কনিকা কাপুর করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই রয়েছেন সংবাদ শিরোনামে। এই বলিউড গায়িকা কখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলিংয়ের শিকার হয়েছেন বিদেশ থেকে ফিরে ঘরবন্দি হয়ে না থাকার জন্য, কখনও আবার তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি হাসাপাতালে ফাইভ স্টার ট্রিটমেন্ট দাবি করার অভিযোগ উঠেছে। দু সপ্তাহ ধরে লখনউয়ের সঞ্জয় গান্ধী পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউড অফ মেডিক্যাল সায়েন্সের করোনা ওয়ার্ডই কনিরা স্থায়ী ঠিকানা। পাঁচবার করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ এসেছে বেবি ডল গায়িকার।
ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে তাঁর পরিবার গোটা ঘটনাক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছে। পাশাপাশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছে কনিকার পরিবার। তাঁদের মেয়ে কোনওরকম নখরা দেখায়নি, দাবি কনিকার বাবা-মায়ের। উল্টে হাসপাতার কর্তৃপক্ষ ও চিকিত্সকদের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে কনিকার পরিবার। তাঁদের দাবি চিকিত্সকরা কেবলমাত্র একটা পর্দার আড়ালে কনিকাকে পোশাক বদলে হাসাপাতালের মেডিক্যাল গাউন পরতে বলে। সেটা নিয়ে গায়িকার আপত্তি ছিল। কারণ বিষয়টা ওর ভালো লাগেনি। পাশাপাশি আইসোলেশনে ময়লা ছিল বলেই সেটা হাসপাতালের কর্মীদের পরিষ্কার করে দিতে বলেছিল, সেটা তারকার মতো নখরা দেখানো নয় হাইজিনের ব্যাপার।
দিন কয়েক আগে টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে কনিকা হাসপাতল থেকে জানান, সেখানে তাঁকে উপযুক্ত খাবার দেওয়া হচ্ছে না, এমনকি তাঁর চিকিত্সাও সঠিকভাবে করা হচ্ছে না। লখনউয়ের যে হাসপাতালে তাঁকে রাখা হয়েছে সেঠি নাকি একদম অপরিচ্ছন্ন। সেখানে অপরাধীদের মতো ব্যবহার করা হচ্ছে তাঁর সঙ্গে, কনিকা বলেন, 'মনে হচ্ছে আমি জেলের মধ্যে রয়েছি'। এরপরই গায়িকাকে কড়া জবাব দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের ডিরেক্টর ডাঃ আরকে ধীমান জানান, ‘কনিকাকে তাঁর চাহিদা অনুযায়ী গ্লুটেন ফ্রি খাবারের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। যে আইশোলেশন ঘরে তিনি রয়েছেন সেখানে আলাদা শৌচালয় রয়েছে, টেলিভিশন সেট রয়েছে। শুধু তাই নয়, শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে রয়েছেন তিনি। তার দেখাশোনা করার ক্ষেত্রে কোনও খামতি রাখা হচ্ছে না, তা সত্ত্বেও তারকার মতো নখরা ছেড়ে উনি রোগীর মতো ব্যবহার করছেন না’।
মঙ্গলবার পঞ্চমবারের জন্য কনিকা কাপুরের করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়, এবং সেই পরীক্ষার রিপোর্টও পসিটিভ আসে, যা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তায় পড়েছিলেন হাসপাতালের চিকিত্সকরা। এরপর তড়িঘড়ি বেবি ডল গায়িকার চিকিত্সা পদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন করা হয়, পাশাপাশি তাঁর ডায়েট চার্টেও পরিবর্তন আনা হয়। রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এমন ধরণের খাবার দেওয়া হচ্ছে কনিকাকে। খাবারে ভিটামিন, প্রোটিন এবং কার্বোহাড্রেটের মাত্রা আগের তুলনায় বাড়ানো হয়েছে। এরপর থেকেই দ্রুত কনিকার শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটে। জানা যাচ্ছে আপতত জ্বর এবং কাশির কোনও লক্ষণ নেই কনিকার শরীরে। কনিকার পরবর্তী টেস্টের ফল নেগেটিভ আসলে হাসপাতাল থেকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে, তবে বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে গায়িকাকে।