কঙ্গনা রানাওয়াতের পালি হিলসের অফিস বাড়িতে নাকি বেআইনি নির্মাণ রয়েছে। এই অভিযোগ এনে নোটিশ জারির চব্বিশ ঘন্টা পরেই, গত ৯ সেপ্টেম্বর অভিনেত্রীর মনিকর্ণিকা ফিল্মসের অফিস বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় বৃহন্মুম্বই পুরসভা। এবার বিএমসির কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করলেন কঙ্গনা রানাওয়াত। ২ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন কঙ্গনা, বিএমসির কাছ থেকেই সেই গ্যাঁটগচ্ছার খেসারত চান পর্দার মনিকর্ণিকা।
গত কয়েকদিন ধরেই মহারাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন দল শিবসেনার সঙ্গে কঙ্গনা রানাওয়াতের বিরোধ চরমে। এর মাঝেই শিবসেনার নেতৃত্বাধীন বৃহন্মুম্বই পুরসভার এই কীর্তিকে অনেকেই রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ফসল হিসাবেই তুলে ধরেছেন। কঙ্গনার দাবি তাঁর অফিস বাড়িতে কোনও অবৈধ নির্মাণ ছিল না। আগেই বিএমসির বিরুদ্ধে বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নায়িকা। সোমবার আদালতে নতুন করে সংশোধনী পিটিশন দাখিল করেন কঙ্গনার আইনজীবী রিজওয়ান সিদ্দিকি। সেখানেই পুরসভার কাছ থেকে এই বিরাট অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন কঙ্গনা। সেখানে তিনি স্পষ্টই বলেছেন ‘বাড়ির ৪০ শতাংশ অংশ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে’।
বুধবার নিজের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট স্পষ্ট জানিয়েছি্ল প্রাথমিকভাবে বিএমসির এই উদ্যোগ দেখে তা খারাপ উদ্দেশ্য দ্বারা চালিত বলেই মনে হচ্ছে। কারণ মুম্বইতে অবৈধ নির্মাণের সংখ্যা কম নয়। যদি বিএমসি এত তত্পরতার সঙ্গে বাড়ি ভাঙা শুরু করে তাহলে শহরের চেহারাটাই বদলে যাবে বলে জানায় বম্বে হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত বিএমসির কাছে আপতত ৪৫ হাজারেরও বেশি অবৈধ নির্মানের মামলা জমা পড়ে রয়েছে।
কঙ্গনা নিজের পিটিশনে জানিয়েছেন- রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলের এক নেতার বিরুদ্ধে মুখ খোলবার কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেই দলের অধীনেই আপতত রয়েছে বিএমসি। তাই পুরোটাই একটা চক্রান্ত দাবি কঙ্গনার।
পিটিশনে কঙ্গনার আইনজীবী জানিয়েছেন, বিএমসির তরফে তাঁদের জবাব খারিজ করবার আগেই বিএমসির কর্মকর্তারা কঙ্গনার বাড়ি ভাঙতে পৌঁছে গিয়েছিলেন। এটা থেকেই পরিষ্কার যে পুরো ঘটনাটাই পূর্বপরিকল্পিত।
বিএমসির তরফে যে নোটিশ ৮ সেপ্টেম্বর কঙ্গনাকে দেওয়া হয়েছিল সেটি সম্পূর্ন বেআইনি ও ভুয়ো বলে দাবি করেছেন কঙ্গনার আইনজীবী। স্টপ ওয়ার্কের নোটিশ দেওয়া হয়েছিল, অথচ ১৮ মাস আগেই কঙ্গনার ওই অফিস বাড়িতে সবরকমের নির্মানের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছিল। বিএমসির তরফে সিলমোহর দেওয়া প্ল্যানে সাতটি পরিবর্তন এনেছেন কঙ্গনা, এমনই দাবি পুরসভার আধিকারিকদের। সেটিও মিথ্যা বলে দাবি করেছেন কঙ্গনা।
রিজওয়ান সিদ্দিকি বম্বে হাইকোর্টকে জানিয়েছেন, ৯ সেপ্টেম্বর তিনি নিজে পালি হিলসের এই অফিসে এসে বিএমসির আধিকারিকদের অনুরোধ জানান, প্রযোজনীয় কাগজ দেখান যে সেদিন দুপুর ১২.৩০টায় বম্বে হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি রয়েছে, অন্তত সেইটুকু সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে- সেই কথাতেও কান দেয়নি বিএমসি। সহজেই সরানো যায়- এমন ঘর সাজনোর জিনিস, অ্যান্টিক ছবি, স্ট্যাচু এইগুলোও সরাতে দেয়নি বিএমসি। সব ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়-অভিযোগ কঙ্গনার।
বিচারপতি এস জে কাথাওয়ালা এবং বিচারপতি আর আই চাগলা বিএমসির তরফে দাখিল করা হলফনামার জবাব সোমবারের মধ্যে দায়ের করতে বলেছিলেন রিজওয়ান সিদ্দিকিকে। ২২ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।