মমতা-ভক্ত হিসেবেই পরিচিত কবীর সুমন। তবে মঙ্গলবার একটি পোস্টে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মুখ খোলেন তিনি। ফেসবুকে লেখেন, ‘উৎসবে ফিরুন’ কথাটা বলে ভুলে করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তবে দেখা গেল, এখানেই ক্ষান্ত হলেন না তিনি। রাজ্যের দিদি-কে নিয়ে সরাসরি একটি কবিচতাই লিখে ফেলেছেন। যেখানে ছত্রে ছত্রে মমতা-বন্দনা। এমনকী, যারা তাঁকে কটাক্ষ বা সমালোচনা করেন, তাঁদের নিন্দা করতেও থামলেন না।
কবীর সুমন তাঁর কবিতায় লিখেছেন, ‘মমতা আমার ভরসা, তোমারই হাতে/ ওদের ব'কো না/যারা জেগে থাকে রাতে’। প্রসঙ্গত, সোমবার মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা গিয়েছিল, রাজ্যে রাত জেগে যে বিভিন্ন জমায়েত হচ্ছে, সেখানে যেভাবে মাইক ব্যবহার হচ্ছে, তাতে শব্দদূষণ হচ্ছে। বয়স্কদের সমস্যা হচ্ছে। রাতে মাইক বাজানো মানা, কিন্তু তাও তিনি চুপ করে ‘সহ্য’ করছেন!
তবে সুমনের ভালো লাগে নি যেভাবে সকলকে ‘উৎসবে ফিরুন’ নিদান দিয়েছেন রাজ্যের মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। তাই তো কবিতায় লিখেছেন, ‘বন্ধু আমার, দুম করে কিছু ব'লো না/ এই বিদ্রোহে, উৎসব-পথে চ'লো না। ব'লো না ব'লো না/ ফিরে যেতে উৎসবে/ মমতা তোমায়/ অনেক ভাবতে হবে’।
তবে এই পোস্টের কমেন্ট সেকশন লিমিটেড রেখেছেন বর্ষীয়ান গায়ক। ৬ ঘণ্টার মধ্যে ২২ খানা শেয়ার হয়েছে। ২৫০-র কাছাকাছি রিয়্যাকশন পড়েছে।
একটি পৃথক পোস্টে মমতার সরকারের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করে সুমনকে লিখতে দেখা গিয়েছিল, ‘আমি পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর দল তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দিই। এই রাজ্য ও কলকাতার জন্য তিনি যা যা করেছেন - আমি কৃতজ্ঞ। তেমনি আমার মতে যে ভুলগুলি তিনি ও তাঁর দল করেছেন সেগুলি সম্পর্কে মোটামুটি অবহিত আমি। সঙ্গীতশিক্ষার্থী ও সঙ্গীতসেবক হিসেবে আমি তাঁর কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ তিনি বাংলা খেয়ালকে স্বীকৃতি জানিয়েছেন এবং সরকারের মঞ্চে আমাকে বাংলা খেয়াল পরিবেশন করার সুযোগ দিয়েছেন ব'লে। এই উক্তির জন্য কে আমায় কী বলেন ও বলবেন আমার যায় আসে না। আমার মাভাষায় খেয়াল রচনা করা, গাওয়া ও শেখানো আমার জীবনের সেরা কাজ, আমার জীবনসায়াহ্নের প্রধান, চাইকি একমাত্র কাজ। আমি বেঁচে আছি আমার মাভাষায় খেয়ালের জন্য।’
সেই পোস্টেই তিনি লিখেছিলেন, ‘উৎসবে ফিরুন বলা খুবই কাঁচা কাজ, হৃদয়হীনতার পরিচয়। আন্দোলনকারীরা স্বাভাবিকভাবে রেগে গিয়েছেন। এমনিতে আমি মাননীয়া মমতার ভোটার ও প্রগ্রেসিভ বিপ্লবী মধ্যনাগরিক বাঙালিদের কাছে এক নিবেদিতপ্রাণ ‘চটিচাটা’। এ হেন আমিও মনে করছি ‘উৎসবে ফিরুন’ কথাটা বলা অন্যায় হয়েছে।’