দেশের প্রথম হাইপ্রোফাইল করোনা আক্রান্ত হিসাবে সামনে এসেছিল বেবি ডল খ্যাত গায়িকা কনিকা কাপুরের নাম।গত ২০শে মার্চ কনিকার করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর সামনে আসে।একটানা ১৬ দিন করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করবার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেলেন গায়িকা। এবার নিজের করোনা জয়ের অভিজ্ঞতা এবং তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ খন্ডন করে খোলা চিঠি লিখলেন কনিকা কাপুর।
তিনি লেখেন, গোটা বিষয় সম্পর্কে অনেকরকমের তথ্য সাংবাদ মাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় সামনে এসেছে কিন্তু এতদিন তিনি বেশকিছু কারণে চুপ করে ছিলেন। তিলি বলেন, আমি দোষ করেছি বলে চুপ ছিলাম তা নয়,আমি জনতাম সত্যিটা সামনে আসবেই এবং মানুষ নিজেরাই উপলব্ধি করবে(সত্যিটা)। আমি আমার পরিবার, বন্ধু এবং অনুরাগীদের ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাকে এই সময়টা দেওয়ার জন্য। আমি এখন লখনউতে আমার বাড়িতে রয়েছি। ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য, মুম্বই এবং লখনউতে আমি যে সকল মানুষের সংস্পর্শে এসেছি তাঁদের কারুর দেহেই করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। সবার নমুনার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে'।
তাঁর ট্রাভেল হিস্ট্রি সম্পর্কে কনিকা লেখেন, 'আমি ১০ মার্চ ইউকে থেকে মুম্বইয়ে ফিরি এবং এয়ারপোর্টে আমাকে নিয়ম মেনে স্ক্যান করা হয়েছিল। সেইদিন এমন কোনও নির্দেশ জারি হয়নি যে ইউকে থেকে ফিরলে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে (নির্দেশ ১৮ মার্চ জারি হয়)। আমার মধ্যে কোনও উপসর্গ ছিল না। আমি পরের দিন,১১মার্চ পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে লখনউ যাই।সেখানে ঘরোয়া বিমানের জন্য কোনরকম স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা ছিল না'।
'১৪ ও ১৫ মার্চ আমি এক বন্ধুর পার্টিতে লাঞ্চ এবং ডিনারে যোগ দিয়েছিলাম। আমি নিজে কোনরকম পার্টির আয়োজন করিনি।..১৭ মার্চ আমার শরীরে কিছু উপসর্গ দেখা যায়। এবং ১৮ মার্চ আমি নমুনা পরীক্ষার জন্য অনুরোধ জানাই। পরেরদিন আমার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এরপর ২০ তারিখ আমাকে জানানো হয় যে আমার করোনা পজিটিভ এসেছে। আমি নিজে হাসপাতালে যাই, চিকিত্সা করাই-তিনটে নমুনার ফল নেগেটিভ আসার পর আমি বাড়ি এসেছি। এবং গত ২১ দিন ধরে বাড়িতেই রয়েছি'।
লখনউয়ের সঞ্জয় গান্ধী পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স হাসপাতালের চিকিত্সক এবং নার্সদেরও ধন্যবাদ জানিয়েছেন কনিকা। বলেছেন ‘সেই কঠিন সময়ে তাঁরা আমার পাশে না দাঁড়ালে আমি পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করতে পারতাম না’। সবশেষে কনিকা লেখেন, 'ব্যক্তির উপর কাদা ছুঁড়লেই সত্যিটা পাল্টে যায় না'।
৬ এপ্রিল সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন কনিকা। লখনউ পুলিশ, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নির্দেশে আইপিসির ১৮৮,২৬৯ এবং ২৭০ ধারায় কনিকার বিরুদ্ধে আগেই এফআইআর দায়ের করেছে। বিহারের এক আদালতে গায়িকার বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে সরকারের নির্দেশ অবমাননা করা এবং নোবল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য। ২০ এপ্রিল কনিকা তাঁর কোয়ারেন্টাই পিরিয়ড শেষ করার পরে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবার কথা। যদিও আইনি বিশেষজ্ঞদের মতে কনিকার সংস্পর্শে আসা কোনও ব্যক্তি করোনা পজিটিভ না হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণের যথাযথ রাস্তা নেই পুলিশের কাছে।