নিজেদের পরিচয় দেয় মার্ক্সবাদী বলে, CPIM সমর্থক বলে। গা ঘিন ঘিন করে। শ্রীমতি মমতা দেখিয়ে দিচ্ছেন তিনি কে ও কী।’, আরও লেখেন কবীর সুমন।

মমতা তাঁর কাছে শুধুই নেত্রী নন, ‘জনতার বন্ধু’। ‘অসাধারণ বাঙালি মহিলা’ বলেও নিজের পোস্টে উল্লেখ করতে ভুললেন না। কথা প্রসঙ্গে তুললেন মহাশ্বেতা দেবীর প্রসঙ্গ। জানালেন, ‘বামফ্রন্টবিরোধী গণ আন্দোলনের নেতা মহাশ্বেতা দেবী আমায় সেই সময়ে বলেছিলেন - 'কবীর রে, মমতার বুকে মাথা রেখে কাঁদা যায়'।’

এখানেই শেষ নয়, শুক্রবার রাতে ফের একবার জুনিয়র ডাক্তারদের বিঁধেছেন সুমন। সোশ্যাল পোস্টে লেখেন, ‘শুনলাম, লড়াকু জুনিয়র ডাক্তাররা বলেছেন তাঁরা বন্যাপ্লাবিত এলাকায় গিয়ে অভয়া ক্লিনিক চালাবেন। অতি সাধু সংকল্প। আমার শুধু জানার ইচ্ছে সরকারি হাসপাতালে যেমন বিনা পয়সায় ওষুধ দেওয়া হয়ে থাকে (শুনেছি) বন্যাক্রান্ত এলাকাতেও কি তেমনি দেওয়া হবে? হলে দারুণ হবে।’

সঙ্গে জুড়েছিলেন, ‘আজ শুনেছিলাম কলকাতায় মশাল মিছিল বেরোবে। বিশাল, শুনেছিলাম। কিন্তু সন্ধের আগেই যদি সংগ্রামী জুনিয়ররা তাঁদের এতদিনের অবস্থান থেকে মিছিল করে চলে যান (প্লিজ মারবেন না আমায় - নেহাতই শুনেছি) তাহলে মশালগুলো জ্বলবে কখন? দিনের আলোয় নিশ্চই নয়?’

সঙ্গে আন্দোলনকারীদের পরামর্শ ছিল, ‘বাঙাল-ঘটি… হাওয়াই চটি-- কথাগুলো হাততালি দিয়ে দিয়ে চেঁচিয়ে বললে কি এক বয়স্ক মহিলাকেই অপমান করা হয় না? আপনারা তো এক মহিলার ওপর নির্যাতন ও তাঁর খুনের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। সেটা করতে করতে আর এক মহিলাকে অপমান?’