মহারাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে চলা কঙ্গনার বাকযুদ্ধের মাঝে বুধবার বিএমসির তরফে ভেঙে দেওয়া হয় অভিনেত্রীর অফিস। যা শিবসেনা বনাম কঙ্গনা রানাওয়াত লড়াইকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছে। এর মাঝেই মুম্বই ছাড়ার ঘোষণা করলেন অভিনেত্রী। গত ৯ সেপ্টেম্বর, বুধবারই দীর্ঘ ৬ মাস পর মায়ানগরীতে ফিরেছিলেন কঙ্গনা। তবে নিজের কর্মভূমি মুম্বই থেকে মাত্র ৬ দিন পরেই ফিরে যাচ্ছেন কঙ্গনা।
সোমবার টুইটে নিজের বিদায় বার্তা জানিয়ে কঙ্গনা লেখেন, ‘মন ভারাক্রান্ত, মুম্বই ছাড়ছি, এই ক’দিন ধরে যে ভাবে আমাকে ভয় দেখানো হয়েছে-লাগাতার আক্রমণ এবং গালিগালাজ আমার দিকে ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে। আমার অফিসের পর আমার বাড়িটাও ভেঙে দেওয়ার চক্রান্ত করা হচ্ছে, সারাক্ষণ অ্যালার্ট সিকিউরিটি-যারা অস্ত্র হাতে নিয়ে আমার চারিপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বলতে বাধ্য হচ্ছি পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সঙ্গে আমার তুলনা একদম সঠিক ছিল'।
রবিবারও সঞ্জয় রাউত সামনায় (শিবসেনার মুখপত্র) আক্রমণ শানান কঙ্গনার উপর। তবে এইবার সরাসরি নয়, রূপকের মাধ্যমে। বলা হয়- ‘জলে থেকে কুমীরের সঙ্গে পাঙ্গা নেওয়াটা বোকামি’। এরই মাঝে রবিবার মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারির সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন কঙ্গনা। প্রায় মিনিট কুড়ির এই বৈঠকে কঙ্গনা রাজ্যপালকে নালিশ করেন উদ্ধব সরকারের বিরুদ্ধে। বৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি আমার সঙ্গে ঘটা অন্যায়ের কথা জানাতে এসেছিলাম, আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসাবে রাজ্যপালকে আমার কথা জানালাম মাত্র। উনি আমাদের সকলের অভিভাবক। আমি আশাবাদী আমি ন্যায়বিচার পাব’।
সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে মুম্বই পুলিশ ও মহারাষ্ট্র সরকারের মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কঙ্গনা। সেই থেকেই টুইটারে শুরু কঙ্গনার সঙ্গে শিবসেনা নেতাদের বাকযুদ্ধ। অভিনেত্রীকে মুম্বই না ফেরবার পরামর্শ দিয়েছিলেন রাজ্যের স্বারাষ্ট্রমন্ত্রীও।
গত ৩ রা সেপ্টেম্বর সঞ্জয় রাউতের মুম্বই না-ফেরবার উপদেশ প্রসঙ্গে কঙ্গনা টুইট করেন - ‘সঞ্জয় রাউত, শিবসেনার নেতা আমাকে প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছেন এবং বলছেন আমি যাতে মুম্বইতে না ফিরি, মুম্বইয়ের রাস্তায় আমার নামে কুত্সা রটানোর পর এবার প্রকাশ্যে হুমকি, কেন মুম্বই পাক অধিকৃত কাশ্মীরে বদলে গেছে বলে মনে হচ্ছে?'
কঙ্গনা মুম্বইয়ের সঙ্গে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের তুলনা করলে এই বিরোধ নতুন মাত্রা নেয়। যদিও মহারাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন দলের বিধায়ক, সাংসদদের হুমকির তোয়াক্কা না করে জোর গলায় ৯ সেপ্টেম্বর মুম্বই ফেরার কথা ঘোষণা করেন কঙ্গনা। কিন্তু তার আগেই মাত্র চব্বিশ ঘন্টার নোটিশে বৃহন্মুমই পুরসভার তরফে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় কঙ্গনার পালি হিলস স্থিত অফিস বাড়ি।
মনিকর্ণিকা ফিল্মসের অফিসে কোনওরকম বেআইনি নির্মান ছিল না দাবি করেছেন কঙ্গনা। মুম্বই ফিরেই মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি বলেছেন- তুই ফিল্ম মাফিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমার ঘর ভেঙে আমার থেকে প্রতিশোধ নিলি? সময়ের চাকা ঘুরবে। তুই আজ আমার ঘর ভেঙেছিস, কাল তোর অহংকার ভাঙবে..'।
মুখ্যমন্ত্রীকে তুইতোকাড়ি করবার জন্য এফআইআর পর্যন্ত দায়ের হয়েছে কঙ্গনার বিরুদ্ধে। তবুও নিজের অবস্থানে অনড় কঙ্গনা। মুম্বই ছাড়বার আগেও বলে গেলেন-'পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সঙ্গে তুলনা ভুল ছিল না'।