১৪ ফেব্রুয়ারি ছিল কাঞ্চন-শ্রীময়ীর আইনি বিয়ের বর্ষপূর্তি, মানে বিবাহবার্ষিকী। ওই দিন বেশ ঘটা করেই বিবাহবার্ষিকী সেলিব্রেট করেছিলেন কাঞ্চন-শ্রীময়ী। সেই সমস্ত ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করেন। তবে এই তারকা দম্পতির জন্য চমকের আরও কিছুটা বাকি ছিল।
কী সেই চমক?
কাঞ্চন-শ্রীময়ীর বিবাহ-বার্ষিকী উপলক্ষ্যে তাঁদের নিজের বাড়িতে আমন্ত্রণ করে খাওয়ালেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। তাঁদের জন্য করেছিলেন এলাহি আয়োজন। আর উপহার তো ছিলই। ঋতুপর্ণার এমন ব্যবহারে মুগ্ধ শ্রীময়ী। সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশকিছু ছবি শেয়ার করে সেই মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন কাঞ্চনপত্নী।
লম্বা পোস্টে শ্রীময়ী চট্টরাজ লেখেন, ‘আমি চলার পথে আমার আঠাশ বছরের যাত্রায় বেশকিছু মানুষের সাথে আলাপ হয়েছে, মানুষ চিনেছি ,মানুষ দেখেছি, বিশ্বাস করুন আমি কালকে রাত্রের পর অবাক হয়ে গেছি যে মানুষ এরকমও হয়। আমরা তো জীবনে কিছু করলাম কি করলাম না তার আগেই নিজেদেরকে স্টার ভাবতে, সুপারস্টার ভাবতে, মেগাস্টার ভাবতে শুরু করে দিই, মানুষকে অহংকার দেখাতে শুরু করি, বেশিরভাগ মানুষ এখন জাজমেন্টাল হয়ে মানুষকে ছোট করতে শুরু করে, মানুষকে নিয়ে কথা বলতে শুরু করি, কিন্তু ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত মানুষটিকে দেখে এখনো শেখার আছে, আমার সাথে একদিন একটা অনুষ্ঠানে আলাপ হয়েছিল, সেখান থেকে আমাদের মধ্যে কথাবার্তা শুরু হয়, বন্ধুত্ব, হ্যাঁ বন্ধুত্বই বলবো কারণ আমার থেকে বয়সে বড় হলেও, বন্ধুত্বের সম্পর্কের আগে কোন সম্পর্কই হয় না। তারপর উনি আমাদের কালকে প্রথম বিবাহ-বার্ষিকী ট্রিট দিলেন ওনার বাড়িতে, আমি বুঝতেই পারলাম না যে কীভাবে সময়টা ঘন্টার পর ঘন্টা কেটে গেল, কখন রাত দুটো বেজে গেল শুধু আড্ডা মারতে মারতে আমরা বুঝতেই পারলাম না। আড্ডা ছেড়ে উঠতে ইচ্ছে করছিল না, কাঞ্চন আর ঋতুদির কথোপকথন শুনে। কারণ আমার তো কোন যোগ্যতাই নেই ওনাদের অভিনয় নিয়ে কথা বলার বা ওনাদের শিক্ষা, ওনাদের অভিজ্ঞতার কাছে আমি একজন নগণ্য, কীভাবে দুজন শিল্পী নিজেদের কাজ, ভালো ভালো সিনেমা, ভালো ভালো সংলাপ, ভালো ভালো ছবির জাতীয় পুরস্কার পাওয়া নিয়ে কথা বলতে বলতে, নিজেদের অভিনয় করা পুরনো ছবি দেখে স্মৃতিচারণ করে তাদের দুজনের চোখে জল চলে এলো। হয়তো একেই বলে শিল্পী।’
আরও পড়ুন-বিনোদিনী দাসীর পুরনো বাড়িতে পরিচালক রামকমলের সঙ্গে রুক্মিণী, কোথায় আছে এই বাড়িটি?
ঋতুপর্ণার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে শ্রীময়ী আরও লেখেন, ‘ঋতু দিকে কী বলে আমি সম্বোধন করব সুপারস্টার, মেগাস্টার, ব্লকবাস্টার আমি জানি না, যাঁর ঝুলিতে অগণিত ছবি এবং এখনো একই রকম আমাদেরকে তাঁর অসাধারণ অভিনীত অনবদ্য সিনেমাগুলো একইভাবে উপহার দিয়ে চলেছেন। মানুষ যে এত মাটির মানুষ হতে পারে, একজন সুপার ডুপারহিট স্টার ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর মতো মানুষকে আমি কাছ থেকে না দেখলে বুঝতেই পারতাম না, এত ভালো মনের মানুষ আজও আছেন। এত সুন্দর মন থেকে, আন্তরিকতার সঙ্গে আমাদেরকে খাওয়ালেন, আমার ওনার ব্যবহারেই অর্ধেক পেট ভরে গেছে।’
কিন্তু কাঞ্চন-শ্রীময়ীকে বাড়িতে ডেকে কী খাইয়েছেন ঋতুপর্ণা, কী ছিল মেনুতে?
শ্রীময়ী লেখেন, 'খাবার মেনুটা, I should mention, লুচি, ছোলার ডাল, বেগুন ভাজা, বাঁধাকপির তরকারি, চিংড়ি মাছের মালাইকারি, ভাত, মটন, দই কাতলা, কুলের চাটনি, পাটিসাপটা, রসমালাই, মিষ্টি। কিন্তু সব বাড়িতে বানানো। হয়তো আমি ছবিটা তুলতে পারিনি, নাহলে আমি শেয়ার করতাম। আমি সত্যিই এখনো বিশ্বাস করতে পারছিনা, আমি ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর কাছে কৃতজ্ঞ ,ধন্যবাদ জানালেও কম জানানো হবে, খুব খুব খুব ভালো সন্ধ্যা কাটালাম, সময়টা সারা জীবন আমার স্মৃতিতে থাকবে’।